নতুন গবেষনায় উদ্ঘটিত হয়েছে আমাদের সবচেয়ে নিকট আত্মীয়টি একটি দলে আবদ্ধ হয়ে কাজ করতে শিখতে পারে। সহযোগীতা মানুষেরই একটি বৈশিষ্ট্য বলে এতদিন ভেবে আসা হয়েছে, যা মানুষকে অন্যান্য পশু থেকে আলাদা করেছে।
প্রকৃতপক্ষে, প্রতি ছয়টি শিম্পাঞ্জীর মধ্যে পাঁচটিই প্রতিযোগীতার বদলে সহযোগীতা বেছে নেয়। Proceedings of National Academy of Science এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। “সংঘর্ষ ও সহযোগীতার যে অনুপাত দেখা যাচ্ছে তা মানুষের মতোই এবং আমাদের গবেষণায় দুটি প্রজাতির মধ্যে অসাধারণ মিল লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা মানব বিবর্তনের আরো সুস্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে।“- কথাগুলো বলছিলেন আটলান্টায় ইয়ের্কেস রিসার্চ সেন্টারের একজন গ্র্যাজুয়েট মালিনি সুচাক। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কের বাফেলোতে ক্যানিসিয়াস কলেজে প্রাণী আচরণ, বাস্তুতন্ত্র এবং সংরক্ষণের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
ইতিপূর্বে গবেষণায় দেখা গিয়েছিলো, গবেষণাগারের স্বলপরিসরে শিম্পাঞ্জীদের মধ্যে সহযোগীতার প্রবণতা কম। গবেষকগণ এই কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশে এদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেন, এবং এতে ভিন্ন ফলাফল পর্যবেক্ষণ করেন। খোলা ঘাসে ছাওয়া পরিসরে এগারটি শিম্পাঞ্জীকে একটি দড়িসদৃশ সরঞ্জামের কাছে রাখা হয়। এই দড়ি টেনে তারা পুরস্কার ইত্যাদি পেতে পারে।
তবে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য তাদের দুই বা তিনজন মিলে একসাথে কাজ করতে হবে। শিম্পাঞ্জীগুলোকে নিজের সঙ্গী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়।
যদিও প্রাথমিকভাবে তারা একে অপরের সাথে প্রতিযোগীতা দিয়ে শুরু করে কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে বুঝতে পারে পারস্পরিক সহযোগীতাই বেশি লাভজনক। ৯৪ ঘন্টার একটি পরীক্ষার পরিসরে গবেষকগণ ৩৬৫৬ টি সফল সহযোগীতামূলক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন।
এর বিপরীতে ৬০০ টি প্রতিযোগীতামূলক কার্যক্রম দেখা যায়, যেখানে শিম্পাঞ্জী পুরস্কার পাওয়ার জন্য চুরি বা প্রতারণার আশ্রয় নেয় বা চেষ্টা করে; কাজে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে বা মারামারি শুরু করে। এই বিষয়গুলো মানুষের সার্বিক আচরণের সাথে বেশ মিলে যায়।
⚫ বিজ্ঞানপত্রিকা ডেস্ক