২০১৭ সালের গ্রীষ্মে চীনের ইউনান প্রদেশের এক গবেষণাগারে গবেষক চেন ঝ্যাংকি একটু অদ্ভুত ঘটনা আবিষ্কার করলেন। একটি কৃত্রিমভাবে প্রস্তুতকৃত বাসায় তিনি একটি শিশু মাকড়সাকে তার মায়ের সাথে ঝুলে থাকতে দেখলেন, যেমনটি দেখা যায় দুগ্ধপানরত স্তন্যপায়ী প্রানীর ছানাকে। আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে তিনি দেখতে পেলেন সত্যিই যেন মা মাকড়শা শিশু মাকড়শাটিকে দুধ পান করাচ্ছে!
চীনের একাডেমি অব সায়েন্সেস সেন্টারের আচরণগত বাস্তুবিদ চেন এবং কোয়ান রুই-চ্যাংএর বিস্তারিত গবেষণায় নিশ্চিত হলো একপ্রকার লম্ফমান স্ত্রী মাকড়শা তাদের নবজাতকের জন্য দুধ উৎপাদন করে এবং দুগ্ধপান প্রক্রিয়া শিশু মাকড়সাগুলোর টিনএজ বয়ষ্ক অবস্থা পর্যন্ত চালু থাকে।
দুগ্ধপান এবং দীর্ঘকালের লালন-পালন পতঙ্গ ও অমেরুদন্ডী প্রানীর ক্ষেত্রে আগে কখনো শোনা যায়নি। এমনকি স্তন্যপায়ী প্রানী ব্যাতিত অন্যান্য মেরুদন্ডী প্রানীর ক্ষেত্রেও একটি খুব প্রচলিত নয়। এই ধরনের ঘটনা মাতা-পিতার যত্নের বিবর্তনীয় জটিল প্রক্রিয়াগুলো বুঝতে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
চেন এবং তাঁর সহকর্মীগণ পর্যবেক্ষণ করেছেন
Toxeus magnus প্রজাতির স্ত্রী মাকড়শারা ২ থেকে ৩৬ টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পরপরি মা মাকড়শা বাসার চারদিকে ক্ষুদ্র ফোঁটায় দুধের মত বস্তু সঞ্চয় শুরু করে। জন্মের পর প্রথম দুইদিন শিশু মাকড়শাগুলো সেই দুধ চুষে খায়। কিন্তু এর পরপরই এরা লাইন ধরে থাকে মা মাকড়শার শরীর সংলগ্ন হওয়ার জন্য। ২০ দিনের মাথায় তারা বাসার বাইরে শিকার শুরু করে তবে সম্পূরক খাবার হিসেবে তখনো মায়ের দুধের স্মরণাপন্ন হয়।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক