২০১৩ সালে ডুবুরীরা গ্রীসের দ্বীপ জ্যাকিন্থসএর কাছে সমুদ্রতলে পাথরের কিছু স্থাপত্যসদৃশ বস্তু আবিষ্কার করেন। পরে প্রত্নতত্ত্ববিদগণ সেসব নমুনা দেখে এগুলোকে প্রাচীন কোনো শহরের ধ্বংসাবশেষ মনে করেন। তবে এর মধ্যে ডোনাটের আংটি এবং রাস্তায় বিছানোর মতো পাথর পাওয়া গেলেও কোনো ধরনের তৈজসপত্রের নমুনা পাওয়া যায় নি। এর অল্পসময়ের মধ্যেই ইংল্যান্ডের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভু-রসায়নবিদ জুলিয়ান অ্যান্ড্রু এবং তাঁর সহকর্মীবৃন্ধ ধংসাবশেষসদৃস স্থানের ভুমি খুঁজে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে আনেন।
বিশ্লেষণে পাওয়া যায় যেই ধ্বংসাবশেষকে হারানো শহর জ্যাকিন্থস মনে করা হয়েছিলো সেটি প্রাচীন গ্রীকদের মাধ্যমে নয় বরং অণুজীবের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। যেই বস্তুগুলোকে প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ মনে করা হয়েছে সেগুলো আসলে মিথেনভোজী মৃত অণুজীবের জীবাষ্মে পরিণত হওয়া পলির স্তর, যা লক্ষ-লক্ষ বছর আগে জমা হয়েছে।
গবেষকদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী এই স্থাপনাগুলো সমুদ্রতলের ফোঁকরে বাসকৃত অনুজীবের স্তর যেখানে মিথেনবাহী তরলপদার্থ তলদেশ থেকে বাহিত হয়ে উপরে উঠত এবং এগুলো ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ বছর পুরোনো। এই অনুজীবগুলো মিথেন গ্রহন করে যে বর্জ্য উৎপাদন করত তা থেকে কার্বনেটের খনিজ তৈরি হয়ে বিশাল আকৃতির ফাঁপা কাঠামো তৈরি করেছে। সময়ের সাথে ভুমিক্ষয়ের ফলে এই কাঠামোগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
তবে প্রাচীন সভ্যতা খুঁজে পাওয়া না গেলেও বিজ্ঞানীরা যা আবিষ্কার করেছেন তার মাধ্যমে এই এলাকার প্রাচীন ভুতত্ত্ব সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা যাবে।