হাবল মহাশূন্য টেলিস্কোপকে এর পূর্বনির্ধারিত মেয়াদের চেয়ে পাঁচবছর বাড়ানোর একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে নাসা। এর ফলে হাবলের কার্যকারীতা অক্ষুন্ন থাকবে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। যেহেতু ২০১৮ সালের জুনে নাসার নতুন মহাশূন্য টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব উৎক্ষেপন করা হবে কাজেই জোতির্বিদগণ দ্বৈত টেলিস্কোপের ছবি পাবেন তিনটি বছর।
১৯৯০ সালে হাবল টেলিস্কোপ মহাশূন্যে স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি কাটিয়ে ওঠার পর হাবল চমৎকারভাবে কাজ করতে ও তথ্য বরাদ্দ দিতে থাকে। ২০০৯ সালে হাবলের যন্ত্রপাতি শেষবারের মতো বিবর্ধিত করা হয়। ২০১১ সালে এই দেখাশুনার পরিবহন কাজে নিয়োজিত শাটলটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে হাবলের দেখাশোনা করার ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়, ফলে নাসা হাবলের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করে দেয় এবং নতুন টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব স্থাপন করার পরিকল্পনা করে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি হাবলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশী কর্মক্ষম হবে।
যদিও মেরমত করার উপায় বন্ধ হয়ে গেছে তবু নাসা সম্প্রতি ধারনা করছে হাবল ২০২০ এর দশকেও যথাযথভাবে কাজ করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করতে পারবে। যেহেতু এই যন্ত্রটির মেয়াদ বৃদ্ধি পাচ্ছে কাজেই একই সময়ে মহাশূন্যে দুটি একই ধরনের টেলিস্কোপ বিচরণ করবে, যখন ২০১৮ তে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের (JWST) উৎক্ষেপন হবে। তবে দুটি টেলিস্কোপের পাল্লার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। হাবল টেলিস্কোপ মহাশূন্যের দৃশ্যমান এবং অতিবেগুনী পাল্লার তরঙ্গ সনাক্ত করে, অপর দিকে JWST অবলাল তরঙ্গ সনাক্ত করে। এই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পার্থক্য দুরবর্তী নক্ষত্র ও গ্যালাক্সিগুলোর অধিকতর এবং বিচিত্র দিকসমূহ উন্মোচন করতে পারে। কাজেই একই সঙ্গে দুটি টেলিস্কোপ জোতির্বিদদের মহাশূন্য গবেষনায় আরো বেশি সূক্ষতা ও যথার্থতা আনয়ন করবে বলে আশা করা যায়।
যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং হাবলের নিয়মিত ব্যবহারকারী বরিস গানসিকে বলেন, “এটি একটি অসাধারণ খবর, কেননা আমরা কখনোই পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলাম না শেষবার মেরামতের পর হাবল আর কতদিন কাজ করে যেতে পারবে। এটি আমাদের দুটি টেলিস্কোপের মৌলিক কার্যকারীতাগুলো আরো ভালোভাবে বিজ্ঞানের কাজে লাগাতে সাহায্য করবে।”