মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর জন্য জিনে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে নাসা

0
425

টাইম ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী নাসা মঙ্গলে প্রেরিতব্য নভোচারীদের ডিএনএ পরিবর্তনের উপায় নিয়ে ভাবছে। এই ভাবনার মূল লক্ষ্য নভোচারীদের মহাজাগতিক রশ্মি হতে রক্ষা করা।

এ ধরনের মহাজাগতিক রশ্মি প্রধাণতঃ সৌরজগতের বাইরে থেকে আসে যা নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন: ক্যান্সারে ঝুঁকি বৃদ্ধি করে কিংবা কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রের ক্ষতি সাধন করে।

নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রযুক্তিবিদ ডগলাস টেরিয়ার জানিয়েছেন, নাসা আগে থেকেই মহাজাগতিক রশ্মির প্রভাব প্রশমন নিয়ে কাজ করছে। আগে এক্ষেত্রে মহাশূন্যযানকে বর্মীভূত করা কিংবা পানির আস্তরণ দেওয়ার কথা ভাবলেও জিনে পরিবর্তনের ধরনা একেবারেই নতুন।

টাইমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টেরিয়ার বলেন, “আমরা অনেক কিছুর ব্যবহার নিয়েই ভাবছি। ওষুধের থেরাপি হতে শুরু করে, জিনে পরিবর্তন পর্যন্ত। এই শেষোক্ত বিষয়টি বেশ সম্ভাবনাময় যা এপিজেনেটিক্সে পরিবর্তনের মাধ্যমে করা যেতে পারে। তবে এতে এক গুচ্ছ নৈতিকতার বিষয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাই এখনো এটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে।”

তবে এধরনের গবেষণা কিঞ্চিৎ জটিল ধরনের। মহাজাগতিক রশ্মির বিরুদ্ধে জিন রূপান্তরে নাসার হাতে তথ্য সামান্যই আছে। তবে আমরা এটা জানি, মহাজাগতিক রশ্মি একটি সমস্যা এবং এর সমাধান করতে হবে। ১৯৯৩ সালে নাসার প্রকাশিত এক গবেষণা হতে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি মহাজাগতিক রশ্মির হাত থেকে গবেষকদের বাঁচানোর জন্য একটি ‘ঝড়ের আশ্রয়’ ব্যবহার করতে চেয়েছিলো। অন্যান্য প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে, মহাকাশযানের ভেতরের দেয়ালে পানি ব্যবহার করা কিংবা বিকিরণকে বিচ্যুত করার জন্য শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করা।

মহাশূন্যে ডিএনএ’র উপর অবশ্য বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গত বছর নাসার একজন নভোচারী প্রথমবারের মতো সফলতার সাথে মহাশূন্যে ডিএনএ সিকোয়েন্স নির্ণয় করেন। অন্য গবেষণায় দেখা যায়, ডিএনএ তৈরির মূল উপাদানগুলো মহাশূন্যে তৈরি করা যায়।

মঙ্গলে ভ্রমনের ক্ষেত্রে নভোচারীদের জন্য বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে। মহাজাগতিক রশ্মি ছাড়াও রয়েছে সৌর ঝড়, এবং প্রাণ বৈচিত্র্যের অভাব। নাসার জিন পরিবর্তনের পরিকল্পনা কতটা ফলপ্রসু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে মঙ্গলে অভিযানের বদলে নাসা যেহেতু চাঁদে অভিযানের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে তাই ধারনা করা যায় খুব সহজে এই গবেষণার ফলাফল আলোর মুখ দেখবে না। [IFLScience অবলম্বনে]

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.