ডলফিনের বুদ্ধিমত্তা আমাদের সর্বদাই বিস্ময়াভিভূত করে আসছে। নতুন গবেষনা বলছে গর্ভাবস্থায় ডলফিন গর্ভের সন্তানের জন্য গান গায়। ডলফিনেরা পরস্পরের সাথে যোগাযোগের জন্য “অর্থবোধক বাঁশি বাজায়, যেমন আমরা মানুষেরা নিজেদের আলাদা আলাদা নাম দিই। সন্তানজন্মদানের আগে মা ডলফিন এভাবেই শিশু সন্তানের জন্য সুনির্দিষ্ট ধরনের বাঁশী বাজায় যা জন্মের দুইসাপ্তাহ পর পর্যন্ত চালু রাখে।
এই তথ্য আগেই গবেষণা করে বের করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি গর্ভাবস্থায় ডলফিনের বাঁশি বাজানোর হার এবং জন্মদানের পরে বাজানো বাঁশির মধ্যে সম্ভাব্য পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপির সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর আচরণ বিষয়ক গবেষণাগারের অদ্রা এমেস এই সংক্রান্ত গবেষনা বাৎসরিক আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশনের কনফারেন্সে উপস্থাপন করেছেন।
এমেস এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “এটা একধরনের আরোপন ব্যবস্থা বলে অনুমান করা হচ্ছে। আমরা মানব শিশুর ক্ষেত্রেও দেখি শেষ তিনমাসে বাচ্চার মায়ের প্রতি একধরনের টান তৈরি হয়। ডলফিনের ক্ষেত্রেও মায়ের সাথে হৃদ্যতা ঘটানোই লক্ষ্য কিনা আমরা এখনো জানি না। তবে এটাকে আপাতদৃষ্টিতে তেমনই মনে হচ্ছে।”
গবেষকগণ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি জলাধারে সংরক্ষিত মা ডলফিনের ৮০ ঘন্টার অডিও রেকর্ড করেছেন জন্ম দেওয়ার ২ মাস পূর্ব হতে ২ মাস পর পর্যন্ত। তাঁরা দেখতে পেয়েছেন মা ডলফিনটি নতুন ধরনের বাঁশির ধ্বনি করছে যা তার পূর্বের গর্ভাবস্থার চেয়ে ভিন্ন। এই বাঁশির শব্দ জন্মের আগে ও পরে এই শব্দ তীব্র হয়, এবং পরবর্তীতে মাসের পর মাসে তীব্রতা কমে আসে। তাঁরা আরো দেখেন এই জলাধারের অন্যান্য ডলফিনগুলো এই সময় অপেক্ষাকৃত নীরব থাকে। যা গবেষকগণ মনে করছেন নবজাতকের শেখায় যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য প্রতিবেশীদের কাছ থেকে একধরনের প্রচেষ্টা। এর ফলে নবজাতক বিভ্রান্ত হয় না, এবং প্রকৃত মায়ের ডাক আত্মস্থ করতে পারে।
– বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক