গবেষনায় প্রমাণীত নিয়ান্ডার্থালরা স্বজাতি-ভোজী ছিলো

0
524

নিয়ান্ডার্থালরা দীর্ঘ সময় খাদ্যাভাবে ভুগেছে এবং তারফলে একসময় স্বজাতি-ভোজী হয়ে ওঠে বলে উত্তর-পশ্চিম স্পেন হতে প্রাপ্ত দেহাবশেষ পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়।

গবেষকগণ ২০০০ সালে স্পেনের এল সিড্রন গুহা থেকে ৪৩,০০০ বছরের পুরোনো নিয়ান্ডার্থালের আটটি কঙ্কাল উদ্ধার করেন এবং সেগুলোর নমুনা নিয়ে গবেষণা করেন। এই গবেষণায় ইউরোপে আধুনিক মানুষের আবির্ভাবের পূর্বে নিয়ান্ডার্থালের জীবন কেমন ছিলো তা উঠে আসে। গবেষকগণ হাড়ের মধ্যে কাটা দাগ এবং হাড় বিদীর্ণ হওয়ার আলামত পেয়েছেন, যা থেকে মনে হয় তারা স্বজাতিভোজী ছিলো।

গবেষনার নেতৃস্থানীয় গবেষক মাদ্রিদে অবস্থিত Museo Nacional de Ciencias Naturales এর এন্টনিও রোসাস বলেন, “আমাদের হাতে শক্ত প্রমাণ আছে যে এই নিয়ান্ডারথালদের ভক্ষণ করা হয়েছিলো। এই হাড়গুলোকে পুস্টিতে ভরা অস্থিমজ্জা বের করে নেওয়ার জন্য বিদীর্ণ করা হয়েছিলো।” রোসাসের মতে ইউরোপের অন্যান্য স্থান থেকে পাওয়া নিয়ান্ডার্থালের নমুনার মধ্যেও স্বজাতিভোজী হওয়ার আলামত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মতে, এই প্রবণতা নিয়ান্ডালর্থালের জনবসতির মধ্যে বেশ প্রচলিত ছিলো।’

রোসাসের তথ্য অনুযায়ী, এদের দেহাবশেষ হতে প্রাপ্ত দাঁত পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় বিশেষ কালে তাদের খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছিলো যা হামাগুড়ি দেওয়ার সময় বা বয়ঃসন্ধিকালে অপুষ্টিজণিত সমস্যা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, “এনামেলের স্তর বসার মাধ্যমে দাঁত ক্রমশঃ বেড়ে ওঠে। কিন্তু অপুষ্টিজনিত সমস্যা থাকলে এই এনামেলের স্তর তৈরি হয় খুব ধীরে কিংবা আদৌ তৈরি না-ও হতে পারে। বাহির্জাগতিক প্রভাব যেমন: জলবায়ুর পরিবর্তন বা  অসুস্থতাও দাঁতের বৃদ্ধি প্রভাবিত করে। তাই তীব্র শীতকাল, সেই সাথে বংশগত শারীরিক সমস্যা এই ধরনের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে পারে।”

রোসাসের দল আরো দেখতে পান, উত্তরের তুলনায় দক্ষিনের নিয়ান্ডার্থালদের চেহারা অপেক্ষাকৃত চওড়া ও চাপা ছিলো। এর যথাযথ কারণ এখনো বিতর্কের বিষয়, তবে রোসাসের মতে জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে খাপ-খাওয়ার জন্যই এই অভিযোজন। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত উত্তরের বাসিন্দা মানুষের নাক লম্বা হয় যেন বায়ু দীর্ঘ সময় ধরে নাকের সংস্পর্শে গরম হয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে।

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.