সস্তায় কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে কয়লায় রূপন্তরের পদ্ধতি উদ্ভাবিত

0
758

রয়্যাল মেলবোর্ন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকগণ বায়ুমন্ডলীয় কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে কার্বনের কঠিন কনিকা তথা কয়লায় পরিণত করার একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। এই পদ্ধতিটি বায়ুমন্ডল হতে ক্ষতিকর এই গ্রিনহাউজ গ্যাসটির পরিমান হ্রাস করার মূল হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।

বায়ু হতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড হ্রাসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী উদ্যোগ নিতে দেখা যায় একে ভূমির গভীরে প্রবেশ করিয়ে সংকুচিত করার মাধ্যমে। এই কাজটি খুবই চ্যালেঞ্জিং, কেননা যে কোনো সময় ফাটলের মাধ্যমে প্রবিষ্ট কার্বন-ডাইঅক্সাইড বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কিন্তু নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত নতুন এই গবেষণা এই ধরনের ফাটল কার্যকরভাবে রোধ করবে। এটির ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যেন তা বিশালাকারে প্রয়োগ করা যায়; তাছাড়া ইতিপূর্বে কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে কয়লায় রূপান্তর প্রচেষ্টায় যেসব প্রতিবন্ধকতা ছিল গবেষকগণ সেসবও দূর করেছেন। গবেষণাপত্রটির একজন লেখক, ড. টরবান ডেনেক এক বিবৃতিতে জানান, “আমরা যেহেতু আক্ষরিকভাবে অতীতের সময়কে ফিরিয়ে আনতে পারছি না কাজেই কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে পুনরায় কয়লায় ফিরিয়ে এনে মাটির নিচে পুতে ফেলাটা নিঃসরণের ঘড়িটিকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার মতোই। অদ্যাবধি কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে কয়লায় রূপান্তরের বিষয়টি ঘটে এসেছে অতি উচ্চ তাপমাত্রায় যা কারখানায় প্রয়োগের উপযোগী নয়। কিন্তু আমরা দেখিয়েছি কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে কয়লায় রূপান্তরের ঘটনাটি কক্ষতাপমাত্রাতেই ঘটানো যায়।”

গবেষকদলটি এই রূপান্তর ঘটানোর জন্য গ্যালিয়াম, ইন্ডিয়াম, টিন এবং সেরিয়াম ধাতুর একটি তরল সংকর প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তরল এই ধাতুকে কাচ নলে নিয়ে এর মধ্যে একটি তার যুক্ত করা হয়। এতে কিছু পরিমান পানি দেওয়া হয়। অতঃপর এতে বিশুদ্ধ কার্বন-ডাইঅক্সাইড চালনা করে তারের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ চালনা করা হয়। এর ফলে তরল ধাতুর পৃষ্ঠে কার্বনের ফলক তৈরি হতে থাকে। এই ফলকগুলোকে সরিয়ে নিলে এটি বারংবার কঠিন কার্বন উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা যায়।

এই পদ্ধতিতে কেবল দুটি বস্তু উৎপন্ন হয়। একটি কার্বন ও অপরটি বিশুদ্ধ অক্সিজেন। উৎপন্ন কার্বন মাটিতে পুঁতে ফেলা যায় কিংবা কার্বন ফাইবারের সামগ্রী তৈরি করা যায়। এর আরেকটি উপকারীতা হলো এই উৎপাদিত কার্বন বিদ্যুত পরিবাহী, ফলে এটি সুপার ক্যাপাসিটরসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামেও ব্যবহার করা সম্ভব। [iflscience.com অবলম্বনে]

বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশিত ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন ইউটিউবে। লিংক:
১. টেলিভিশনঃ তখন ও এখন
২. স্পেস এক্সের মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.