ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ায় পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিনের দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চালিত এক গবেষণায় দেখা যায় নিয়ন্ত্রিত অনিদ্রার মাধ্যমে বিষণ্ণতার রোগীদের উল্লেখযোগ্য অংশের লক্ষণ হ্রাস পায়। আংশিক অনিদ্রার এই ব্যবস্থায় রোগীকে তিন থেকে চারঘন্টা ঘুমাতে দেওয়ার পরবর্তী ২০-২১ ঘন্টা জোর করে জাগিয়ে রাখা হয়। তবে পুরিপুরি অনিদ্রায় থাকা রোগীর (এই ক্ষেত্রে একটানা ৩৬ ঘন্টা রোগী জেগে থাকে) ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি একই ভাবে কাজ করে। সম্প্রতি জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল সাইকিয়াট্রিতে এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। ঔষধপত্র এই ফলাফলে কোনো প্রভাব বিস্তার করেনি বলে দেখা গেছে।
যদিও সম্পূর্ণ বা আংশিক অনিদ্রার মাধ্যমে বিষণ্ণতার লক্ষণে উন্নতি ঘটতে দেখা যায় তবুও বর্তমানে সর্বাধিক প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি হলো বিষণ্নতারোধী ঔষধ প্রয়োগ। এধরনে ঔষধের মাধ্যমে ফলাফল পেতে সপ্তাহাধিক বা তারচেয়েও বেশী সময় লেগে যায়, তথাপী যুক্তরাষ্ট্রের ২৪ কোটি মানুষের মধ্যে ১৬.৭ শতাংশই এক বা একাধিক মনোবৈজ্ঞানিক ঔষধের প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করেছেন। বর্তমান গবেষনায় প্রাপ্ত পদ্ধতি দেড়কোটিরও বেশী মারাত্মক বিষণ্ণতায় আক্রান্ত রোগীর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।
পেন স্লিপ সেন্টারের মনোবিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক ফিলিপ জার্মান বলেন, “৩০ বছরেরও বেশী সময় ধরে অনিদ্রার বিষণ্নতারোধী ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তবুও এখনো আমরা জানতে পারি নি কতটা যথার্থভাবে এটি কাজ করে কিংবা সবচেয়ে ভালো ফলাফল লাভ করতে হলে কী করতে হবে। আমাদের বর্তমান বিশ্লেষণ হতে যথাযথভাবে জানা যাবে অনিদ্রা কতটা কার্যক্ষম এবং এটি কোন জনগোষ্ঠীর উপর প্রয়োগ করা যাবে।”
২০০০ এর বেশী গবেষণা সম্বন্ধে পড়ে এই গবেষকদলটি ৩৬ বছর ধরে প্রকাশিত ৬৬ টি গবেষণা বাছাই করে যথাযথ সিদ্ধান্তে আসে। এসব গবেষণার মাধ্যমে প্রমানীত হয় বেশ কিছু জনগোষ্ঠীর মানুষের উপর বিষণ্ণতা রোধে অনিদ্রা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে। এটি ব্যাপক পাল্লায় কাজ করে। বিষণ্ণতা প্রতিরোধে যে পরিমান অনিদ্রাই প্রয়োগ করা হোক কিংবা বিষণ্নতার ধরন যেমনই হোক এই পদ্ধতি কাজ করে। [Sciencedaily অবলম্বনে]
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক