গ্রাফিন ভিত্তিক পরিবাহী সৌর বিদ্যুৎ ৩,০০০ শতাংশ বাড়াতে সক্ষম

0
294

উদ্ভিদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে গবেষকগণ একটি নতুন পরিবাহী আবিষ্কার করেছেন যা বিষ্ময়করভাবে সৌর শক্তি সঞ্চয় বৃদ্ধি করতে পারে যা আমাদের বর্তমান সঞ্চয় ক্ষমতার চেয়ে ৩,০০০ শতাংশ বেশী। প্রযুক্তিটি খুব নমনীয় এবং সৌর সেল বা কোষের সাথে সরাসরি সংযুক্ত করা যাবে। এর ফল হিসেবে স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপের শক্তির জন্য সরাসরি সূর্য নির্ভর হতে পারবো।

নির্ভরযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে সৌরশক্তিকে ব্যবহারের একটি প্রধান সমস্যা হলো পরবর্তী সময়ে ব্যবহারের জন্য কোন রকম অপচয় ছাড়াই একটি কার্যকর সঞ্চয় পদ্ধতি খুঁজে বের করা। আর এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই প্রযুক্তি প্রকৌশলীরা অতি-ত্বড়িৎ ধারকে রূপান্তরের একটি প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করছেন যা অতি দ্রুত চার্জ হতে এবং বৃহৎ আকারের শক্তি মুক্ত করতে সক্ষম। কিন্তু আপাতত অতি-ত্বড়িৎ ধারক সৌর ব্যাটারিতে টেকসই শক্তি সঞ্চয়ে তেমন যথেষ্ট নয়।

আর তাই আরএমআইটি ইউনিভার্সিটি ইন মেলবোর্নের একটি দল তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কীভাবে উদ্ভিদ অল্প জায়গায় প্রচুর পরিমাণ শক্তি জমা রাখে তা বের করার এবং উত্তর আমেরিকার ওইয়েস্টার্ন সোর্ডফার্ন নামক একটি উদ্ভিদের পাতার জ্যামিতিক গঠন তাদের কল্পনাকে দ্রুতই অনুপ্রাণিত করে।

ন্যানো ইঞ্জিনিয়ার মিন গো বলেন, “ওইয়েস্টার্ন সোর্ডফারন উদ্ভিদের পাতার শিরাগুলি অত্যন্ত ঘন হয় যা তাদেরকে শক্তি সঞ্চয় করতে এবং সমগ্র উদ্ভিদ জুড়ে পানি সরবরাহ করতে কার্যকরী করে তুলে। আমাদের পরিবহাঈ এই জ্যামিতিক আকারের উপর ভিত্তি করেই তৈরী করা যা, ক্ষুদ্র তুষারপাতের কাঠামোর মতো স্বতঃপ্রতিক্রিয়াশীল। আমরা সৌর শক্তি সংরক্ষণের জন্য অতি ক্ষুদ্র পর্যায়ের এই প্রাকৃতিকভাবে দক্ষ নকশাকে ব্যবহার করছি।”

নিচের ছবিতে একটি ফার্ন পাতার পৃষ্ঠকে ৪০০ গুণ বর্ধিত করা হয়েছে যেখানে পরিষ্কার ভাবেই এর স্ব-প্রতিক্রিয়াশীল নকশা দেখা যাচ্ছে যা গবেষকগণ তাদের নকশায় ব্যবহার করেছেন।

অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের একটি পরিবাহী বিদ্যুদ্বাহক তৈরী করতে বিজ্ঞানীরা লেজার ব্যবহার করে গ্রাফিনের সুনিপুণ ব্যবহারের চেষ্টা করেছেন। একটি বহুমুখী এটম পুরু কার্বন ন্যানোম্যাটারিয়াল যা অতি মাত্রার বিদ্যুৎ পরিবাহীতার কাজ করবে। গ্রাফাইন বিদ্যুদ্বাহীর মধ্যে একটি জ্যামিতি ভিত্তিক নকশা ব্যবহার এবং তা প্রচলিত অতি-ত্বড়িৎ পদ্ধতির সাথে সমন্বয় সাধন করার মাধ্যমে গো এবং তাঁর দল ৩০ গুণ বেশী শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষমতায় পৌছুতে সক্ষম হয়েছে।

আর নতুন এই পরিবাহীতা পদ্ধতি যদি তাঁরা সফলভাবে প্রয়োগ করতে পারেন তবে আমরা সৌর কোষের সাথে এটা সংযোজন করার মাধ্যমে বর্তমানের চেয়ে ৩,০০০ শতাংশ বেশী শক্তি সঞ্চয় করা যাবে।

আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পিএইচডি শিক্ষার্থী লিটি থেক্কেকারা জানান, “সবচেয়ে বড় সম্ভাবনার বিষয়টি হচ্ছে সৌর কোষের সাথে এই বিদ্যুদ্বাহীতা ব্যবহারের মাধ্যমে সমগ্র শক্তি উৎপাদন এবং সঞ্চয়ের কাজ করা যাবে।”

প্রচলিত সৌর কোষের সাথে যখন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে তখন প্রায় প্রতিটি বাসার ছাদেই আপনি এর দেখা পাবেন।
[সায়েন্সএলার্ট- অবলম্বনে]

-শফিকুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.