মহাশূন্য রকেট যখন উৎক্ষেপন করা হয় তখন নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন মূল রকেটের সাথে বিশাল বিশাল ক্যাপসুলের মতো যুক্ত থাকে। এগুলো মূলতঃ জ্বালনীবাহী ট্যাংকার। খুব বিষ্ময়কর শোনালেও একটি রকেটের মোট ভরের ৯০% ই এর জ্বালানী থেকে আসে। রকেট উৎক্ষেপণের সময় এই বিপুল জ্বালানীর ভরটুকু উৎক্ষেপন করতে হয় জ্বালানী পুড়িয়েই। এই জ্বালানীবহনই এখন মঙ্গলে মানুষ প্রেরণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। কারণ মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে হলে শুধু উৎক্ষেপনের জন্য জ্বালনী বহন করলেই চলবে না। ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানীও বয়ে নিয়ে যেতে হবে কিংবা মঙ্গলের বুকে উৎপাদন করতে হবে।
কিন্তু সম্প্রতি ফিলিপ লবিন নামে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিজ্ঞানী যিনি নাসার জন্য কাজ করেন, এক অভিনব পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনি লেজার নিক্ষেপ করে মহাশূন্যযানের পেছনে ধাক্কা দিয়ে মঙ্গলে পাঠানোর চিন্তাভাবনা করছেন! জ্বালানীবাহী মঙ্গলঅভিযানের আগের পরিকল্পনাগুলোয় যেখানে কয়েক মাসে মঙ্গলে পৌঁছানোর ব্যাবস্থা থাকে, লেজার নিক্ষেপ করে মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে সময় লাগবে মাত্র ৩০ মিনিট!
এর আগেও নাসা বিভিন্ন সময় “আলোক পাল” এর ধারনা নিয়ে এগিয়েছে। নৌকার পালের মতোই এই মহাশূন্যযান গুলোতে থাকবে আলোক পাল যা আলোর ধাক্কায় একটি মহাশূন্যযানকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। লেজার পদ্ধতিতে অত্যন্ত ঘনসন্নিবিষ্ট বিকিরণ প্রেরণ করা যায় যা এই পদ্ধতিকে আরো বেশী কার্যকর করবে। উল্লেখ্য যে ধুমকেতুর লেজটি যে সর্বদা এর প্রদক্ষিত নক্ষত্রটির বিপরীতে অবস্থান করে তার প্রধান কারণ নক্ষত্রটির আলোর ধাক্কা। তাই শুনতে অদ্ভুত শোনালেও আলোর পালের ধারনাটি বৈপ্লবিক, বিশেষ করে দূরদূরান্তের পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য এটি খুবই কার্যকর হতে পারে; যদিও সত্যিই লেজারের ধাক্কায় ৩০ মিনিটে মঙ্গলে পৌঁছানো সম্ভব কিনা তা সময়ই বলতে পারবে।