গত পাঁচ দশক ধরে মানুষ এইচআইভির সাথে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ও দুরূহ সংগ্রামের পরেও যখন গত বছর এইচআইভিকে নিরাময় যোগ্য রোগের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিলো ঠিক তখনি গবেষকগণ এ রোগ নিরাময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পৌছে গেছেন। অবশেষে এ বছরই আমরা এইচআইভির প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার নিকটবর্তী হতে যাচ্ছি।
এ বছর নভেম্বর থেকে এইচআইভিতে আক্রান্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৫,৪০০ জন নারী ও পুরুষের উপর HVTN 702 নামক একটি টিকার পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। HVTN 702 টিকাটি পূর্বের পরীক্ষিত RV144 নামক টিকার পরিমার্জিত সংস্করণ যা দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের মাঝে প্রচলিত এইচআইভির ধরণকে নিশানা করার মতো করে উন্নতি সাধন করা হয়েছে।
পরীক্ষা কার্যক্রমটির সহ প্রতিষ্ঠাতা এন্থনি এস. ফচি বলেন, “যদি আমাদের প্রয়োগকৃত বর্তমান উপকরণগুলো এইচআইভি প্রতিরোধে সঠিক প্রমাণিত হয় তবে, এই নিরাপদ এবং কার্যকর টিকাটিই হতে পারে এইচআইভির কফিনে শেষ পেরেক।”
বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৬.৭ মিলিয়ন মানুষ সরাসরি এইচআইভি/এইডস এ আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রতি বছর প্রায় ১ মিলিয়নের বেশী মানুষ এইচআইভি তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই প্রতিদিন এইচআইভি তে আক্রান্ত হয় ১,০০০ জন। দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসা গবেষণা সংস্থার প্রধান গ্লেন্ডা গ্রে বলেন, “এইচআইভি দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে কিন্তু বর্তমানে আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আবিষ্কার শুরু করেছি যা আমাদের দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে।”
গবেষকগণ ২০২০ সালের শেষের দিকে এই গবেষণার ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। এইচআইভি প্রতিরোধে দক্ষিণ আফ্রিকাতে ইতিমধ্যেই বেশকিছু প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। সবদিক বিবেচনা করে গবেষকগণ এইচআইভি প্রতিরোধে অগ্রগতির ইঙ্গিত প্রদান করেছেন এবং এতে মানুষও আশাবাদী হচ্ছে। [futurism -অবলম্বনে]
-শফিকুল ইসলাম