আমাজনের বিচ্ছিন্ন নৃগোষ্ঠীর অস্তিত্ব ঝুঁকির মধ্যে

0
494

সম্প্রতি ব্রাজিলে আমাজনের একটি অঞ্চলে আকাশ থেকে তোলা কিছু ছবিতে বিচ্ছিন্ন একটি উপজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, বর্তমানে যারা অবৈধ স্বর্ণখনি শ্রমিক দল দ্বারা  নিপীড়িত হচ্ছে। হাজার হাজার বছর ধরে নিজেদের জীবন যাপনে তাদের ঐতিহ্য রক্ষা করে চললেও, এই উপজাতির সদস্যরা শীঘ্রই বিলুপ্তির সম্মুখীন হতে পারে যদি না তাদের ভূখন্ডে বাহিরাগতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা যায়।

ছবিগুলো একটি সরকারী উড়োজাহাজ থেকে তোলা হয়েছে যা অবৈধ খনি শ্রমিকদের খুঁজছিলো এবং সেখানে ইয়ানোমামি আদিবাসী মানুষ বসবাসকারী অঞ্চলের কাছাকাছি ‘ইয়ানু’ নামে একটি সাম্প্রদায়িক কাঠামো দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় ২২,০০০ মানুষ বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে বসবাস করা এই অঞ্চলটিকে ১৯৯২ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের দাবি অন্তত তিনটি উপজাতি পশ্চিমাদের কাছ থেকে এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

ইয়ানুর প্রত্যেকটা ভাগে একেকটি পরিবারের ঘর, যা তাদের বিছানাপত্র ঝুলিয়ে রাখা, বিভিন্ন জিনিসপত্র সংরক্ষণ এবং খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই কাঠামোর মাঝে প্রায় ১০০ জনের মতো মানুষ বসবাস করছে।

এই আকৃতির বসতিকে বলা হয় ইয়ানু যেখানে ১০০ জন মানুষ বসবাস করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে
এই আকৃতির বসতিকে বলা হয় ইয়ানু যেখানে ১০০ জন মানুষ বসবাস করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে

ধারণা করা হচ্ছে এখনও প্রায় ৫,০০০ খনি শ্রমিক এর আশেপাশে লুকিয়ে রয়েছে। এই দীর্ঘমেয়াদী বাসিন্দারা হয়তো আর বেশী দিন এখানে থাকতে পারবেনা। ইতিহাস থেকে জানা যায়, যখন কোন আদিবাসী এবং বহিরাগতদের মাঝে সংমিশ্রণ ঘটে তখন উপজাতীদের মাঝে নানারকম মারাত্মক রোগ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে এবং এসব প্রতিহত করার মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের না থাকার কারণে নৃশংসতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

এ বছরের শুরুর দিকে এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্রাজিলের প্রায় ৯০ ভাগ আমাজন আদিবাসী রেইনফরেস্টের চারদিকে অবৈধ খনি কার্যক্রমের ফলে পারদ-বিষক্রিয়ায় ভুগছেন। তবুও অনুমোদনহীন অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বহির্বিশ্বের সাথে উপজাতিদের দূরত্ব ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। আমাজনের আদিবাসীদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় সরকারের প্রচেষ্টা জোরদার করার ব্যপারে চাপ বৃদ্ধি পেলেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

tribe-3

সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক স্টিফেন করির মতে, “এই অসাধারণ ছবিগুলো আরও বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীর অস্তিত্বের প্রমাণ রাখে। তারা হিংস্র না হলেও অনেক ক্ষেত্রেই জটিল এবং সমসাময়িক সমাজ হিসেবে তাদের অধিকারের প্রতি অবশ্যই আমাদের সম্মান জানাতে হবে। সকল বিচ্ছিন্ন উপজাতিই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে যদি না তাদের জমি রক্ষা পায়।”

-শফিকুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.