৮.৭ বিলিয়ন ডলারের মহাশূন্য টেলিস্কোপের কাজ সম্পন্ন করেছে নাসা

0
241

হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এই মহাবিশ্বে মানবতার জন্য অভূতপূর্ব ঝলক দেখিয়েছে, কিন্তু অতি শীঘ্রই আরো বেশি শক্তিশালী মডেল দ্বারা এটি প্রতিস্থাপিত হতে যাচ্ছে। নাসার পরিচালক চার্লস বোলডেন ৮.৭ বিলিয়ন ডলারের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST), যা ১৩ বিলিয়ন বছর আগের মহাবিশ্ব দেখতে সক্ষম হবে। স্বর্ণ দ্বরা আবৃত ২১ ফুটের একটি আয়না রয়েছে এতে যা হাবলের চেয়ে ৭ গুণ বেশি আলো সংগ্রহ করতে পারবে এবং স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে বর্ণচ্ছটাকে ধুলিকণা ভেদ করে দেখতে সক্ষম হবে।

প্রকল্পটির একজন বিজ্ঞানী জন ম্যাথার বলেন, “দুই দশক ধরে আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফলাফল এটি।” মহাবিশ্বে গভীরতম ও প্রাচীনতম অংশগুলোর উপর দৃষ্টিপাত করা এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করার মতো এর যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে।

ম্যাথার আরো বলেন, “আমরা মনেকরি, আমাদের আশেপাশে যদি এমন কোন গ্রহ থেকে থাকে যেখানে যথেষ্ট পরিমাণে পানি রয়েছে সে তথ্যও সংগ্রহ করতে সক্ষম হবো।”

অপেক্ষাকৃত বড় এবং মসৃণ এই আয়নাটি কয়েক ইঞ্চির অংশকে বিবর্ধিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকারে দেখাতে সক্ষম হবে। এমনকি এর চাঁদের মাঝে একটি ভ্রমরকেও সনাক্ত করার ক্ষমতা এর রয়েছে।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলস্কোপ যেভাবে গুটিয়ে থাকবে Ariane 5 রকেটের মধ্যে
জেমস ওয়েব স্পেস টেলস্কোপ যেভাবে গুটিয়ে থাকবে Ariane 5 রকেটের মধ্যে

লাল ইনফ্রারেড আলোকে শনাক্ত করতে JWST প্রায় ২২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডা হয়ে যাবে। এই পরিমাণ তাপমাত্রা অর্জন করতে সূর্য থেকে আলাদা হতে এটি পাঁচটি ঝিল্লীর স্তরে বিভক্ত হয়ে যাবে। এই ঝিল্লীর কাজ গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। দলটি এখন একটি জটিল ব্যাটারির পরীক্ষা চালচ্ছেন যা হাবলের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। (যার সমাধান করা অসম্ভব হয়ে যাবে, যেহেতু JWST পৃথিবী থেকে মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থান করবে।)

প্রথমে বিজ্ঞানীগণ যন্ত্রটিকে দৈত্যাকার Ariane 5 রকেটে উৎক্ষেপণ করার মতো পদ্ধতি অবলম্বন করে ১৫০ ডেসিবেল মাত্রায় শব্দ সৃষ্টি করবে। এরপর এটি চরম পরিবেশে ও মাত্রায় টিকতে পারবে কিনা সেটা নিশ্চিত জন্য ক্রয়োজেনিক পরীক্ষা চালাবে। সবশেষে, আলোকযন্ত্রের চূড়ান্ত কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে যা হাবলের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করেছিলো।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ উৎক্ষেপিত হবে ইএসএ-র Ariane 5 রকেটে যাকে বিশ্বের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য যন্ত্র বলে মনে করা হচ্ছে। পরে এটি ৩০ দিনে এক মিলিয়ন মাইলের একটি ভ্রমন সম্পন্ন করবে যা হবে দ্বিতীয় দূরতম স্থান। সেখানে টেলিস্কোপটি একটি এন্টেনা, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আয়না মোতায়েন করবে। অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল নক্ষত্র কিংবা কোন নক্ষত্র এলাকার একটি ছবিই হবে টেলিস্কোপটির কার্যকারিতার সপক্ষে প্রমাণ যে, সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক চলছে।

-শফিকুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.