২৩৪ টি ‘মহাজাগতিক সভ্যতা’ খুঁজে পাওয়ার দাবী বিজ্ঞানীদের!

1
465

কুইবেক-এ অবস্থিত লাভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জোতির্বিদ এরমান্ডো বোরা এবং তাঁর গ্রাজুয়েট ছাত্র এরিক ট্রটিয়ার ২৫ লাখ নক্ষত্র এবং গ্যালাক্সী বিশ্লেষণ করেছেন যেগুলো থেকে নিয়মিত বিরতিতে আলোক তরঙ্গের স্পন্দন পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। তাঁরা লক্ষ্য করেছেন সুর্যের সমান আকারের এমন ২৩৪ টি নক্ষত্র থেকে এধরনের সংকেত আসছে।

অতঃপর এই গবেষকগণ এই সংকেতগুলো বিশ্লেষণ করে এর বিভিন্ন অংশ বোঝার চেষ্টা করেছেন যা থেকে এই সংকেতগুলোর উৎপত্তি সম্বন্ধে ধারনা পাওয়া যায়। এই বিশ্লেষণ হতে সংকেতগুলোতে পর্যায়বৃত্ত স্পন্দন বিশিষ্ট অতিদ্রুতগতির আলোক স্পন্দন পাওয়া গেছে যা বিজ্ঞানীদের মতে কোনো মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তার সৃষ্ট। Publications of the Astronomical Society of the Pacific জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে তাঁরা এই সংকেতের অন্যসব সম্ভাব্য উৎস যেমন: যান্ত্রিক প্রভাব, অণুর ঘুর্ননগতিজণিত স্পন্দন, নাক্ষত্রিক স্পন্দন এবং উদ্ভট রসায়নজণিত যাবতীয় সব ধরনের ব্যাখ্যা বাতিল করেছেন।

গবেষকগণ তাঁদের গবেষণাপত্রে বলেন, “আমরা দেখেছি, সনাক্তকৃত সংকেত পুরোপুরি একটি মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তার প্রেরিত সংকেতের সাথে মিলে যায়। এই ধরনের মহাজাগতিক সংকেত ইতিপূর্বে প্রকাশিত গবেষণায় অনুমান করা হয়েছিলো। বাস্তবিক পক্ষে এই সংকেত পাওয়া গেছে যাবতীয় নক্ষত্রের খুবই ক্ষুদ্রাংশে মধ্য এবং বর্ণালীর অত্যন্ত সীমিত পাল্লার মধ্যে  এবং সুর্যের বর্ণালীর সাথে মিল আছে এর। এটি মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তা সম্বন্ধে ইতিপূর্বে দেওয়া হাইপোথিসিসের সাথে আরো ভালোভাবে মিলে যায়।”

এই ধরনের উচ্চমাত্রার স্পন্দন কৃত্রিমভাবে তৈরি একটি লেজারের মাধ্যমেই উৎপন্ন হওয়া সম্ভব বলে ধারনা করছেন গবেষকগণ। তবে তাঁরা স্বীকার করেন যদিও যাবতীয় আলামত বুদ্ধিমান প্রানীর অস্তিত্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে তবু এটি এখনো নিশ্চিত নয়।

স্টিফেন হকিংএর ছায়ায় গ্রহণ করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনুসন্ধানের প্রকল্প Breakthrough Listen বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য এই ২৩৪ টি নক্ষত্রের উপর পরবর্তী পরীক্ষা-নীরিক্ষাগুলো চালাবে। তবে অনুসন্ধানী দলটি জনসাধারণকে বুদ্ধিমান প্রানীর উপস্থিতির বিষয়ে আপাততঃ সন্দেহপ্রবণ থাকার জন্য বলে দিয়েছে।

এই দলের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১০০০০ বস্তুর মধ্যে একটি থেকে এধরনের অস্বাভাবিক সংকেত আসা নিশ্চিতভাবেই এই বিষয়ে আরো কৌতুহলী হওয়ার দাবী রাখে এবং আরো বিস্তারিত গবেষণার অপেক্ষা রাখে। তবে, অনন্যসাধারণ দাবীর জন্য অনন্য সাধারণ আলামতও প্রয়োজন। দ্ব্যার্থহীনভাবে এই সংকেতগুলোকে মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তার কার্মকান্ড হিসেবে ধরে নেওয়ার জন্য আমাদের আরো অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে।

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশিত ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন ইউটিউবে। লিংক:
১. টেলিভিশনঃ তখন ও এখন
২. স্পেস এক্সের মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা

 

1 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.