জল ভাল্লুকের বিশেষ প্রোটিনই একে উচ্চ বিকিরণ থেকে রক্ষা করে

0
652

জল ভাল্লুক’ নামক ট্রাডিগ্রেড সম্ভত পৃথিবীর সবচেয়ে বলিষ্ঠ প্রাণী। আট পা বিশিষ্ট এই আণুবীক্ষণিক জলজ বাসিন্দা চরম ঠান্ডা কিংবা চরম তাপমাত্রা প্রতিরোধ করতে পারে। এমনকি মহাকাশেও টিকে থাকতে সক্ষম। দশ বছর পর্যন্ত কোন প্রকার খাবার কিংবা পানি ছাড়াই বসবাস করতে এবং উচ্চ বিকিরণ সহ্য করতে পারে।

Nature Communications– এ প্রকাশিত এক গবেষণায় সম্ভবত বর্ণনা করতে পারবে কিভাবে ট্র্যাডিগ্রেড অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে তাদের ডিএনএ নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি যখন রঞ্জন-রশ্মির মাধ্যমে আঘাত করা হলেও বিকিরণ থেকে তাদের ডিএনএকে রক্ষা করার জন্য একপ্রকার প্রতিরক্ষামূলক প্রোটিন বিবর্তিত করে।

টকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আণবিক জীববিজ্ঞানী তাকিকাজু কুনিয়েডা নেচার নিউজকে বলেন, “রঞ্জন-রশ্মির বিরুদ্ধে সহনশীলতা বলতে বুঝায় এই প্রাণীটির তীব্র জলবিয়োজন থেকে অভিযোজন করার মতো পার্শ্ব কর্মকান্ডকে বুঝায়।”

তাঁর বর্ণনামতে, জলবিয়োজনের কারণে ডিএনএ অনু চিরে আলাদা করতে পারে। সম্ভবত এই শক্তিশালী রক্ষাকবচই বিবর্তন প্রক্রিয়ার সূত্রপাত হিসেবে কাজ করছে।

গবেষকগণ ট্র্যাডিগ্রেডের সবেচেয়ে চাপ সহনশীল প্রজাতি Ramazzottius varieornatus এর উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। তাঁরা এর জিনোমকে বিভিন্ন ক্রমে সাজিয়ে এবং এর কিছু জিন মানষের কোষে প্রতিস্থাপন কররেন। গবেষকগণ Dsup নামের একপ্রকার প্রোটিনকে আবিষ্কার করেন । যা ডিএনএকে এইসব কোষ থেকে আগত ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে রক্ষা করেছিল।

কুনিয়েডা আরো বলেন, “মানব কোষে যে Dsup প্রোটিন সৃষ্টি করেছে তা রঞ্জন-রশ্মির দ্বারা সৃষ্ট ডিএনএর ক্ষয়-ক্ষতিকে নিয়ন্ত্রণ কোষের চেয়ে প্রায় ৪০-৫০ ভাগ বেশি হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।”

এই বিশেষ প্রোটিন যুক্ত জিন ট্র্যাডিগ্রেডের অন্য কোন প্রজাতির মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই গবেষণার তথ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারীভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কুনিয়েডা বলেন, “এটা মাহাকাশ উড্ডয়নে, রেডিওথেরাপি এবং বিকিরণ শ্রমিকের জন্য সহায়ক হতে পারে।”

-শফিকুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.