ড্রোনরূপী ভাসমান ক্যামেরা

0
262

ছবি তোলা মানুষের অন্যতম প্রিয় একটি শখ। বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের (ফেসবুক,টুইটার,হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি) আবির্ভাবের কারণে ছবি তোলা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যক্তিগত ছবির আদান প্রদানও বহুগুণ বেড়েছে। মোবাইল ফোনের প্রচলনের ফলে ছবি তোলার পদ্ধতিতেও এসেছে ভিন্নতা। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে সেলফি।এতে নিজের ছবি নিজেই তোলা যায়। স্মার্টফোন আছে কিন্তু সেলফি তুলে নাই,এমন মানুষ এখন খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর।

তবে যারা সেলফি স্টিক দিয়ে সেলফি তুলতে তুলতে ক্লান্ত, তাদের জন্য সুসংবাদ নিয়ে এল আমেরিকান-চাইনিজ ইলেক্ট্রনিকস কোম্পানী জিরো জিরো রোবোটিকস। তারাই পৃথিবীর সর্বপ্রথম ব্যক্তিগত ক্যামেরার আদলে ড্রোন তৈরি করেছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে হোভার ক্যামেরা। এটি প্রকৃত অর্থে একটি ক্ষুদ্র ড্রোন যাকে সহজে ভাজ করে পকেটে পুরে রাখা যায়। হোভার ক্যামেরার বিশেষত্ব হচ্ছে,এটি উড়ন্ত অবস্থায় বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন কোণে (০ থেকে ৩৬০ ডিগ্র্রির মধ্যবর্তী যে কোন কোণে) ছবি তুলতে সক্ষম।এটি ভূমি থেকে সর্বোচ্চ ১৬৪ ফিট বা ৫০ মিটার উচ্চতা থেকে ছবি তুলতে পারে। ড্রোনের উড্ডয়ন ও এর অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এর সহকারী একটি স্মার্টফোন অ্যাপ দিয়ে। এই অ্যাপ ব্যবহার করে হোভার ক্যামেরা দিয়ে ফোরকে  ভিডিও ও ছবি ধারণ করা যাবে। শুধু তাই নয়,ছবি বা ভিডিও তোলার সাথে সাথে এতে বিদ্যমান ব্লুটুথের সাহায্যে উড়ন্ত অবস্থাতেই ক্যামেরা থেকে তা মোবাইলে স্থানান্তর করা যাবে।ফলে ছবি তোলার পর তা দ্রুত আদান প্রদান করা যাবে।

সুন্দর ও ঝকঝকে ছবি তোলার জন্য এতে ১৩ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। হোভার ক্যামেরা আকারে ছোট ও হালকা। তাই এটি সহজে বহনযোগ্য। এটি তৈরিতে কার্বনের ফাইবার বা তন্তু ব্যবহৃত হয়েছে।যাতে ক্যামেরাটি সহজে ভেঙ্গে না যায়। এর ডানাগুলো আবৃত ও হাত দিয়ে তা স্পর্শ করা যায় না।ফলে এটি ব্যবহারে কোন ক্ষতি হওয়ার তেমন আশংকা নেই।ইচ্ছে করলে ছোট শিশু কিশোরেরাও এটি ব্যবহার করতে পারে। এটি চালানোও বেশ সহজ।ছবি তোলার সময় কাগজের প্লেনের মত আকাশের দিকে ছুঁড়ে মারতে হবে। ছবি তোলা শেষ হলে তা ভাঁজ করে বন্ধ করতে হবে। তবে অন্যান্য ড্রোনের মত এরও একটি দূর্বলতা আছে।সেটি হচ্ছে ব্যাটারীর স্থায়ীত্ব। ব্যাটারীতে পুরো চার্জ থাকলে এটি আট মিনিট পর্যন্ত আকাশে উড়তে পারে। তবে এর নির্মাতারা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাটারীর সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।ব্যাটারীটি ক্যামেরা থেকে খুলেও রাখা যায়। তাই সেটি বহনে আলাদা ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।

জিরো জিরো রোবোটিকসের বিবৃতি অনুসারে,আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হোভার ক্যামেরা বাজারে ছাড়া হবে।এটি প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে বিক্রি শুরু হবে।তারপর ধাপে ধাপে তা ইউরোপ ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বাজারে ছাড়া হবে। এই ক্যামেরারূপী ড্রোনের প্রাথমিক মূল্য ধরা হয়েছে ৬০০ মার্কিন ডলার (আনুমানিক ৫০,০০০ টাকা)। সেলফিপ্রেমী ও বিলাসী বিত্তবানদের জন্য তা নিশ্চয়ই খুব বেশি কিছু নয়।

-নাসরুল্লাহ মাসুদ

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.