ফিলিপাইনের একটি দ্বীপে গবেষকরা প্রায় ২৮ টি নতুন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন। দ্বীপের নাম লুজন। নতুন আবিষ্কৃত প্রাণীগুলোর অধিকাংশই এন্ডেমিক। প্রাণীগুলো এন্ডেমিক, এর মানে হচ্ছে ঐ দ্বীপ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোথাও এদের দেখতে পাওয়া যায় না। কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব কোনো একটি এলাকার মাঝে সীমাবদ্ধ হলে ঐ প্রাণীকে ঐ এলাকার সাপেক্ষে এন্ডেমিক বলা হয়। নতুন আবিষ্কৃত এই প্রাণীগুলো ছাড়াও ঐ দ্বীপে আরো কতগুলো এন্ডেমিক স্তন্যপায়ী প্রাণী ছিল। এখন এবং আগের সব মিলিয়ে ঐ দ্বীপে এন্ডেমিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৫২ টিতে। এত পরিমাণ এন্ডেমিক প্রাণীর উপস্থিতির কারণে এই দ্বীপটি প্রাণবৈচিত্র্যের দিক থেকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি স্পট হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে।
অনুসন্ধান ও গবেষণা চালিয়ে গেলে হয়তো আরো অনেকগুলো প্রাণী আবিষ্কার করা যাবে, যা আগে শ্রেণীবিন্যাস করা হয়নি তথা হিসেব করা হয়নি।
ফিলিপাইনের লুজন দ্বীপ অনেক বিখ্যাত। অনেক মানুষের আনাগোনাও আছে এতে। তা সত্ত্বেও এই প্রজাতিগুলো হিসেবের বাইরে অপরিচিতই থেকে গিয়েছিল এতদিন। ২০০০ সালের দিকে গবেষক দল এই দ্বীপে ২৩ টি নতুন স্তন্যপায়ী প্রাণী খুঁজে পেয়েছিল। এর পরে তাদের অনুসন্ধান ও গবেষণা থেমে থাকেনি। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সময়ে সময়ে বেশ প্রাণী প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। এদের অনেকগুলোই ছিল পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণী থেকে ব্যতিক্রম তথা এন্ডেমিক।
সম্প্রতি তারা Frontiers in Biogeography জার্নালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে নতুন ২৮ টি স্তন্যপায়ী প্রাণী আবিষ্কারের কথা জানান। প্রবন্ধের সহ লেখক এরিক রিকার্ট এক বিবৃতিতে বলেন “নতুন আবিষ্কৃত এই প্রাণীগুলো ফিলিপাইন অঞ্চলের প্রাণবৈচিত্র্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। জীবন বৃক্ষের (tree of life) ঐ অংশের দুটি ‘ডাল’-এর সাথে তারা সম্পৃক্ত।”
নতুন আবিষ্কৃত এসব প্রাণীর মাঝে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘cloud rats’ এবং ‘earthworm mice’। এসব ইঁদুরের মাঝে এক প্রকার ইঁদুরের গোফ এত বড় যে দেহের তুলনায় চুল বড় বলে প্রতিভাত হয়। এদের মাঝে এক প্রকার বাদুড়ও আছে। এসব বাদুড় আকৃতিতে এতটাই ছোট যে সহজেই একটি ছোটখাট বাশের মাঝখানের ফাঁপা অংশে এরা ঘুমোতে পারে।
-সিরাজাম মুনির শ্রাবন