নতুন নতুন প্রজাতিগুলো অনায়াসে আবিষ্কৃত হয়ে যায় না, বরং তার জন্য দশকের পর দশক ধরে নিরলস পরিশ্রম করতে হয়। তেমনই একটি ঘটনা হলো Arminisaurus schuberti ‘র আবিষ্কার। এটি একটি নতুন আবিষ্কৃত ‘সমুদ্র দানব’ যা জুরাসিক জুগের মহাসাগরগুলোতে ১৯ কোটি বছর আগে সাঁতরে বেড়িয়েছিলো।
Arminisaurus এর জীবাষ্মে পরিণত হাড়-গোড় উদ্ধার করা হয় ১৯৮০’র দশকে জার্মানীর নিকটবর্তী বিয়েলেফেল্ডের একটি কাদার স্তর হতে। এটি খুঁজে পাওয়ার আগে খনি-যন্ত্রপাতির আঘাতে এর কঙ্গালটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং কেবলমাত্র ৪০ শতাংশ হাড়গোড় উদ্ধার করা যায়।
আশি’র দশকে উদ্ধার হলেও দীর্ঘদিন এটিকে এলোমেলো অবস্থায় ফেলে রাখা রাখা হয়। অবশেষে ২০১৫ সালে তরুন সৌখিন জীবাষ্মবিদ সিগফ্রেড শুবার্ট অত্যন্ত অধ্যাবসায় নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে হাড়গুলো পরিষ্কার করেন এবং সংরক্ষণের জন্য বিয়েলফেল্ডের নাতুরকুন্ডে যাদুঘরে পাঠান।
প্লেসিওসর জাতীয় এই সমুদ্র দানব ডায়নোসরের নাম শুবার্টের এবং জার্মানির গোত্রপ্রথান আর্মিনিয়াসের সম্মানার্থে রাখা হয় Arminisaurus schuberti। গবেষক স্ভেন স্যাকস এই প্রানী সম্বন্ধে বলেন, “ডায়নোসর যুগের জলচারী শিকারীদের মধ্যে প্লেসিওসর সবচেয়ে সফল হয়েছিলো। এর মধ্যে কিছু প্রানী, যেমন, বিখ্যাত Liopleurodon রা ছিলো দৈত্যাকৃতির যারা দৈর্ঘ্যে ১৫ মিটার বা ৫০ ফুট পর্যন্ত হতে পারত। তারা বর্তমানের সমুদ্রের শ্বেত হাঙ্গর (white shark) কিংবা খুনি তিমি (killer whale)’র সাথে তুলনীয়।”
তবে Arminisaurus এদের মধ্যে ক্ষুদ্র প্রজাতির, মাত্র ৩ থেকে ৪ মিটার বা ১০ থেকে ১৩ ফুট দীর্ঘ এবং সম্ভবতঃ অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির প্রানী যেমন: মাছ বা স্কুইড শিকার করত। তবে এরা প্লেসিওসরাস গোত্রের অন্যান্য প্রানীর মতো বিশেষ কাঁধের অস্থিযুক্ত যা হতে এদের গোত্র পরিচয় সনাক্ত করা গেছে।
এই আবিষ্কার জীবাষ্মবিদদের প্লেসিওসরজাতীয় সমুদ্র দানবদের বিবর্তীয় ধারা বিষয়ক জ্ঞান বহুলাংশে বৃদ্ধি করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। [ScienceAlert অবলম্বনে]
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক