কিছু কিছু বাদুর, ডলফিন, তিমি এরা শব্দের মাধ্যমে চলাফেরা করত পারে। আমরা সবাই স্কুল পর্যায়ে এটা পড়ে এসেছি। এই প্রানীরা একটা শব্দ তৈরি করে মুখ দিয়ে। সেই শব্দ অতঃপর কোন প্রতিবন্ধকে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে এলে প্রতিধ্বনির বৈশিষ্ট্য থেকে প্রতিবন্ধক সম্বন্ধে বেশ স্পষ্ট ধারণা করতে পারে। শব্দের মাধ্যমে পরিবেশ সম্বন্ধে এই ধরনের উপলব্ধিকের ইকোলোকেশন বলা হয়। এটি অনেকটাই দেখার বিকল্প। চোখের মাধ্যমে যেমন স্পষ্ট দেখা যায়, ইকোলোকেশনের মাধ্যমেও পরিপার্শ্ব সম্বন্ধে বেশ স্পষ্ট ধারনা তৈরি হয়। মানুষের পক্ষে এধরনের ইকোলোকেশনের মাধ্যমে পরিবেশ অনুধাবণ করতে পারার কথা শোনা যায় না।
কিন্তু ডানিয়েল কিশ ব্যাতিক্রম। তিনি প্রমাণ করেছেন চর্চার মাধ্যমে মানুষ ইকোলোকেশনের ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। মাত্র ১৩ মাস বয়সে রেটিনোব্লাস্টোমা নামক ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর দুটি চোখ উপড়ে ফেলে দিতে হয়। তারপর থেকে বর্তমানে ৪৪ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি ইকোলোকেশন চর্চা করে দক্ষতা অর্জন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি বলে দিতে পারেন তাঁর কাছাকাছি কোনো গাড়ি ঠিক ভাবে পার্ক করা হয়েছে কিনা, কাছাকাছি বিদ্যমান কোনো গাছের আকৃতি কেমন, রাস্তায় কেমন যানজট।
এর মাধ্যমে তিনি সাইকেল চালিয়ে বিদ্যমান যানবাহনের ফাঁকফোঁকর দিয়ে চলে যেতে পারেন। তাঁর বাড়িতে অতিথি এসেছে কিনা দূর থেকেই পার্কিং এরিয়ায় গাড়ি সনাক্ত করে বলে দিতে পারেন। তিনি নিজে নিজে হাইকিংএ বেরিয়ে পড়েন এবং সহজে গাছ বেয়ে উঠে যেতে পারেন। তিনি বেশ ভালো নাচতেও পারেন। তিনি সারা দুনিয়াতে ভ্রমন করে বেড়ান এবং সহসা তাঁর অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হয় না।
কিশ এখানেই থেমে থাকেন নি। আমেরিকান অন্ধদের বিভিন্ন সংস্থার অসহযোগীতা সত্ত্বেও অন্য আরো কিছু সঙ্গীর সহযোগীতায় World Access for Blind নামের একটি সংস্থা তৈরি করেছেন যেটি অন্ধদের জন্য ইকোলোকেশনরন মাধ্যমে পরিবেশ অনুধাবণ করার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এর হেডকোয়ার্টার তাঁর নিজের বাসগৃহ।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক