ভারতের কয়েক হাজার শিশুকে ‘চেহারা সনাক্তকরণ পরীক্ষা’র মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া গেছে

0
494

ভারতের এনডিটিভির সূত্র অনুযায়ী, পরীক্ষামূলক Facial Recognition System (FRS) বা ‘চেহারা সনাক্তকরণ পদ্ধতি’ গ্রহণের প্রথম চার দিনে প্রায় ৩০০০ হারিয়ে যাওয়া শিশুকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

প্রতিবছর ১.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যার দেশে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া হাজার হাজার শিশুকে ট্র্যাকিং করা অসম্ভব রকম বিশাল একটি উদ্যোগ। ভারতের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয়ের মতে, কেবলমাত্র ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যেই  নিখোঁজ হয়েছে ২৪০০০০ এরও বেশি শিশু, যদিও প্রকৃত সংখ্যাটি সম্ভবত এর চাইতেও বেশী। কিছু সংস্থার মতে প্রতি বছর প্রায় ৫০০,০০০।

এই প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার জন্য, মন্ত্রণালয় একটি দেশব্যাপী অনলাইন ডাটাবেস প্রতিষ্ঠা করেছে যা ট্র্যাক চাইল্ড নামে পরিচিত। যেখানে হারিয়ে যাওয়া এবং খুঁজে পাওয়া শিশুদের ছবি পোস্ট করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশী তথ্যগুলিও বিভিন্ন সংস্থা এবং নাগরিকদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। যদিও এই ডিজিটাল রিসোর্স একটি সহায়ক হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, তবু এতদিনে জমা হওয়া এত ফাইল ও ছবি নিয়ে কাজ করা অনেক সময় ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার।

তখন, ‘বাচপান বাঁচাও আন্দোলন’ (বিবিএ) নামে একটি শিশু কল্যাণ সংস্থা এফআরএস নামের সফটওয়্যারটি তৈরি করল যা ট্র্যাকচাইল্ডের ছবিগুলো নিয়ে কাজ করার প্রক্রিয়াটিকে স্বয়ংক্রিয় করবে। এই প্রোগ্রামের ব্যাবহৃত সনাক্তকরণ পদ্ধতির বিশদ বিবরণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে বর্তমান FRS প্ল্যাটফর্ম দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। যথা, জ্যামিতিক এবং ফটোমেট্রিক।

জ্যামিতিক পদ্ধতিতে ক্যামেরা থেকে ব্যক্তির দূরত্ব ও মুখের বিভিন্ন চিহ্ন ব্যাবহার করে এবং ফটোমেট্রিক পদ্ধতিতে  ছবির গ্র্যাডিয়েন্টের পিক্সেল-বাই-পিক্সেল ভাগ করে রেফারেন্স ইমেজের অ্যালগরিদমগুলির সাথে মেলানো হয়। এটি সম্ভবত এক অর্থে একটু ব্যতিক্রম যে, দিল্লি এফআরএস এই প্রযুক্তিটি গ্রহণ করেছে।

দিল্লি হাইকোর্টের সহযোগিতায় পুলিশ বিভাগের হস্তক্ষেপের আগ পর্যন্ত, কিছুটা বিভ্রান্তিকর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে এতদিন এফআরএস পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। আর অনুমোদন পাওয়ার পরপরই , FRS TrackChild ডাটাবেসের ৪৫,০০০ ছবি থেকে ২,৯৩০ শিশুকে সনাক্ত করতে পেরেছিল।

“ভারতের প্রায় ২০০,০০০ শিশু এখনও নিখোঁজ এবং বিভিন্ন চাইল্ড কেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলিতে রয়েছে প্রায় ৯০,০০০। এটা কারো পক্ষেই সম্ভব নয় যে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছবি মিলিয়ে দেখবে”, বিবিএ’র কর্মী ভুবন রিভু ‘দ্য বেটার ইন্ডিয়া’র সাথে বলেন,

“পুলিশ এই সফটওয়্যার ব্যবহার করল কি না করল  তা দেখার বিষয় নয়। এমনকি, এই সফ্টওয়্যার আছে এমন যেকোন ডিপার্টমেন্ট যদি মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে থেকে তাদের সমস্ত ডেটাবেস বিশ্লেষণ করে, তাহলেও পর্যাপ্ত ফলাফল পাওয়া যাবে, যা পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টগুলোর সাথে শেয়ার করা যেতে পারে। ”

এটি ট্র্যাকচাইল্ড প্রোগ্রামে চূড়ান্তভাবে যোগ করার  আগে আইনী বাধাগুলি পরিষ্কার করতে হবে যা কিনা এখনও পুরাপুরি পরিষ্কার নয়। [iflscience অবলম্বনে]

-চিন্ময় সরকার

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.