মঙ্গলের সর্বত্র পৃষ্ঠের নীচের ৩০০ ফুট পুরু বরফের স্তর পাওয়া গেছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি লালগ্রহটিতে এ ধরনের আটটি ভুতাত্ত্বিক কাঠামো আবিষ্কার করেছেন। এই কাঠামোগুলোকে স্ক্র্যাপ নামে ডাকা হয়। এই স্ক্র্যাপগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে পৃষ্ঠের ঠিক নিচেই রয়েছে পুরু বরফের স্তর।
গবেষকগণ বলেন, মঙ্গলে অভিযানের জন্য এই আবিষ্কার লোভনীয় লক্ষ্য হতে পারে এবং ভবিষ্যতে মঙ্গলে ভ্রমণকারীদের জন্য এটি হবে অতিগুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় অবস্থিত ভুতাত্ত্বিক জরিপের জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্রের সদস্য কলিন ডানডাস বলেন, “গবেষণার জন্য আমরা বরফের মাঝে নতুন বাতায়ন খুঁজে পেয়েছি। এটি মঙ্গল নিয়ে যাঁরা ভাবেন তাঁদের সবার জন্যই উৎসাহব্যঞ্জক হবে বলে আমার ধারনা।”
তবে মঙ্গলে বরফের উপস্থিতির খবর নতুন নয়। ২০০১ সালে মার্স ওডিসি মহাশূন্যযান মঙ্গলে পৌঁছে এর বরফের আলামত শনাক্ত করার চেষ্টা করে। এই যানের গামা-রশ্মি স্পেক্ট্রোমিটার হাইড্রোজেনের বর্ণালী শনাক্ত করে যা হতে ধারনা করা যায় মঙ্গলে প্রচুর বরফ রয়েছে। মঙ্গলের পৃষ্ঠের অন্তত একতৃতীয়াংশ জুড়ে অগভীর বরফের নমুনা রয়েছে।
অবশ্য দূর হতে হাইড্রোজেন শনাক্ত করে বরফের পুরুত্ব বা গভীরতা সম্বন্ধে আঁচ করা দুঃসাধ্য। অপেক্ষাকৃত নতুন মার্স রিকনেইসেন্স অরবিটার আরো অনুপুঙ্খভাবে মঙ্গলের পৃষ্ঠের মানচিত্র নিরুপণ করে। ডানডাস এবং তাঁর সহকর্মীবৃন্দ এই যন্ত্রটি হতে প্রাপ্ত ছবিগুলো পর্যালোচনা করে ছোট গহ্বর, হিমবাহ এবং আস্তরণ হিসেবে বরফ শনাক্ত করেন।
ডানডাসের মতে, “উচ্চ রেজ্যুলেশনের তথ্য বরফআচ্ছাদিত বিভিন্ন কাঠামো সম্বন্ধে আমাদের জানাশোনা আরো গভীর করেছে।”
ব্রিটেনের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ম্যাট বা’মে একজন গ্রহসম্বন্ধীয় বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, মূল আবিষ্কারটি হলো ছবিতে দেখানো নীলাভ স্তর। এটি একটি উপ-স্তর নির্দেশ করে যা গাঠনিকভাবে লাল ধুলোবালি হতে ভিন্ন। [Science Alert অবলম্বনে।]