আক্ষরিক গগনচুম্বী ভবন, ঝুলবে আকাশ থেকে

1
524

একটি শহরের ছবি দেখতে পাচ্ছেন যাতে বেশ কিছু গগনচুম্বী অট্টালিকা (skyscrapper) রয়েছে। কিন্তু সত্যিই যদি আক্ষরিক অর্থে গগনচুম্বী বোঝানো হয় তাহলে ভবন রয়েছে একটি, যেই ভবন উল্টো হয়ে ঝুলে আছে অন্য সব ভবনকে ছাড়িয়ে!

উদ্ভট মনে হলেও এধরনের ভবনের কনসেপ্ট একেবারে অবৈজ্ঞানিক নয়। অনেক সময় বড় বড় জিজাইন প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু কিছু ভবনের নকশা করে নিজেদের আত্মপ্রচারের জন্য, ভবনটির নির্মান বাস্তবায়ন করার জন্য নয়। এধরনের নকশায় যথাযথ মাপজোঁখ থাকে এবং বৈজ্ঞানিক সম্ভাব্যতা থাকে এসব ভবনের।

ছবির ভবনটি তেমনই একটি উদাহরণ। এই ভবনের নকশা করেছে ক্লাউড আর্কিটেকচার অফিস (CAO) এবং ভবনটির নাম দেওয়া হয়েছে অ্যানালেম্মা টাওয়ার। বর্তমান প্রাযুক্তিক বাস্তবতায় এটি অসম্ভব হলেও ভবিষ্যতে এই ধরনের টাওয়ার নির্মান সম্ভব হতে পারে। এই টাওয়ারগুলো ভুমিতে সাপোর্ট দিয়ে রাখার বদলে আকাশ তথা পৃথিবীর কয়েক হাজার কিলোমিটার উপর হতে ঝুলিয়ে রাখা হবে। তবে তার জন্য একটি বড়সড় উল্কাপিন্ড ধরে আনা হবে যেটি পৃথিবীর চারদিকে দিনে একবার করে প্রদক্ষিণ করবে।

উল্কাপিন্ড হতে ঝুলানো হয়েছে ভবনটিকে…
ভবনটি প্রতিদিনই ৪ আকৃতির এই রেখার মধ্যে গতিময় থাকবে তবে এর বাইরে যাবে না। ফলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে এটিকে ভূমির সাপেক্ষে একই অবস্থানে দেখা যাবে।

পৃথিবী যেহেতু দিনে একবার করে ঘুরছে তাই এই উল্কাপিন্ডটি সর্বদা ভুমির উপর ভূমি সাপেক্ষে একটি অঞ্চলের মধ্যেই অবস্থান করবে এবং ভবনটিও ভূমি সাপেক্ষে ওই অবস্থানের মধ্যে থাকবে। ভবনটি নির্মান করা হবে উল্কাপিন্ড থেকে ঝুলিয়ে ক্রমশঃ উপর হতে নিচের দিকে।

মেঘ ফুঁড়ে উঠে/ নেমে যাচ্ছে অ্যানালেম্মা টাওয়ার।

২০১৫ সালে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার রোজেটা মিশন সফলতার সাথে চুরিওমভ-জেরাইসমেনকো নামের ধূমকেতুর উপর অবতরণ করে, যার মাধ্যমে প্রমাণীত হয় বড় সড় উল্কাপিন্ড তথা গ্রহাণু নিয়ে কাজ করার ক্ষমতা মানুষের আছে। নাসা অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেক্ট মিশন নামের একটি মিশনের মাধ্যমে একটি গ্রহাণুর অংশবিশেষ ভেঙ্গে নিয়ে সেটিকে আমাদের চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করানোর পরিকল্পনা করেছে। এই একই পদ্ধতিতে CAO গ্রহাণুকে ধরে এনে তাতে শক্ত দড়ি টাঙ্গিয়ে পৃথিবী পর্যন্ত বিস্তৃত করে সেই দড়ির উপর গগনচুম্বী অট্টালিকা তৈরির পরিকল্পনা করেছে।

অ্যানালেম্মা টাওয়ারের নকশাপ্রণেতা ওস্টাপ রুডাকেভিচ বলেন এই ভবনটি টেকসই ও হালকা বস্তু যেমন কার্বন ফাইবার এবং অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি হতে পারে।

বর্তমানে যেসব দড়ি ব্যবহার করা হয় সেগুলো এধরনের ভবনকে ঝুলিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। তবে ন্যানোবস্তু নিয়ে গবেষণায় অগ্রগতির সাথে সাথে কয়েকশগুণ শক্তিশালী দড়ি তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়ে যেগুলোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে এই ধরনের ভবনে ঝুলিয়ে রাখা যেতে পারে।

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

1 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.