মানবজাতির ভিনগ্রহে বসতি স্থাপনের কথা উঠলেই মঙ্গল গ্রহের নাম অবধারিত ভাবে চলে আসে। কিন্তু শনির গ্রহ টাইনটানও হয়তো বিপুল পরিমানে মানুষকে ধারন করতে পারবে।
Journal of Astrobiology and Outreach এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই বিষয়ক একটি গবেষনা প্রকাশিত হয়েছে। এই উপগ্রহে যে পরিমাণ সম্পদ মজুদ আছে তাতে ৩০ কোটি মানুষের ভার এটি বহন করতে পারবে বলে এই গবেষণায় বলা হয়ছে। সংখ্যায় এই পরিমান যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার সমান।
অ্যারিজোনার প্ল্যানেটারি সায়েন্স ইনস্টিটিউটের আমান্ডা হেনড্রিক্স এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যালটেকের ইউক ইউং তাঁদের গবেষণাপত্রে লেখেন, “পৃথিবী বহির্ভুত মানব বসতির জন্য সৌরজগতের মধ্যে টাইটানই সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। সৌরজগতের অন্য অনেক কঠিন পৃষ্ঠের বিপরীতে এতে পৃথিবীসদৃশ বৈশিষ্ট্য আছে এবং একটি ঘন বায়ুমন্ডল রয়েছে যা সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ হতে এর বাসিন্দাদের রক্ষা করবে।”
গবেষণাপত্রে গবেষকগণ টাইটানে মানব কলোনী স্থাপনের জন্য বেশ কিছু শক্তির উৎস দেখিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে নিউক্লিয়, রাসায়নিক, জলবিদ্যৎ, বায়ু এবং এমনকি সৌর শক্তি।
ইতিমধ্যেই গভীর মহাকাশীয় অনুসন্ধান যানগুলোতে নিউক্লিয় শক্তি ব্যবহার করা হয়। এগুলোতে উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয় প্লুটোনিয়াম-২৩৮। টাইটান উপগ্রহেও এটি একটি উপযুক্ত শক্তির উৎস হতে পারে। টাইটানে রয়েছে বিপুল পরিমান মিথেন এবং তরল হাইড্রোকার্বনের সমুদ্র। এসবও একই ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে।
তরলের এই জলাধারগুলো জলবিদ্যুতেরও উৎস হতে পারে। যদিও ইতিপূর্বে দেখা গেছে টাইটানের সমুদ্রগুলোতে ঢেউ মাত্র ১ সেন্টিমিটার উচ্চতা বিশিষ্ট তবে গবেষকগণ বলছেন, কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমে এগুলোকে ঢাল বেয়ে প্রবাহিত করে উল্লেখযোগ্য পরিমান শক্তি পাওয়া যেতে পারে।
টাইটানের পৃষ্ঠের উঁচু অংশে বাতাসের বিশাল অংশ কাজে লাগানো যেতে পারে। এর পৃষ্ঠে যদিও বাতাসের গতিবেগ নামমাত্র কিন্তু বায়ুমন্ডলের ৪০ কিলোমিটার উপরে এই গতিবেগ প্রতিসেকেন্ড ২০ মিটার পর্যন্ত হয়। বেলুন সদৃশ বাতাস টারবাইন বা অন্য কোনো ব্যবস্থায় এই শক্তি সংগ্রহ করা সম্ভব।
সবচেয়ে আলোচ্য শক্তির উৎস অবশ্য সৌর শক্তি। যদিও সূর্য পৃথিবীর তুলনায় টাইটানের কাছ থেকে ১০ গুণ দূরে, তবুও গবেষক দল বলছেন সৌর শক্তির প্রযুক্তির অগ্রসরতার কারণে শিঘ্রই টাইটানে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক