ডায়নোসরের সময়কালের পোকামাকড় বা কীট-পতঙ্গই শুধু আম্বারে আটকা পড়েনি, সেই সাথে ডায়নোসর এবং কিছু প্রাচীন পাখিদেরও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি একটি সম্পূর্ণ পাখিকেই আম্বারের মাঝে সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা মায়ানমারে খুঁজে পাওয়া এক অ্যাম্বারের টুকরোয় সংরক্ষিত মাত্র কয়েকদিন বয়ষ্ক একটি পাখির এমন এক নমুনার সন্ধান পেয়েছে যা আমাদেরকে প্রায় ১০ কোটি বছর আগের প্রাচীন জীবনের আভাস দিচ্ছে। অ্যাম্বারের ভেতর আপনি পাখিটির মাথা, লেজ এবং ঘাড় দেখতে পাবেন। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে এর পাখা এবং পা। একটি গাছের এক টুকরো রজন বা আঠালো বস্তু একদম নিখুঁতভাবে পাখিটির পালক, মাংস এবং পাজরগুলিকে সংরক্ষন করেছে এবং সেইসাথে এটি আমাদেরকে প্রাগৈতিহাসিক প্রজাতি ‘opposite birds’ সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করছে।
কানাডার রয়েল সাসকাচোয়ান মিউজিয়াম থেকে রায়ান ম্যাকক্লেরার বলেন, “এই আবিষ্কারটি এখন পর্যন্ত আমাদের পাওয়া যেকোন আবিষ্কারের মধ্যে সবচেয়ে পরিপূর্ণ এবং বিস্তারিত তথ্যপূর্ণ। এটি সম্পূর্ণরূপে আশ্চর্যজনক একটি বিষয়।”
দলটি ধারণা করছেন যে, পাখিটি ডিম থেকে বের হওয়ার পরপরই গাছের আঠালো তরল বস্তুর মাঝে পড়ে যায় এবং সেখানেই আটকা পড়ে। তবে যথেষ্ট ভাববার বিষয় হচ্ছে, এই ধরনের প্রাগৈতিহাসিক বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে আম্বারে সংরক্ষণের রাসায়নিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বিস্তারিত জানেননা।
বিজ্ঞানীরা যতদূর জানেন তা হচ্ছে, একটি গাছের রজনের মধ্যে আটকে পড়ার পর তা শক্ত হতে শুরু করে এবং সংরক্ষিত হওয়ার জন্য সঠিক পরিমাণের চাপ ও তাপ থাকলে এটি আধা-জীবাশ্ম পদার্থে রূপান্তরিত হয় যা কোপাল নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ার গতি সম্পূর্ণরূপে এর পারিপার্শ্বিক শর্তের উপর নির্ভর করে।
এই নমুনা থেকে যতদূর ধারনা করা হচ্ছে এটি একটি প্রাগৈতিহাসিক প্রজাতির পাখি যা আধুনিক সময়ের পাখিগুলির পূর্বপুরুষের সাথেই বিকশিত হয়েছিলো। তবে কোন এক কারণে এরা নন-এভিয়ান ডায়নোসরের সাথে মারা যায়। কিন্তু এই জাতের পাখিগুলি ঠিক কি কারণে মারা গিয়েছিলো যেখানে আধুনিক পাখিগুলির পূর্বপুরুষরা বেঁচে থাকতে সক্ষম হলো সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বাবা-মায়ের যত্নের অভাব একটা প্রধান কারণ হতে পারে। অধিকাংশ আধুনিক পাখিরই তাদের বাবা-মায়ের পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে যেমন, অস্ট্রেলিয়ার ব্রাশ টার্কি (আমেরিকার টার্কির সাথে কোন সম্পর্ক নেই এদের)।
নিচের ছবিগুলিতে আপনি পাখিটির বিভিন্ন অংশ দেখতে পারবেন।
[সায়েন্সএলার্ট- অবল্মবনে]
-শফিকুল ইসলাম