পরিবেশের উপর মানব সৃষ্ট প্রভাবের সংযোগ থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর থেকেই বিগত কয়েক দশক ধরে জলবায়ু নিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন আলোচনা চলছে। আর তারপর থেকেই অনেক গবেষকগণ শিল্প কারখানা থেকে সৃষ্ট কার্বন কমাতে নানা ধরনের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে একত্রিত হয়েছেন। আর এই উদ্ভাবনের অংশ হিসেবেই আবিষ্কার করা হয়েছে ‘আণবিক পাতার’।
ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াং-শি লি এবং আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের কার্বন-ডাই অক্সাইডকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করে ব্যবহার উপযোগী করার একটি অভিনব উপায় আবিষ্কার করেছেন।
দলটির তৈরী অণু আলো বা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ভয়ঙ্কর সব গ্রিনহাউজ গ্যাসকে কার্বন মনোক্সাইডে রূপান্তরিত করে। এই অণু দ্বারা উৎপাদিত কার্বন মনোক্সাইড জ্বালানি হিসেবে পুনঃব্যবহার করা যেতে পারে। বর্তমান সময়ে এই আণবিক পাতা কার্বন কমানোর সবচেয়ে কার্যকরি পদ্ধতি।
কার্বন ডাইঅক্সাইডে পরিমাণ হ্রাস করার জন্য দলটির আবিষ্কৃত এই রূপান্তর চক্র সৌর শক্তির সাহায্যে আরো দক্ষ ভাবে কার্যকর হতে পারে।
এই অণুর অতিক্ষুদ্র গ্রাফিন গঠনে গাঢ় রঙয়ের উপস্থিতি রয়েছে যা বিশাল পরিমাণ সূর্যালোক শোষণ করতে পারে। আর সূর্যালোক থেকে প্রাপ্ত শক্তি অণুর রীনিউমপদার্থের ‘যন্ত্র’ দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে কার্বন-ডাই অক্সাইড থেকে কার্বন মনোক্সাইডে রূপান্তরিত করে।
আণবিক পাতাটি কার্বনডাই অক্সাইডের গ্রিনহাউজ গ্যাসের প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করবে। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে গত ১৫০ বছরে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ প্রতি ২৮০ মিলিয়ন অংশ থেকে ৪০০ মিলিয়ন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিজ্ঞানীরা একমত যে বিগত ৫০ বছরে পৃথিবীর তাপমাত্রার ৯৫ ভাগ মানব সৃষ্ট গ্রিনহাউজ গ্যাসের মাধ্যমে বৃদ্ধি পেয়েছে।
যদিও লি খুব আনন্দিত যে, তাঁর উদ্ভাবন এই গ্রিনহাউজ গ্যাস মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তবে তিনি আশা করছেন, এই আণবিক পাতার উন্নত সংস্করণের মাধ্যমে একে অ-তরল অবস্থায় টিকে থাকতে সক্ষম করা হবে। এছাড়াও দলটি রীনিউমপদার্থের উপাদানের পরিবর্তে ম্যাঙ্গানিজ প্রতিস্থাপনের একটি উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন, যা আরও বেশি কর্মক্ষম ও সহজতর হবে।
তবে এর যদি আর কোন উন্নতিসাধন নাও করা হয় তার পরেও এটি জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধে একটি শক্তিশালী উপাকরণ হিসেব কাজ করতে পারবে [সায়েন্সএলার্ট-অবলম্বনে]
-শফিকুল ইসলাম
Good post
Wow………That’s very good!