সাপ্মতিক বছরগুলোতে ইবোলা মহামারী ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল নাগাদ ২৮,০০০ এর বেশী মানুষ ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছে যার মধ্যে ১১,৩০০ জন মৃত্যুবরণ করেছে- এই সংখ্যা ইবোলার পূর্ববর্তী সকল মৃত্যুর চেয়ে বড়।
ইউনিভার্সিটি অব নটিংহাম এবং ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস এর নতুন গবেষণায় দেখা গেছে সাম্প্রতিক সময়ে এই ভাইরাসের আক্রমন এত মারনাত্মক হওয়ার পেছনে রয়েছে মিউটেশনের মাধ্যমে ভাইরাসটির ধীর বিবর্তন যার ফলে এটি মানব কোষে পূর্বের চেয়ে সহজে প্রবেশ করতে পারছে।
একই দিনে Cell জার্নালে প্রাকাশিত দুটি পৃথক গবেষণায় ইবোলা ভাইরাসের এই মিউটেশন এবং এর ফলে মানবশরীরের এর সহজ প্রবেশ্যতা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার Scripps গবেষনা ইনস্টিটিউটের গবেষক এবং এই গবেষণার অন্যতম প্রধান লেখক ড. ক্রিস্টিয়ান এন্ডারসনের বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকের বিশ্বাস ইবোলা ভাইরাসের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। কিন্তু আমাদের গবেষনায় দেখা গেছে সাম্প্রতিক একটি বিস্তারণে ইবোলা ভাইরাসের প্রাকৃতিক মিউটেশন হয়েছে এবং মানব শরীরে এর অনুপ্রবেশযোগ্যতার পরিবর্তন হয়েছে।”
গবেষকগণ ইবোলার জিনোমের প্রায় ২০০০ সিকোয়েন্স নিয়ে গবেষণা করেছেন যেগুলো মহামারীর সময়ে মানুষের শরীর হতে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁরা দেখেন GP-A82V নামের একটি মিউটেশন, ইবোলা ভাইরাষের কোষে অনুপ্রবেশের সাথে জড়িত একটি গ্লাইকোপ্রোটিনকে পরিবর্তন করেছে। ধারনা করা হয় বিস্তারণের শুরুর দিকেই এই মিউটেশনের ঘটনাটি ঘটে গেছে। এই মিউটেশনটি ভাইরাসটিকে মানুষসহ প্রাইমেট গোত্রের অন্যান্য প্রানীর কোষে সহজে প্রবেশ করতে সাহায্য করছে। তবে অন্যান্য স্তন্যপায়ীদের উপর এর প্রভাব নেই।
ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসের জেরেমি লুবান বলেন, এই মিউটেশনটি ভাইরাসের জিনোমের বিক্ষিপ্ত অঞ্চলে ঘটেনি। বিষ্ময়কর ভাবে এটি ঘটেছে প্রোটিন অণুর একেবারে মাথায় যা ভাইরাসটি কোষে অনুপ্রবেশের জন্য চাবি হিসেবে ব্যবহার করে।”
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক