‘ন্যানো-মেশিন’ উদ্ভাবনের জন্য রসায়নে নোবেল

0
362

জ্যাঁ পিয়ে স্যভেজ, স্যার ফ্রসার স্টডার্ট এবং বার্নার্ড ফেরিঙ্গা নামের তিন ইউরোপিয়ান বিজ্ঞানী বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদে মেশিন উদ্ভাবনের জন্য ২০১৬ সালের রসায়নের নোবেল পেয়েছেন। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে করিৎকর্মা বস্তু তৈরির দুয়ার উন্মোচিত হলো।

তিন রসায়নবিদ আণবিক পর্যায়ের এমন কিছু বস্তু তৈরি করেছেন যেগুলোকে নোবেল কমিটি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষূদ্র মেশিন আখ্যা দিয়েছে। এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই চিকিৎসাক্ষেত্রে ক্ষুদ্র-রোবট তৈরিতে এবং স্বয়ং মেরামত হওয়া বস্তু তৈরিতে কাজে লাগানো হচ্ছে।

প্রাকৃতিকভাবে আমাদের শরীরের কোষে এমন ক্ষুদ্র অঙ্গাণু থাকে যেগুলো ক্ষুদ্র যন্ত্রের মতোই কাজ করে আমাদের দেহকে সচল রাখে, কোষের শক্তি উৎপাদন করে, এবং ক্ষতি হলে তা উপশম করে। নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী প্রথমবারের মতো কৃত্রিমভাবে এধরনের ক্ষূদ্রাতিক্ষুদ্র মেশিন তৈরি করেছেন যেগুলো রাসায়নিক শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করতে পারে।

চিকিৎসার অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ড্রাগ-এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ক্যান্সারের চিকিৎসার কথাই ধরা যাক। আজকাল ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য চমৎকার কেমোথেরাপি পদ্ধতি প্রচলিত হয়েছে। কিন্তু এর একটি প্রধান সমস্যা হলো এ ধরনের পদ্ধিতে ক্যান্সার কোষের পাশাপাশি স্বাভাবিক কোষেরও মৃত্যু ঘটে যার ফলে শরীরের উপর দিয়ে বিশাল ধকল বয়ে যায়। তাই বর্তমান বিশ্বের একটি আলোচিত এবং গুরুত্ববহ গবেষণা হচ্ছে এমন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যাতে যথাযথভাবে বাছাইয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কোষগুলোকে ধ্বংস করা যায়। দিনে দিনে এই কাজে উত্তোরোত্তর সাফল্য তৈরি হচ্ছে এবং ব্যবহৃত হচ্ছে নানা রকমের কৌশল। তারই একটি হচ্ছে ন্যানোপ্রযুক্তি বা আরো যথাযথভাবে বললে ন্যানোরোবোটিক্স।

তিন গবেষকের ন্যানোমিটারের কাছাকাছি আকারের এই যন্ত্রগুলো বিশেষ নির্দেশনা গ্রহণ করে রক্তবাহিত হয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে শুধুমাত্র নির্দেশনা অনুযায়ী কোষগুলোর উপর কাজ করবে। যার ফলে রোগ নির্ণয় এবং প্রতিকার আরো সহজসাধ্য হয়ে আসবে। এধরণের গবেষণার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ন্যানোবাহন উদ্ভাবিত হয়েছে যেটি একটি গাড়ির সাথে তুলনীয় এবং গাড়ীর চাকাগুলো কয়েকটি মাত্র পরমাণু দিয়ে গঠিত! ন্যানো মেশিনের কয়েকটি নমুনা দেওয়া হলো চিত্রগুলোতে।

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.