সম্প্রতি অবিষ্মরনীয় কোয়ান্টাম যোগাযোগ পরীক্ষার জন্য বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম উৎক্ষেপন করে কক্ষপথে প্রেরণ করেছে চীন। এটি ভবিষ্যতের নিরাপদ যোগাযোগের ভিত্তি স্থাপন করবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
কোয়ান্টাম সায়েন্স স্যাটেলাইট কিংবা মিকিয়াস ডাকনামের এই কৃত্রিম উপগ্রহটি মহাশূন্য এবং পৃথিবীর মাঝে কোয়ান্টাম যোগাযোগের প্রথম মহাশূন্য যান। এটি বিপুল দুরত্বে স্থাপিত দুটি ফোটনের মধ্যে কোয়ান্টাম এন্টেঙ্গেলমেন্ট তৈরি করবে এবং কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখবে। এন্টেঙ্গেলমেন্ট হলো দুটি কণার মধ্যে জট পাকানো অবস্থা, যাদের একটি কণার কোনো ধরনের পরিবর্তন ঘটলে অপর কণাটির মধ্যেও পরিবর্তন ঘটে, তাদের মাধ্যে দূরত্ব যতোই হোক না কেন। ফলে আমরা একটি কণায় পরিবর্তন করে দূর-দুরান্তে অবস্থিত অপর এন্টেঙ্গেলড কণাটিতে পরিবর্তনের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি।
গোবি মরুভুমি থেকে ১৫ আগষ্ট বিকেল ৫ টা ১৭ মিনিটে Long March 2D রকেটের মাধ্যমে এই মহাশূন্যযান উৎক্ষেপন করা হয়। উৎক্ষেপণের ১০ মিনিটের মধ্যে এটি কক্ষপথে পৌঁছে যায় এবং অন্ততঃ দু’বছরের জন্য উচ্চাভিলাশী বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।
কোয়ান্টাম তথ্য বিজ্ঞান একটি উদীয়মান ক্ষেত্র এবং এটি অনেক সম্ভাবনাময় ব্যবহারিক প্রয়োগের কাজে লাগতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ গতির কোয়ান্টাম কম্পিউটার এবং অত্যন্ত নিরাপদ কোয়ান্টাম যোগাযোগ ব্যবস্থা। দুটি কণার মধ্যে কোয়ান্টাম যোগাযোগ সহজাতভাবেই নিরাপদ কেননা তৃতীয় কোন কণা এর মধ্যে হানা দিলে ফোটনের এন্টেঙ্গেলমেন্ট অবস্থার অবসান ঘটবে এবং খুব সহজে যোগাযোগকারীরা তা বুঝে ফেলতে পারবেন। এই যথাযথ নিরাপত্তা পাওয়ার জন্য যোগাযোগকারীরা সাংকেতিক বার্তায় এন্টাঙ্গেলড ফোটন ব্যবহার করবেন।
তাত্ত্বিকভাবে এন্টেঙ্গেলড অবস্থায় দুটি ফোটনের মধ্যে অনির্দিষ্ট দুরত্ব পর্যন্ত সম্পর্ক বজায় থাকে, কিন্তু ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে কয়েকশ’ কিলোমিটারের বেশি এই সুবিধা পাওয়া যায় না কেননা অপটিক্যাল ফাইবারে বা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফোটন বিক্ষিপ্ত এবং শোষিত হয়।
⚫ বিজ্ঞানপত্রিকা ডেস্ক