প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনঃ উদ্ভিদ কেন রোদে পোড়ে না

0
737

অধিকাংশ মানুষই উদ্ভিদ সংক্রান্ত একটি তথ্য সম্পর্কে অবগত। উদ্ভিদেরা সূর্যের আলো ব্যবহার করে নিজেদের খাদ্য তৈরি করে। প্রক্রিয়াটার নাম সালোকসংশ্লেষণ। স্কুল পড়ুয়া সকলেই এই তথ্য জেনে এসেছে। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বা আলোর উপস্থিতিতে খাদ্য তৈরি করে কথাটার মানে হচ্ছে উদ্ভিদেরা সূর্যের আলোর উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে সূর্যের আলোতে ক্ষতিকর অংশ আছে। ফর্সা ত্বকের অধিকারী কেউ যদি খালি গায়ে সূর্যের তাপে রোদ পোহায় তাহলে তার ত্বকে সূর্যে পুড়ে যাবার দাগ পড়ে যাবে।

শীতের দেশে রোদের উপস্থিতি কম থাকে। বছরের যে সময়টায় রোদ উঠে ঐ সময়ে ঐ এলাকার মানুষেরা অনেকটা উৎসব করে সমুদ্রের পাড়ে রোদ পোহাতে বা সূর্যস্নান করতে যায়। শীতের দেশের মানুষেরা সাধারণত ফর্সা হয়। এরা যদি সূর্যস্নান করে তাহলে দেখা যায় অল্পতেই এদের গা পুড়ে গেছে। ত্বক কিছুটা কালচে হয়ে গেছে। সূর্যের তাপে ত্বকের এমন অবস্থা হয়ে যাওয়াকে বলে সানবার্ন (sunburn)।

তবে সূর্যস্নানের সময় গায়ে সানস্ক্রিন মেখে নিলে সানবার্নের ঝুঁকি থাকে না। আমরা উদ্ভিদের যে প্রসঙ্গে ছিলাম- গাছের বেঁচে থাকার জন্য সূর্যের তাপ দরকার, এই ক্ষেত্রে সূর্য উপকারী। কিন্তু উপকারের পাশাপাশি সূর্যের রশ্মি ক্ষতিকরও। বিশেষ করে অতিবেগুনী রশ্মি (UV) অনেক ক্ষতিকর। মানুষকে তো সারাদিন সূর্যের আলোতে থাকতে হয় না, তাতেই গা পুড়ে যায়, অন্যদিকে গাছকে সারাদিনই সূর্যের আলোয় থাকতে হয়। তাতে ক্ষতির ঝুঁকিটাও বেড়ে যায়। কিন্তু ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কোনো এক প্রক্রিয়ার প্রভাবে গাছ সেই ঝুঁকি কাটিয়ে উঠতে পারে। তো কী সেই প্রক্রিয়া যা গাছকে অতিবেগুনী রশ্মিকে ছেঁকে রেখে দিয়ে দরকারি আলোকরশ্মিকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়?

Picture2

সানবার্নের নমুনা।
সানবার্নের নমুনা।

অতি সংক্ষেপে বললে বলা যায় গাছেরা নিজেরা নিজেদের সানস্ক্রিন তৈরি করে নেয়। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা গাছের এই কর্ম প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে আমাদেরকে সাহায্য করে।

আমরা ভালো করেই জানি অতিবেগুনী রশ্মিতে বেশি পরিমাণ সময় থাকলে তা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এর ফলে স্বল্পমেয়াদী ফলাফলও পাওয়া যেতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী ফলাফলও পাওয়া যেতে পারে। স্বল্প মেয়াদে রোদে পুড়লে সানবার্ন হতে পারে। তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণের বর্ণালীতে অতিবেগুনী রশ্মির বিস্তৃতিকে বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। UV রশ্মির বিস্তৃতিতে সবচেয়ে তীব্র অংশটি হচ্ছে UVB। এই অংশের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, কম্পাঙ্ক সবচেয়ে বেশি। UVB-কে বাংলায় আমরা বলতে পারি ‘তীব্র অতিবেগুনী রশ্মি’। এই তীব্র অতিবেগুনী রশ্মিই মূলত সানবার্নের জন্য দায়ী। বছরের পর বছর ধরে কেউ যদি UVB সম্পন্ন আলোতে পুড়ে বেড়ায় তাহলে তা স্কিন ক্যান্সারের জন্ম দিতে পারে।[1]

UV রশ্মির প্রকৃতি
UV রশ্মির প্রকৃতি

তবে মানুষ ভেদে এর হেরফের হয়। অনেক মানুষ আছে যারা অল্প রোদেই আক্রান্ত হয়ে যায় আবার অনেক মানুষ আছে যারা অধিক পরিমাণ অতিবেগুনী রশ্মিতেও স্বচ্ছন্দে টিকে থাকতে পারে। যেসব মানুষ অধিক পরিমাণ মেলানিন নামক এক ধরনের বর্ণকণিকা ধারণ করে তারা ক্ষতিকর রোদে অধিক পরিমাণ টিকে থাকতে পারে। যার গায়ে মেলানিন যত বেশি তার ত্বক তত কালো হয়। মেলানিন কম থাকলে ত্বক ফর্সা হয়।[2] খেয়াল করলে দেখা যাবে কালো ত্বকের মানুষেরা রোদের মাঝে ফর্সা ত্বকের মানুষের চেয়ে অধিকতর স্বচ্ছন্দে কাজ করতে পারে।

যারা অধিক পরিমাণ মেলানিন ধারণ করে তারা একদমই নিরাপদ। সূর্যের তাপে থাকুক আর না থাকুক তাদের কিছু হয় না। যারা এত অধিক পরিমাণ মেলানিন ধারণ করে না তাদের মাঝে কেউ কেউ আছে রোদ সহ্য করতে পারে বেশি, কেউ কেউ আছে সহ্যক্ষমতা মাঝারি আবার কেউ কেউ আছে একদমই সহ্য করতে পারে না। তবে মানুষের জন্য সুবিধা হচ্ছে মানুষ এই তাপ সহ্য করতে না পারলেও সমস্যা হয় না। খাদ্যের জন্য মানুষকে সরাসরি সূর্যের দ্বারস্থ হতে হয় না। পরোক্ষভাবে অন্য উপায়ে খাদ্য সংগ্রহ করে নেয়। খাদ্য সংগ্রহ বা জীবনের জন্য দরকারি কোনো কাজে বাইরে গেলেও সূর্যের আলোয় পুড়তে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। চাইলেই মস্তিষ্কের ক্ষমতা ব্যবহার করে আবরণ (পোশাক বা সানস্ক্রিন) বা ছায়া (ছাতা) ব্যবহার করে সূর্যকে এড়িয়ে চলতে পারে। কিন্তু গাছেদের বেলায় কী হবে? তাদের তো উন্নত মস্তিষ্ক নেই, তারা তো পোশাক পড়তে পারে না, তারা তো ছাতা ব্যবহার করতে জানে না। তাদের তো ক্ষতি হবার কথা ছিল। তা না হয়ে তারা বহাল তবীয়তে দাঁড়িয়ে আছে। তাহলে তাদের কি মানুষের মেলানিনের মতো এমন কোনো উপাদান আছে যা তাদেরকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে বা অপতিত রশ্মিকে সহ্য করে নিতে সাহায্য করে?

এই প্রশ্নটি নিয়ে গবেষকরা অনেক আগে থেকেই ভেবেছেন। বিশেষ করে বিজ্ঞানীরা যখন জানতে পারেন বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে পৃথিবীকে অদৃশ্যভাবে ঘিরে রাখা ওজোন স্তরের ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে এবং ক্ষয়ের মাত্রা বেড়ে রীতিমতো ছিদ্র হয়ে গেছে[3] তখন থেকেই উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা গাছ নিয়ে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। কারণ ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মিকে অনেকাংশে শোষণ করে নেয়, ফলে পৃথিবীর ভূমণ্ডলে জীবজগৎ নিরাপদে থাকে। এই স্তর যদি ছিদ্র হয়ে যায় বা ক্ষয়ে যায় কিংবা ধীরে ধীরে ছিদ্রের আকার বাড়তে থাকে তাহলে ভূপৃষ্ঠে অধিক হারে UVB অপতিত হবে। ফলে পৃথিবীর জীবজগৎ হুমকির মুখে পড়ে যাবে।

১৯৮০ ও ১৯৯০ সালের দিকে উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা দেখালেন অধিক মাত্রায় UVB রশ্মি অপতিত হলে তার তীব্রতায় গাছের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।[4] সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হলে পুরো খাদ্যচক্র বিঘ্নিত হবে। এতে করে আদতে মানুষেরাই অস্তিত্বের হুমকির মুখে পড়বে। উচ্চমাত্রার UVB ছাড়া সাধারণ UV রশ্মি বেশি দিন অপতিত হলেও তা ফসল উৎপাদনের হার কমিয়ে দেয়।

অতিরিক্ত UV রশ্মির উপস্থিতি ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে। ছবিঃ Shutterstock
অতিরিক্ত UV রশ্মির উপস্থিতি ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে। ছবিঃ Shutterstock

কিন্তু এই গবেষক দলই উদ্ভিদের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচন করেন। তারা দেখান উদ্ভিদেরা UVB এর বাজে প্রভাব মোকাবেলা করতে ভালোভাবেই সক্ষম। কিছু উদ্ভিজ্জাত রাসায়নিক পদার্থ তাদেরকে এই সুরক্ষা প্রদান করছে। এদের মাঝে প্রধানটি হচ্ছে ফেনলিক্স (phenolics)। এই যৌগগুলো উদ্ভিদের দেহে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে।[5] এই উপাদানটি UV রশ্মিকে খুব দৃঢ়ভাবে শোষণ করে নেয়। তবে বর্ণালীর সেই অংশকে শোষণ করে না যে অংশটি সালোকসংশ্লেষণের জন্য দরকারি। তো আর কী লাগে? ক্ষতিকর জিনিসটা আটকে যাচ্ছে, দরকারি জিনিসটা পার পেয়ে যাচ্ছে এর চেয়ে সুবিধা আর কী হতে পারে?

মানুষের বেলায় যেমন সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি সহ্য করার ক্ষমতা, তথা মেলানিনের পরিমাণ মানুষ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয় তেমনই গাছের বেলাতেও গাছ ভেদে ফেনলিকের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়। কোনো কোনো গাছে ফেনলিক নামের সানস্ক্রিনের পরিমাণ বেশি হয় কোনো কোনো গাছে কম। কোনো কোনো গাছ সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি বেশি পরিমাণ সহ্য করতে পারে কোনো কোনো গাছ কম। বিশেষ করে যে সকল গাছের ট্রপিক অঞ্চল বা উঁচু পর্বত অঞ্চলের গাছগুলোতে সবসময়ই ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষার উপাদান বেশি থাকে। অন্যসব গাছগুলো সবসময় এরকম উপাদানের আধিক্য থাকে না। এসব গাছেরা যখন অধিক পরিমাণ UVB রশ্মির মুখোমুখি হয় তখন প্রয়োজনের তাগিদে সুরক্ষার উপাদান তৈরি করে নেয়।

উদ্ভিদের সানস্ক্রিনের গল্প এখানেই শেষ হতে পারতো, কিন্তু তা কৌতূহলী মনকে অন্য আরেকটি প্রশ্নের দিকে ধাবিত করে। উদ্ভিদেরা যদি UV রশ্মির আনাগোনা দেখে সানস্ক্রিন তৈরি করতে পারে তাহলে কীভাবে তারা এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে? কীভাবেই বা তারা UVB রশ্মির উপস্থিতি শনাক্ত করে?

খুব বেশি দিন হয়নি, মাত্র এক দশক আগে উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন বিশেষ একটি উপায়ে একধরণের প্রোটিনের সাহায্যে উদ্ভিদেরা UVB রশ্মি শনাক্ত করে থাকে। প্রোটিনটি হচ্ছে UV resistance locus 8 বা সংক্ষেপে UVR8। যে সকল উদ্ভিদের মাঝে এই প্রোটিনের উপস্থিতি কম তারা প্রয়োজনের সময় যথেষ্ট পরিমাণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে না, ফলে দেখা যায় গ্রীষ্মের রোদে অনেক উদ্ভিদ রোদে পুড়ে শুকিয়ে মরে যায়।

Picture6
UVR8 প্রোটিন সর্বপ্রথম শনাক্ত করা হয় Arabidopsis thaliana উদ্ভিদে। ছবিঃ মার্ক টার্নার

UVR8 প্রোটিনকে নিয়ন্ত্রণ করছে কোন উপাদান বা কোন প্রক্রিয়া সে সম্পর্কে গবেষকরা এখনো আগ্রহের সাথে অনুসন্ধান করে যাচ্ছেন। আমরা এতটুকু জানি যে, UVR8 প্রোটিন তীব্র অতিবেগুনী রশ্মিকে শোষণ করে নেয়, এবং ঐ পরিস্থিতিতে UVR8 প্রোটিনটি উদ্ভিদের কোষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার তাগাদা জানায়। তীব্র অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতির বিপরীতে উদ্ভিদের আত্মরক্ষার জন্য এই অংশটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

এই দিকটি নিয়ে জেনেভা ইউনিভার্সিটিতে নতুন একটি গবেষণা হয়েছে। ঐ গবেষণা বলছে, উদ্ভিদে UVB রশ্মির উপস্থিতি শনাক্ত করা এবং ঐ রশ্মির প্রতি উপযুক্ত সাড়া প্রদান করা নির্ভর করে UVR8 প্রোটিনের সাথে COP1 নামের আরেকটি প্রোটিনের পারস্পরিক সম্পর্কের উপর।[6] Constitutively Photomorphogenic 1 কে সংক্ষেপে COP1 বলা হয়। এই প্রোটিন আবার অন্যান্য আরো বিশেষ অণুর সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। এদের তালিকায় আছে HY5, SPA এবং RUP। এরা উদ্ভিদের কোষে এমন সিগনাল প্রেরণ করে যা তীব্র অতিবেগুনী রশ্মি প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত সানস্ক্রিন তৈরি করতে সাহায্য করে। এখানে ফেনলিকস, UVR8, COP1 সহ অন্যান্য উপাদান একত্রে মিলে যায় এবং ‘একতাই বল’ নীতি মেনে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

অধিকতর সহনশীল শস্য

আমরা মনে হয় যথেষ্ট পরিমাণ সংক্ষেপিত ইংরেজি বর্ণমালা বা এভ্রিভিয়েশন দেখে ফেলেছি। এগুলো দেখতে বা পড়তে কিছুটা কঠিন হলেও এদের মাধ্যমে উদ্ভিদে যে সিগনাল সিস্টেম চালু আছে তা মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো হতে পারে ভবিষ্যৎ খাদ্য গবেষণার বিষয়বস্তু। আমরা এখন জানি উদ্ভিদেরা তীব্র অতিবেগুনী রশ্মিকে সিগনালের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে এমন কিছু রাসায়নিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যা উদ্ভিদ কোষকে অধিকতর শক্তিশালী করে তোলে। সাধারণ অতিবেগুনী রশ্মির জন্য যে সুরক্ষা সিস্টেম আছে তার থেকে এই সুরক্ষা অধিকতর শক্তিশালী। তুলনামূলকভাবে বেশি শক্তিশালী বলে মানুষ এই দিকটার প্রতি গুরুত্ব দিতে পারে এবং এই দিকটাকে নিজেদের কাজে লাগাতে পারে। এতে ইতিবাচক সম্ভাবনা আছে।

অতিবেগুনী রশ্মির উপস্থিতির ফলে উদ্ভিদে এমন কিছু জৈব রাসায়নিক পরিবর্তন সম্পন্ন হয় যা কীটপতঙ্গ ও রোগের আক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।[7] তীব্র অতিবেগুনী রশ্মি ফল, ফুল ও শাক-সবজিতে ভালো স্বাদ, গন্ধ ও রঙ প্রদান করে। তীব্র অতিবেগুনী রশ্মির উপস্থিতি উদ্ভিদে এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থকে বাড়িয়ে দেয় যা মানুষের খাদ্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধারণা করা হয়।[8]

UVR রশ্মির উপস্থিতি ফল, ফুল ও শাক-সবজিতে ভালো স্বাদ, গন্ধ ও রঙ প্রদান করে। ছবিঃ todayifoundout.com
UVR রশ্মির উপস্থিতি ফল, ফুল ও শাক-সবজিতে ভালো স্বাদ, গন্ধ ও রঙ প্রদান করে। ছবিঃ todayifoundout.com

নতুন গবেষণা আমাদেরকে এই বার্তা প্রদান করছে যে তীব্র অতিবেগুনী রশ্মিকে শুধু আমাদের জন্য ক্ষতিকর বলে ভাবা উচিৎ নয়। এর মাধ্যমে আমরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকারও পেতে পারি। একে সম্ভাবনা হিসেবে দেখতে পারি। উদ্ভিদের উপর UVB রশ্মি অপতিত হলে তা যে সাড়া প্রদান করবে তা হবে প্রকৃতির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডেরই একটি অংশ। এই সাড়া দেয়া সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা যত বেশি গবেষণা করবো ততই এদের অজানা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানবো। এদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যতই জানব ততই টেকসই ও শক্তিশালী শস্য উৎপাদন করতে পারবো। শস্য যত টেকসই হবে এটি ততই কীটপতঙ্গরোধী ও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাধারী হবে। যার সবই আমাদের জন্য দরকারি।

উদ্ভিদের কেন সানবার্ন হয় না এ নিয়ে প্রশ্ন করে এ থেকে অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে। মূলত বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্যই এরকম, ছোটখাটো কোনো একটা মামুলী বিষয় বা তুচ্ছ জিজ্ঞাসা থেকে এমন কিছু বেরিয়ে আসে যা খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা দেয় এবং মাঝে মাঝে যুগান্তকারীও হয়ে যায়।

[লেখাটি দ্য কনভারসেশন ডট কম-এ প্রকাশিত নিগেল পল এর Why don’t plants get sunburn এর ভাবানুবাদ। লেখক নিগেল পল ল্যাংকাস্টার ইউনিভার্সিটির প্ল্যান্ট সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক।]

[1] Sun and UV facts and evidence, Cancer Research UK,  http://cancerresearchuk.org/about-cancer/causes-of-cancer/sun-uv-and-cancer/sun-facts-and-evidence#sun_facts0

[2] Definition of Melanin, http://medicinenet.com/script/main/art.asp?articlekey=4340

[3] https://theconversation.com/shrinking-hole-in-the-ozone-layer-shows-what-collective-action-can-achieve-62007

[4] http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/000527289090156X

[5] http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S098194281400357X

[6] http://www.pnas.org/cgi/doi/10.1073/pnas.1607074113

[7] http://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1111/j.1399-3054.2011.01553.x/

[8] http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0168945208001234

-সিরাজাম মুনির শ্রাবণ
সহ-সম্পাদক, বিজ্ঞান ব্লগ

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.