লাল গ্রহ মঙ্গলের উদ্দেশ্যে একই সাথে পারসেভিয়ারেন্স ও ইনজেনুইটি নামের দুটি যান প্রেরণ করেছে নাসা। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ভোর ৭.৫০ এ কেপ ক্যানাভেরাল এয়ার ফোর্স স্টেশন হতে এগুলোকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। সব ঠিক থাকলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ এগুলো মঙ্গলে পৌঁছাবে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের প্রতীক এই দুটি যান মঙ্গলে পৌঁছে গ্রহটির আরো অনেক রহস্যের উন্মোচন করবে।
পারসেভিয়ারেন্স মঙ্গলে নাসার পাঠানো পঞ্চম যান এবং সবচেয়ে উচ্চপ্রযুক্তির। এটি ছয় চাকা বিশিষ্ট একটি বাহন যাতে মঙ্গলের ভূমির প্রকৃতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রয়েছে। এটি মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটারের ভূমি পর্যবেক্ষণ করবে যাতে কয়েকশ’ কোটি বছর পূর্বে পানি প্রবাহিত হওয়ার স্পষ্ট আলামত রয়েছে। এর যন্ত্রপাতির তালিকায় রয়েছে অদ্যাবধি পাঠানো সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্যামেরা এবং SHERLOC নামের একটি যন্ত্র, যা মঙ্গলের মাটিতে জৈব বস্তু এমনটি প্রাণের অস্তিত্ব সনাক্ত করতে সক্ষম। তাছাড়া এতে মাইক্রোফোন সংযুক্ত করায় এই প্রথমবারের মত মঙ্গলের পৃষ্ঠের শব্দও শোনা যাবে।
অপরদিকে, ইনজেনুইটি নামের হেলিকপ্টারটি আকারে পারসেভিয়ারেন্সের তুলনায় অনেক ছোট। এর পাখার বিস্তার ৪ ফুট। এবং ৩০ দিনের একটি অভিযানে এটি পাঁচবার উড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রথমবারের মতো পৃথিবীর বাইরের কোনো পৃষ্ঠে একটি উড়ুক্কুযান পাঠানো হয়েছে। এটি পারসেভিয়ারেন্সকে আগ্রহোদ্দীপক লক্ষ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
কোভিড-১৯ এর প্রকোপের কারণে উৎক্ষেপণ এই বছর না হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও কঠোর পরিশ্রম এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে ব্যক্তিগত নিরপত্তা এবং অন্যান্য সবকিছু যথাযথভাবে নিস্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া মঙ্গলে যখন-তখন নভোযান প্রেরণ করা যায় না, তার জন্য বছরের সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে। এই সময় হাতছাড়া হয়ে গেলে আবার বছরখানেক অপেক্ষা করতে হয়। তাই নির্দিষ্ট সময়টিকে কাজে লাগাতে অন্যান্য দেশেরও তৎপরতা দেখা গেছে। যেমন: সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীন এই সময়ে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে তাদের কক্ষপথ পরিভ্রামক হোপ (Hope) এবং তিয়ানওয়েন-১ (Tianwen-1) প্রেরণ করেছে।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক