সম্ভাব্য মহামারী এড়ানোর জন্য এ্যাপোলো-১১ এবং এর পরবর্তী প্রতিটি অভিযানের নভোচারীদের পৃথিবীতে ফেরার পরপরই ২১ দিন করে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছিলো।
এ্যাপোলো-১১ এর অভিযানের পূর্বে নাসা নিশ্চিত হতে পারেনি চাঁদে অবতরণ করার পর নভোচারীরা চাঁদের ধুলো-বালি হতে কোনো অচেনা জীবাণু বয়ে নিয়ে আসবেন কিনা যা পৃথিবীতে মহামারি সৃষ্টি করবে কিংবা পৃথিবীর জীবজগৎকে হুমকীর মুখে ফেলবে। বলাই বাহুল্য যে, যদি চাঁদ হতে কোনো জীবাণু এসে পৃথিবীর জীবজগতে হুমকী সৃষ্টি করে তাহলে সম্পূর্ণ চন্দ্রাভিযানের কৃতিত্ত্ব ধুলিস্যাৎ হয়ে পড়বে। সেই আশঙ্কা থেকেই চাঁদের শিলা জীবাণুমুক্ত নিশ্চিত হওয়ার জন্য নাসা নভোচারীদের জন্য তিন-সপ্তাহের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করে।
নাসার বায়োমেডিক্যাল এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধাণ জুডিথ হায়েস বলেন, “শুরুতে নাসা ভেবেছিলো চাঁদ থেকে আনা নমুনা এবং মালপত্র ঘাঁটাঘাটি করার জন্য একটি পরিচ্ছন্ন বায়ুরোধী ঘরই যথেষ্ট। কিন্তু আরেকটু সময় নিয়ে তাঁরা মনে করেন ‘আমরা চাঁদে যাওয়ার মত একটা কাজ আগে কখনো করিনি। তাই নিশ্চিত হতে পারছি না, কোনো ঝুঁকি থাকলেও থাকতে পারে।'” এই ভেবে পরবর্তীতে নভোচারীদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়।
আশঙ্কা খুব সামান্য থাকলেও কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয় ‘একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’ এই বোধ থেকে। এ্যাপোলো-১১’র নভোচারীরা ফিরে আসার আগের দিন নাসার কর্মীরা হিউস্টনে এর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। এবং ঝুঁকি খুব সামান্য হলেও সবরকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখা হয়।
শুধু ফিরে আসার পরই নয়, বরং চন্দ্রাভিযানের পূর্বেও নভোচারীদের তিন সপ্তাহর কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়েছিলো যেন নাসা নভোচারীদের সঙ্গে আসা কোনো বস্তুকে বহির্জাগতিক বা চাঁদ হতে আসা বলে সনাক্ত করতে পারে। কিন্তু এই অভিযান পূর্ব কোয়ারেন্টিন ভেস্তে যেতে বসেছিল তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নভোচারীদের উৎক্ষেপণের পূর্বে এক সঙ্গে রাতের খাবার খেতে চেয়েছিলেন বলে। পরে প্রেসিডেন্টকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বিরত রাখা হয়।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক