২০০৯ সালে একটি রাসায়নিক গবেষনাগারে বেশ কিছু রসায়নবিদ নীল রংএর নতুন একটি বর্ণকণিকা দেখে থমকে গেলেন যেটি কম-বেশী দৈবক্রমেই আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রায় নিঁখুত নীল রংএর এই বর্ণকণিকাটি এখন শিল্পীর তুলির জন্য উৎপাদন করা হচ্ছে।
ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইড এর সাথে অন্যকিছু বস্তুকে ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে নীল রংএর আলোকচ্ছটা বিশিষ্ট এই বর্ণকণিকা তৈরি হয়। যদিও কোনো নতুন বস্তু নয় বরং ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইডের কিছু চৌম্বকধর্ম পর্যবেক্ষণের জন্যই এই পরীক্ষাটি করা হয়েছিলো, কিন্তু অনিচ্ছাকৃতভাবে নতুন এই বস্তুটি তৈরি হয়ে যায় যার নাম দেওয়া হয়েছে YInMn blue। এই আবিষ্কারের বিষয়টি সম্প্রতি ACS Inorganic Chemistry জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্সের প্রফেসর মাস সুব্রামানিয়ান বলেন, “মূলতঃ এটি একটি দৈব আবিষ্কার। আমাদের কাজে নতুন কোনো বর্ণকণিকা খোঁজার কোনো বিষয় ছিলো না। তারপর একটি একজন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী উচ্চ তাপমাত্রার ফার্নেস হতে একটি স্যাম্পল বের করে আনে। আমি তখন পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম; এটার রং ছিলো নীল, খুবই সুন্দর নীল। তাৎক্ষণিকভাবে আমি উপলব্ধি করলাম দারুন কিছু একটা ঘটে গেছে।”
তাহলে এই নীল রংএর বিশেষত্ব আসলে কী?
এই বর্ণকণিকাটি অন্যান্য বস্তুর তুলনায় তাপীয়ভাবে বা অম্লীয় পরিস্থিতিতে অনেক বেশী স্থিতিশীল। একই সাথে প্রুসিয়ান ব্লু বা কোবাল ব্লু এর মতো এটি সায়নাইড উৎপন্ন করে না এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারীও নয়। শুধু তাই নয়, এর অতি উচ্চ প্রতিফলন ধর্মের কারণে এই রংএ ব্যবহার করে অবলাল তরঙ্গের আলো প্রতিফলন করার মাধ্যমে ভবন ইত্যাদিকে শীতল রাখবে।
সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারে সুব্রামানিয়ান জানান উজ্জল এবং ক্ষয়রোধী ধর্মের কারণে এই বর্ণকণিকাটি শিল্পীদের খুব পছন্দ হয়েছে। রং উৎপাদক কোম্পানী Shepherd Color Company একটি পেটেন্ট লাইসেন্স করেছে এবং এই কণিকার নমুনা বিক্রি করছে। সুব্রামানিয়অম আরো বলেন, “আমাদের কণিকাটি শিল্প পুনরুদ্ধারে খুবই উপকারী কারণ এটি আল্ট্রামেরিনের মতোই একই রংএর এবং অরো অনেক টেকসই।” [IFLScience থেকে।]