সংকেতের বিবর্ণ হয়ে মিলিয়ে যাওয়া এবং গুড়গুড় ফাটা শব্দের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ১৫০ কোটি কিলোমিটার দূরের নাসার পাঠানো ক্যাসিনি মহাকাশযানের কর্মকান্ড।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ীই ক্যাসিনিকে ১৫ সেপ্টেম্বর শনি গ্রহের পৃষ্ঠে আছড়ে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করা হয়।
বাস আকারের ক্যাসিনি মহাশূন্যযান শনির বায়ুমন্ডলে পৌঁছে নজিরবিহীনভাবে এর বায়ুমন্ডলের নানাবিধ তথ্য উপাত্ত পৃথিবীতে প্রেরণ করতে থাকবে। তবে পৃথিবীর সাথে এর সংযোগ খুব দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। ঘন্টায় ৭৮,০০০ মাইল বেগে গতিশীল এই মহাশূন্য প্রোবের থ্রাস্টারগুলো ত্বরণ ঠেকিয়ে রাখার মতো যথেষ্ট প্রবল নয়।
আনুমানিক রাত ৯ টা ৫৫ তে ক্যাসিনি দোদুল্যমান হতে শুরু করে পৃথিবীর সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যদিও কেউই এর মৃত্যু পর্যবেক্ষণ করেনি কিংবা কোনো টেলিস্কোপের মাধ্যমে ছবি তোলা যায় নি তবুও নাসা হিসেব অনুযায়ী জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে পাঠানো এর ‘বিশ্বস্ত অভিযাত্রী’ প্রথমে শত ডিগ্রি তারপর সহস্র ডিগ্রিতে উত্তপ্ত হয়ে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, তারপর একটি ছোট প্লুটোনিয়ামের আবরণে আবদ্ধ উল্কাপিন্ডে পরিণত হয় এবং শনির মেঘের মাঝে হারিয়ে যায়।
মৃত্যুর আগে এর পাঠানো সর্বশেষ সংকেত আলোর গতিতে প্রেরিত হয় এবং ১ ঘন্টা ২৩ মিনিটের কিছুটা বেশী সময় নিয়ে পৃথিবীতে পৌঁছায়।
অস্ট্রেলিয়ায় স্থাপিত বিশালাকার রেডিও ডিশের মাধ্যমে এই সংকেত গ্রহণ করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরিতে প্রেরণ করা হয়। এই সময় কন্ট্রোল রুমে নিরবতা নেসে আসে। ২০ বছরের বন্ধন ছিন্ন হওয়ায় ক্যাসিনি প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকতা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যগণ হৃদয় ভাঙ্গার ব্যাথা অনুভব করেন।
ক্যাসিনির মৃত্যুর একেবারে যথাযথ সময়টি নাসা জানাতে পারে নি তবে অনুমান করছে শেষ সংকেতটি পাঠানোর কয়েক সেকেন্ড হতে মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। [সায়েন্স এ্যালার্ট অবলম্বনে]
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক