মঙ্গলের প্রথম বাড়িটি নির্মিত হতে পারে গ্রহটির নিজের ধূলোবালি থেকে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টিংএর মাধ্যমে

0
253

নতুন একটি পদ্ধতি মঙ্গলের প্রথম বাসিন্দাদের দৃঢ় রাবার সদৃশ বস্তু হতে থ্রিডি প্রিন্টিংএর মাধ্যমে অস্থায়ী বাসগৃহ হতে শুরু করে যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু তৈরির সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। আর এই কাজে ব্যবহার করা হবে মঙ্গলপৃষ্ঠের নিজস্ব ধূলোবালি।

এই পদ্ধতিতে মঙ্গলের প্রারম্ভিক বাসিন্দাগণ পৃথিবী থেকে ভার বহন করে প্রয়োজনীয় সবকিছু টেনি নিয়ে না গিয়ে মঙ্গলে জীবন ধারণের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজেরাই বানিয়ে নিতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্তু বিজ্ঞানী রামিল শাহ এক বিবৃতিতে বলেন, “চাঁদ কিংবা অন্যান্য গ্রহ যেখানে সম্পদ অতি সীমাবদ্ধ, সেখানে মানুষকে সেই গ্রহে প্রাপ্ত জিনিসপত্র ব্যবহার করেই টিকে থাকার বন্দোবস্ত করতে হবে। আমাদের ত্রিমাত্রিং প্রিন্টার সত্যিই পৃথিবীর বাইরে ভিনগ্রহে বসবাসের প্রয়োজনীয় সব উপকরণ বা সরঞ্জাম তৈরি করে দিতে পারবে।”

অতীতে ব্যবহৃত যে কোনো মহাকাশযানের চেয়ে মানুষ্যবাহী বাহনে জ্বালানী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রবাদি পৃথিবী হতে পরিবহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিরাটাকায় হতে হবে। কিন্তু এই ব্যাবস্থা মঙ্গলে মানুষের টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট হবে না। এখন পর্যন্ত আঁটা প্রায় সবগুলো পরিকল্পনাতেই এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যাতে মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের জন্য মঙ্গলে প্রাপ্ত সম্পদ ব্যাবহারোপযোগী করে নিতে হয়।

এই লক্ষ্য পূরণের জন্য এক ধাপ অগ্রগতি হলো এমন একটি হাতিয়ার তৈরি করা যা স্থানীয় উৎস হতে কাঁচামাল নিয়ে দ্রুত যেকোন প্রয়োজনীয় হাতিয়ার বা বস্তু তৈরি করে দিতে পারবে। এই লক্ষ্যের কথা মাথায় রেখে শাহ এবং তাঁর সহযোগীবৃন্দ চাঁদ বা মঙ্গলের সবচেয়ে সহজলভ্য বস্তু ধূলোবালি থেকে কী কী জিনিস তৈরি করা যেতে পারে তা গবেষণা করে দেখেছেন। গবেষকগণ চাঁদ এবং মঙ্গলের সিমুলেটেড ধূলোবালির অনুরূপ কৃত্রিম ধূলোবালি তৈরি করে নিয়ে তা দিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেছেন। এই কৃত্রিম ধূলো অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, সিলিকন ডাইঅক্সাইড, আয়রণ অক্সাইড এবং অন্যান্য যৌগ নিয়ে গঠিত।

গবেষকদল একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন যা কৃত্রিম ধূলো, দ্রাবক এবং একটি জৈব পলিমারের মিশ্রন তৈরি করে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টারে ব্যবহারের উপযোগী কালি তৈরি করে। এই কালি ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তুু তৈরি করা হয়। ফলস্বরূপ এমন হাতিয়ারগুলো পাওয়া যায় যেগুলো অত্যন্ত দৃঢ় এবং নমনীয় এবং এগুলো গড়িয়া যাওয়া, কাটা এবং ভাঁজকরার উপযোগী হয়। এই হাতিয়ারগুলোতে ৯০ শতাংশই কৃত্রিমধূলো।

শাহ এবং তাঁর সহযোগীরা এখন ধূলোর সাথে ব্যবহৃত রবারের মতো পলিমারটিকে তাপের মাধ্যমে সিরামিক জাতীয় পদার্থে রূপান্তরের চেষ্টা করছেন যেই উৎপন্ন বস্তুগুলো আরো টেকসই এবং ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে।

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.