পরমাণুর গহীন নিসর্গে | ৫: আইসোটোপ | ৫.৪: স্থিতিশীল নিউক্লিয়াসের বিভিন্নতা

0
760

অধ্যায়-৫: আইসোটোপ
অনুচ্ছেদ-৪: স্থিতিশীল নিউক্লীয় প্রকরণসমূহ
[বইয়ের সূচীপত্র তথা প্রকাশিত সবগুলো আর্টিকেলের জন্য এখানে দেখুন]

সডির আইসটোপ আবিষ্কারের সাথে শুধুমাত্র তেজষ্ক্রিয় পরমাণুগুলোই জড়িত ছিল, তবে তার আবিষ্কার বেশ দ্রুতই তেজষ্ক্রিয়তাবিহীন পরমাণুর উপস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি করল। ১৯০৫ সালেই আমেরিকান রসায়নবিদ বারট্রাম বোরডেন বোল্টউড (Bertram Bordon Boltwood, ১৮৭০-১৯২৭) লক্ষ করলেন, ইউরেনিয়ামের আকরিকের সাথে সর্বদাই লেড পাওয়া যায় এবং চিন্তা করলেন, লেড হয়তো বা তেজষ্ক্রিয় ধারায় একেবারে চূড়ান্ত উৎপন্ন দ্রব্য নয়। অনুসন্ধান চালিয়ে এর সত্যতা প্রমাণিত হলো। এর মানে হলো লেড যদিও একটি তেজষ্ক্রিয়তাবিহীন মৌল, তথাপি এটি তেজষ্ক্রিয়তার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিল।

তেজষ্ক্রিয় পরমাণুর পারমাণবিক ভর পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে আলফা কণিকা নিঃসরণ। বিটা নিঃসরণ পারমাণবিক ভরের উপর তাৎপর্যহীন প্রভাব ফেলে এবং গামা রে আদৌ কোনো প্রভাব ফেলে না। যখনই একটি আলফা কণিকা নিঃসৃত হয় তখনই পারমাণবিক ভর চার করে হ্রাস পায়। এর অর্থ হলো, যদি প্রাথমিক তেজষ্ক্রিয় পরমাণুটির পারমাণবিক ভর সুষমভাবে চার দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে তার তেজষ্ক্রিয়তার ধারায় মধ্যবর্তী উৎপন্ন দ্রব্যগুলোর পারমাণবিক ভরও সুষমভাবে চার দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমনটি হতে হবে লেডকেও। একারণেই, থোরিয়াম-২৩২, যেটি থোরিয়ামের একমাত্র দীর্ঘায়ুবিশিষ্ট আইসোটোপ, এর পারমাণবিক ভর ৪ দ্বারা বিভাজ্য (২৩২ = ৪ X ৫৮)। ভাঙনের অগ্রগামিতার সাথে এটি মোট ছয়টি আলফা কণিকা হারায়, যাদের মোট পারমাণবিক ভর ২৪। ফলে শেষ পর্যন্ত যে নিউক্লিয়াসটি অবশিষ্ট থাকে তার পারমাণবিক ভর হয় ২০৮। এই ছয়টি আলফা কণিকার নিঃসরণ থোরিয়ামের ১২টি ধনাত্মক চার্জ হারনোরও কারণ। তবে এই সময় চারটি বিটা কণিকাও নিঃসৃত হয়। ফলে চারটি ধনাত্মক চার্জ পুণঃস্থাপন করে ফেলে। সার্বিকভাবে মোট হারানো ধনাত্মক চার্জের পরিমাণ তাই, ৮।

থোরিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা ৯০। আটটি ধনাত্মক চার্জ হারালে যেই পরমাণুটি উৎপন্ন হবে তার পারমাণবিক সংখ্যা হবে ৮২ এবং এটি হচ্ছে লেড। হারানো পারমাণবিক ভর ২৪ বিবেচনা করুন, তাহলে আপনি থোরিয়াম-২৩২ এর বিয়োজনে চূড়ান্ত উৎপন্ন দ্রব্য পাবেন লেড-২০৮। এটা তেজষ্ক্রিয় নয় বরং স্থিতিশীল এটা পৃথিবীতে যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে, সবসময় ছিল এবং সবসময় থাকবে।
এখন পর্যন্ত বিষয়টি চমৎকার, কিন্তু ইউরেনিয়াম-২৩৮ এর কথা বিবেচনা করুন। এর পারমাণবিক ভরকে যখন চার দ্বারা ভাগ করা হয় তখন একটি ভাগশেষ থাকে ২ (২৩৮=৫৯ X ৪ + ২)। যদি এটি আলফা কণিকা নিঃসরণের মাধ্যমে পারমাণবিক ভর হারায়, তাহলে এর অন্তবর্তী সবগুলো বস্তু এবং চূড়ান্ত উৎপন্ন বস্তুটির পারমাণবিক ভরকেও ৪ দিয়ে ভাগ দিলে ভাগশেষ হিসেবে ২ পাওয়া যাবে। ইউরেনিয়ামের একটি পরমাণুর বিয়োজনে মোট ৮টি আলফা কণিকা এবং ৬ টি বিটা কণিকার নির্গমণ শেষে তাই যেই পরমাণুটি পাওয়া যাবে সেটি হবে লেড-২০৬।

সব শেষে, ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর পারমাণবিক ভরকে ৪ দিয়ে ভাগ করুন। ভাগশেষ থাকে ৩ (২৩৫ = ৫৮ দ্ধ ৪ + ৩), যা এর প্রত্যেক মধ্যবর্তী বস্তু এবং চুড়ান্ত বস্তুর ক্ষেত্রেই দেখা যায়। প্রতিটি ইউরেনিয়াম-২৩৫ পরমাণু ৭ টি আলফা কণিকা এবং চারটি বিটা কণিকা নির্গত করে, এবং শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায় লেড-২০৭। এখানে চতুর্থ একটি সিরিজের উল্লেখ করা যায়, যে ক্ষেত্রে পারমাণবিক ভরগুলোকে চার দিয়ে ভাগ করলে সবক্ষেত্রে ১ ভাগশেষ পাওয়া যায়। তবে এটি নিয়ে আলোচনার সময় এখনো আসেনি।

তাহলে শেষ পর্যন্ত আমরা তিন ধরনের লেড আইসোটোপ নিয়ে শেষ করলাম লেড-২০৬, লেড-২০৭ এবং লেড-২০৮। প্রতিটিই স্থিতিশীল এবং লেডের স্বাভাবিক ধর্ম প্রদর্শন করে। তাহলে এগুলোর মধ্যে কোনোটি যদি সত্যিই থেকে থাকে, তাহলে ঠিক কোনটি তেজষ্ক্রিয়তার প্রভাব বর্জিত হয়ে প্রকৃতিতে বিদ্যমান থাকবে?

মনে করি, আমরা লেডের পারমাণবিক ভর বিবেচনা করছি। প্রকৃতিতে যেসব শিলা সন্দেহাতীত ভাবেই তেজষ্ক্রিয়তা দেখায়, সেগুলো হতে প্রাপ্ত লেডের পারমাণবিক ভর ২০৭.১৯। যদি বিভিন্ন স্থিতিশীল আইসোটোপ সর্বদাই একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে বিদ্যমান থাকে, তাহলে এই সংখ্যাটি কি পারমাণবিক ভরের একটি গড় মান হতে পারে? যেহেতু বিভিন্ন ভূ-তাত্ত্বিক কর্মকান্ডে একটি বস্তুর রাসয়নিক ধর্ম বিবেচনা করে কাজ করা হয়, তাই এধরনের কর্মকান্ডের মাধ্যমে একই মৌলের বিভিন্ন আইসোটোপগুলোকে পৃথক করা যায় না।

চলুন এই প্রস্তাবনাটি পরীক্ষা করে দেখা যাক। ধরুন, আপনার ইউরেনিয়ামে সমৃদ্ধ একখন্ড শিলা আছে। প্রাথমিকভাবে উপস্থিত লেডের পাশাপাশি আপনি ধীরে ধীরে এবং সমান হারে বর্ধিত লেড-২০৬ এবং লেড-২০৭ পেতে থাকবেন, যা শিলাখন্ডটিতে অবস্থিত লেডের পারমাণবিক ভরের পরিমাণকে হ্রাস করতে থাকবে। থোরিয়াম সমৃদ্ধ একখন্ড শিলাতে ধীরে ধীরে এবং সুষমভাবে লেড-২০৮ যুক্ত হতে থাকবে এবং একটি তেজষ্ক্রিয়তাবিহীন লেডের পারমাণবিক ভরের চেয়ে ভর বেশি হবে।

১৯১৪ সালে রিচার্ডস বিভিন্ন তেজষ্ক্রিয় আকরিক হতে প্রাপ্ত লেডের পারমাণবিক ভর নির্ণয় করলেন। তিনি দেখলেন যে, থোরিয়ামের খনিজ পদার্থগুলোতে লেডের পারমাণবিক ভর ২০৭.৯ পর্যন্ত উচ্চ হতে পারে, আর ইউরেনিয়ামের খনিজ হতে প্রাপ্ত লেডের ভর ২০৬.০১ এর মত নিন্ম হতে পারে।

একই বছরে, যখন পর্যায় সারণির ভিত্তি হিসেবে পারমাণবিক ভরকে পারমাণবিক সংখ্যা হিসেবে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছিল তখন হঠাৎ করে বুঝে ফেলা গিয়েছিল, পারমাণবিক ভর মোটেও মৌলিক কিছু নয়। এগুলো কেবল বিভিন্ন আইসোটোপের ভরের (ভর সংখ্যা) গড় মান, এবং এরা বরং এককভাবেই আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু, অবশ্যই লেডের আইসোটোপগুলো তেজষ্ক্রিয় বিকিরণের মাধ্যমে তৈরি হয়। হয়তোবা এটি একটি বিশেষ ক্ষেত্র। যেসব মৌলগুলোর সাথে তেজষ্ক্রিয়তার কোনো সম্পর্ক নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে বিষয়টি কী? এই সম্বন্ধে আগে থেকেই কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। লেডের আইসোটোপের বিষয়ে রিচার্ডসের আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল।

মনে করি, আমরা ধনাত্মক রশ্মি বিবেচনা করছি, যেগুলো আসলে ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট পরমাণু যাতে স্বাভাবিক সংখ্যার চেয়ে কম ইলেক্ট্রন থাকে। মাঝে মাঝে ধনাত্মক রশ্মিতে কোনো ইলেক্ট্রন থাকে না, শুধুমাত্র উন্মুক্ত নিউক্লিয়াস দিয়ে গঠিত হয়। যদি এই ধনাত্মক রশ্মিকে তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রে স্থাপন করা হয়, তাহলে তাহলে তাদের গমনপথ স্বাভাবিক সরলরৈখিক অবস্থা হতে বেঁকে যায়। এই বক্রতার মাত্রা এদের কণার চার্জের পরিমাণ এবং ভর উভয়ের উপরই নির্ভর করে। আমরা যদি এমন কোন মৌল বিবেচনা করি, যাদের প্রত্যেকটি পরমাণু হতে একই পরিমাণ ইলেক্ট্রন সরানো হয়েছে, তাহলে প্রত্যেকের একই পরিমাণ ধনাত্মক চার্জ থাকবে। তাহলে আমরা যদি রশ্মির গমন পথের বক্রতার মধ্যে কোনো রকমের বিচ্যুতি লক্ষ্য করি তার মানে হলো এতে বিভিন্ন ভরের কণা বিদ্যমান আছে। যে পার্থক্যটি হলো তাদের পারমাণবিক ভরে।

মনে করি, একটি টিউবে নিয়ন গ্যাস আছে, যার পরমাণুগুলোর প্রত্যেকটি সমান ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট। যদি এর প্রতিটি পরমাণু একই পারমাণবিক ওজন বিশিষ্ট হয় তারা গমন পথে একই পরিমাণ বক্রতা প্রদর্শন  করবে। যদি গতিময় কণাগুলোর গমন পথে একটি আলোকসংবেদী পর্দা রাখা হয় তাহলে তারা পর্দার একই স্থানে আঘাত করবে। এর ফলে পর্দায় একটি ক্ষুদ্র পরিসরে ঝাপসা বিন্দু তৈরি হবে।

বিভিন্ন ভরের আইসোটোপগুলো চৌম্বকক্ষেত্রের প্রভাবে গতিপথে ভিন্ন ধরনের বক্রতা তৈরি করবে।
বিভিন্ন ভরের আইসোটোপগুলো চৌম্বকক্ষেত্রের প্রভাবে গতিপথে ভিন্ন ধরনের বক্রতা তৈরি করবে।

থমসন ১৯১২ সালে এই পরীক্ষাটি করার চেষ্টা করলেন এবং দেখলেন নিয়নের আয়নগুলো প্রত্যাশা অনুযায়ী আলোকসংবেদী পর্দাটির একটি নির্দিষ্ট স্থানে ঝাপসা বিন্দু তৈরি করছে। তবে এই বিন্দুটির কাছেই দ্বিতীয় আরেকটি স্থানে অপেক্ষাকৃত ঝাপসা আরেকটি বিন্দুর উপস্থিতিও পাওয়া গেল। দ্বিতীয় ঝাপসা বিন্দুটির অবস্থানে আঘাত করতে হলে আঘাতকৃত কণাগুলোর পারমাণবিক ওজন হতে হয় ২২। এধরনের পারমাণবিক ওজন ছিল অপ্রত্যাশিত। তবে থমসন প্রস্তাব করলেন, যদি নিয়নের প্রতি দশটি পরমাণুর নয়টির ভরসংখ্যা হয় ২০ এবং একটির হয় ২২ তাহলে এই দুটি সংখ্যার ওজনকৃত গড়মান পাওয়া যাবে ২০.২, যা পরিমাপের মাধ্যমে পাওয়া পৃথিবীতে উৎপন্ন প্রাকৃতিক নিয়নের পারমাণবিক ওজনের কাছাকাছি। অন্যভাবে বললে, নিয়ন, যার সাথে তেজষ্ক্রিয়তার কোনো সম্পর্ক নেই, তাই দুই ধরনের আইসোটোপের সমন্বয়ে তৈরি হতে পারে: নিয়ন-২০ এবং নিয়ন-২২। এই সম্ভাবনা আকস্মিকভাবেই নিউক্লিয়াসের গঠন সম্বন্ধে একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত করল।

১৮১৫ সালে, পারমাণবিক তত্ত্বের শৈশবে, ব্রিটিশ রসায়নবিদ উইলিয়াম প্রাউট (Willium Prout, ১৭৮৫-১৮৫০) প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, (বেনামে, কারণ এটি তাঁর জন্য এতোই অভিনব ছিল যে, তিনি এর সাথে নিজের নাম যুক্ত করতে সাহস পান নি) প্রতিটি পরমাণু হাইড্রোজেন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। পারমাণবিক ওজনসমূহ সেই সময় মাত্র নির্ধারণ করা শুরু হয়েছিল এবং পূর্ণ সংখ্যায় পাওয়া যাচ্ছিল। তার মানে, হাইড্রোজেন হচ্ছে ১, কার্বন হচ্ছে ১২, অক্সিজেন হচ্ছে ১৬, সালফার ৩২, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রাউট প্রস্তাব করলেন, কার্বন পরমাণু ১২ টি হাইড্রোজেন পরমাণুর নিবিড় সংযোজনে গঠিত, অক্সিজেন পরমাণুটি ১৬ টি হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে, সালফার পরমাণু ৩২ টি হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত, ইত্যাদি ইত্যাদি।

এই প্রস্তাবনাকে যখন প্রাউটের প্রকল্প নামে ডাকা শুরু হলো তখন রচয়িতার নাম প্রকাশ হয়ে পড়ল। তবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, কেননা যত বেশি পারমাণবিক ওজন আরো যথার্থতার সাথে নির্ণয় হতে লাগল, এটি বোঝা যেতে লাগল যে, তারা কোনোভাবেই পূর্ণ সংখ্যা নয়, এমনকি পূর্ণসংখ্যার কাছাকাছিও নয়। উদাহরণস্বরূপ; ক্লোরিনের জন্য পাওয়া গেল ৩৫.৪৫৬, কপারের (তামা) জন্য পাওয়া গেল ৬৩.৫৪, আয়রনের  (লোহা) জন্য পাওয়া গেল ৫৫.৮৫; ম্যাগনেসিয়ামের জন্য ২৪.৩১, মার্কারির (পারদ)  জন্য ২০০.৫৯; ইত্যাদি।

প্রাউটের প্রকল্প যদি সত্য হতো তাহলে পরমাণু তত্ত্ব আরো চমৎকার হতো; অর্থাৎ সরল এবং পরিচ্ছন্ন হতো। তবে এক শতাব্দী ধরে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ এর বাতিলকরণে বাধ্যতার দিকে নিয়ে গিয়েছিল। এখন, হঠাৎ করে এটি আবার চিন্তার পাদপ্রদীপে হাজির হলো।

যদি ধনাত্মকভাবে কোন পরমাণুর চার্জিত আয়নের প্রবাহ একটি তড়িৎ-চৌম্বক ক্ষেত্রে স্থাপন করা হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম ভরের আইসোটোপগুলো সহজে বেঁকে গিয়ে তাদের স্বাভাবিক সরলরৈখিক পথ হতে বিচ্যূত হবে। একটি ভর বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্রে এই প্রভাবটি একটি আলোকসংবেদী পর্দায় নিবিড়ভাবে সন্নিবিষ্ট বেশ কিছু অন্ধকার রেখা তৈরি করবে। এই রেখাগুলোর অবস্থান থেকে আইসোটোপটির ভর সংখ্যা গণনা করা যাবে এবং রেখাগুলোর প্রাখর্য্য থেকে আইসোটোপগুলোর তুলনামূলক পরিমাণটিও জানা যাবে।

এমনটি হলে কেমন হয় যে, যেই পারমাণবিক ওজনগুলো পূর্ণসংখ্যক ছিলো না, সেগুলো আসলে বিভিন্ন পূর্ণসংখ্যক ভরসংখ্যা বিশিষ্ট আইসোটোপের গড়? যদি তা-ই হয়, তাহলে পারমাণবিক ওজন রাসায়নিক বিক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু নিউক্লিয়াসের গঠন অবধারনের জন্য আইসোটোপের ভরসংখ্যাই হবে তাৎপর্যপূর্ণ।

১৯১৯ সালে, জে.জে. থমসনের ছাত্র ফ্রান্সিস উইলিয়াম এস্টন (Fransis William Aston, ১৮৭৭-১৯৪৫) একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যাকে তিনি নাম দিলেন ভরবর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্র (mass spectroscope)। এটি চার্জযুক্ত আয়নসমূহকে যাদের ভর এবং চার্জ একই, তাদের একটি সরু রেখায় আলোকসংবেদী পর্দার উপর ঘনীভূত করতে পারে। এতে করে, ঘনসন্নিবিষ্ট বিভিন্ন রেখার অবস্থান থেকে বিভিন্ন আইসোটোপের উপস্থিতি জানা যায়। একটি রেখার অবস্থান থেকে সেই আইসোটোপের ভর সংখ্যা এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন রেখাগুলোর প্রাখর্য্য থেকে সেই আইসোটোপটির তুলনামূলক পরিমাণটিও জানা যায়। থমসনের সাড়া জাগানো স্থুল যন্ত্রপাতির চেয়ে এই যন্ত্রের মাধ্যমে নির্ণীত মানগুলো আরো অনেক যথাযথ হবে।

picture1

এধরনের একটি ভর বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়ন-২০ এবং নিয়ন-২২ এর রেখা স্পষ্টভাবে সনাক্ত করা হলো। যেমনটি পাওয়া গেল নিয়ন-২১ এর জন্য খুবই সূক্ষ্ম একটি রেখা। তিনটি আইসোটোপের প্রতিটিই স্থিতিশীল, যাদের সঞ্চারী গড়ের (weighted average) মাধ্যমে প্রকৃতিতে নিয়নের পারমাণবিক ওজন পাওয়া যায় ২০.১৮। ভর বর্ণালীবীক্ষণযন্ত্রের মাধ্যমে কৃতকাজের জন্য অ্যাস্টনকে ১৯২২ সালে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত করা হলো।

অন্যান্য মৌলগুলোকেও নিশ্চিতভাবেই পরীক্ষা করে দেখা হলো এবং অধিকাংশের ক্ষেত্রেই একাধিক আইসোটোপ পাওয়া গেল। উদাহরণস্বরূপ, ক্লোরিন দুটি আইসোটোপ সহযোগে গঠিত: ক্লোরিন-৩৫ এবং ক্লোরিন-৩৭। প্রতি ১০০০ টি ক্লোরিন পরমাণুর মধ্যে ৭৫৫ টি হচ্ছে ক্লোরিন-৩৫ এবং ২৪৫টি হচ্ছে ক্লোরিন-৩৭, যার ফলে এদের ভরের সঞ্চারী গড় তৈরি হয় যেই পারমাণবিক ওজন আমরা প্রাকৃতিক ভাবে প্রাপ্ত ক্লোরিনের ক্ষেত্রে নির্ণয় করি। সঞ্চারী গড়টি পুরোপুরি পরিমাপকৃত পারমাণবিক ওজনের সাথে মেলে না, কেননা, যেমনটি আমরা সামনে দেখব, ভরসংখ্যাও পুরোপুরি পূর্ণ সংখ্যা নয়।

কখনো কখনো একটিমাত্র আইসোটোপই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাওয়া যায়। যেমন, কার্বনের ১০০০ টি পরমাণুর মধ্যে ৯৮৯ টিই হচ্ছে কার্বন-১২, এবং ১১টি মাত্র কার্বন-১৩। নাইট্রোজেনের ১০০০টি পরমাণুর মধ্যে ৯৯৬টি হচ্ছে নাইট্রোজেন-১৪ এবং ৪টি হলো নাইট্রোজেন-১৫। প্রতি ১০০০০টি হাইড্রোজেন পরমাণুর মধ্যে ৯৯৯৯ টিই হলো হাইড্রোজেন-১ এবং ১ টি হলো হাইড্রোজেন-২। প্রতি দশ লক্ষ হিলিয়াম পরমাণুর মধ্যে একটি বাদে সবগুলোই হিলিয়াম-৪ এবং ব্যতিক্রম একটি হলো হিলিয়াম-৩। এগুলোর প্রতিটি ক্ষেত্রে পারমাণবিক ওজন একটি পূর্ণসংখ্যার কাছাকাছি।

১৯১৯ সালে, আমেরিকান রসায়নবিদ উইলিয়াম ফ্রান্সিস গিয়ক (Willium Fransis Giauque, ১৮৯৫-১৯৮২) আবিষ্কার করলেন, প্রতি ১০,০০০টি অক্সিজেন পরমাণুর মধ্যে ৯,৯৭৬ টি হচ্ছে অক্সিজেন-১৬, বিশটি হচ্ছে অক্সিজেন-১৮ এবং চারটি অক্সিজেন-১৭। এই পর্যবেক্ষণটি গুরুত্বপূর্ণ। বার্জেলিয়াসের সময় থেকেই অক্সিজেনকে পারমাণবিক ওজন নির্ণয়ের আদর্শ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে এবং এর পারমাণবিক ওজনকে ১৬.০০০০ এর সমপর্যায়ে স্থির রাখা হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা গেল, এটি কেবলমাত্র একটি গড় মান এবং বিভিন্ন নমুণার অক্সিজেনের মধ্যে এর মানের পার্থক্য পাওয়া যেতে পারে। এই কারণে, ১৯৬১ সালে পদার্থ ও রসায়নবিদগণের আনুষ্ঠানিক সর্বসম্মতিক্রমে পারমাণবিক ওজনের বদলে একটি আইসোটোপের ভর সংখ্যাকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হলো। কার্বন-১২ আইসোটোপের ভর সংখ্যাকে ঠিক ১২.০০০০ মানে স্থির রাখা হলো, যাকে আদর্শ ধরে গণনায় অন্য পুরোনো পারমাণবিক ওজনগুলোর খুব সামান্যই পরিবর্তন হলো। উদাহরণস্বরূপ: অক্সিজেনের পারমাণবিক ওজন এখন আর ১৬.০০০০ নয় বরং ১৫.৯৯৯৪।

প্রকৃতিতে কিছু কিছু পরমাণুর কেবল একটি প্রকরণ পাওয়া যায়। যার কারণে, সব ফ্লোরিন পরমাণুর ভর সংখ্যা ১৯, সব সোডিয়াম পরমাণুর ভর সংখ্যা ২৩, সব অ্যালুমিনিয়াম পরমাণুর ২৭, সব কোবাল্ট পরমাণুর ৫৯, সব গোল্ড (সোনা) পরমাণুর ১৯৭ ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেক পদার্থবিদ বিশ্বাস করতেন এসব ক্ষেত্রে আইসোটোপ শব্দটি প্রযোজ্য নয়। আইসোটোপ শব্দটি দ্বারা বোঝায়, পর্যায় সারণিতে যেসব স্থানের জন্য অন্তত দুই ধরনের পারমাণবিক প্রকরণ রয়েছে। একটি পরমাণুর একটি মাত্র আইসোটোপ রয়েছে এটি বলা  অনেকটা একজোড়া বাবা-মার একটি মাত্র জমজ সন্তান রয়েছে বলার মতোই। এই কারণে ১৯৪৭ সালে আমেরিকান রসায়নবিদ ট্রুম্যান পল কোহম্যান (Truman Paul Kohman, জন্ম: ১৯১৬) প্রস্তাব দিলেন এর বদলে নিউক্লাইড (nuclide) শব্দটি ব্যবহার করার জন্য। এটি একটি যথাযথ সুন্দর পরিভাষা ছিল, কিন্তু ততদিনে আইসোটোপ শব্দটি এত দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল যে একে আর জায়গা থেকে নড়ানো গেল না।

মোট ৮১ টি মৌল ছিল যাদের অন্তত একটি আইসোটোপ ছিল স্থিতিশীল। এদের মধ্যে সবচেয়ে জটিল অবস্থায় ছিল বিসমাথ যার পারমাণবিক সংখ্যা ৮৩। এর প্রতিটি পরমাণুর ভর সংখ্যাই হচ্ছে ২০৯। তাই সবচেয়ে ভারী স্থিতিশীল পরমাণুটি হলো বিসমাথ-২০৯।

পারমাণবিক সংখ্যা ৮৩-এর বেশি কিংবা পারমাণবিক ওজন ২০৯ এর বেশি কোনো স্থিতিশীল পরমাণু পাওয়া যায়নি। তাই এর বেশি ভারী প্রকৃতিতে বিদ্যমান পরমাণুগুলো ছিল শুধুমাত্র ইউরেনিয়াম-২৩৮, ইউরেনিয়াম-২৩২ এবং থোরিয়াম-২৩২, যদিও এগুলো তেজষ্ক্রিয় তবে এগুলোর আয়ু ছিল দীর্ঘ।

৮১ টি মৌলের মধ্যে বিন্যাস্ত মোট স্থিতিশীল আইসোটোপের সংখ্যা ২৭২, প্রতিটি মৌলের ভাগে তিনটি বা চারটি করে পড়ে যদি তাদেরকে সুষমভাবে বণ্টণ করা হয়। তবে, এগুলো অবশ্যই সুষমভাবে বণ্টিত ছিল না। জোড় পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌলগুলোর ভাগে সাধারণত তুলনামূলকভাবে বেশি আইসোটোপ পড়েছিল। ৫০ পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌল টিনের ভাগে পড়েছিল রেকর্ডসংখ্যক ১০টি আইসোটোপ যাদের ভর সংখ্যা যথাক্রমে ১১২, ১১৪, ১১৫, ১১৬, ১১৭, ১১৮, ১১৯, ১২০, ১২২ এবং ১২৪।

বিজোড় পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট্য মৌলগুলোর সাধারণত একটি বা দুটি স্থিতিশীল আইসোটোপ আছে। মোট ১৯ টি মৌল আছে যাদের স্থিতিশীল আইসোটোপ কেবল একটি, যাদের মধ্যে একটি ব্যতীত বাকি সবগুলো মৌলই বিজোড় পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট্য। ব্যতিক্রম জোড় পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌলটি হলো বেরিলিয়াম (পারমাণবিক সংখ্যা ৪), যার একটি মাত্র স্থিতিশীল আইসোটোপ হলো বেরিলিয়াম-৯।

আপনি হয়তো এই কথা ভেবে আশ্চর্য হতে পারেন, যদি ৮২তম মৌল লেড এবং ৮৩ তম মৌল বিসমাথের স্থিতিশীল আইসোটোপ থেকে থাকে তাহলে কেন শুধুমাত্র ৮১ টি মৌলের স্থিতিশীল আইসোটোপ আছে। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, ১ থেকে ৮৩ নম্বরের মধ্যে এমন দুটি মৌল আছে যারা এই তালিকার বাইরে, এবং ঘটনা আসলেই তাই। ৪৩ এবং ৬১ নম্বর মৌলের (উভয়েই বিজোড় সংখ্যা) কোনো স্থিতিশীল কিংবা স্থিতিশীলতার কাছাকাছি আইসোটোপ নেই। ১৯২০ এর দশকে তাদেরকে বেশ ধৈর্য সহকারে খোঁজা হয়েছিল। কখনো কখনো তাদেরকে এক বা একাধিক আকরিকের মধ্যে খুঁজে পাওয়ার প্রতিবেদনও পাওয়া যাচ্ছিল কিন্তু সেগুলো পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দুটি মৌলের একটিও প্রকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় নি, যদ্যাবধি বিজ্ঞানীরা প্রকৃতিতে অনুপস্থিত মৌলগুলোকে পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করার বিদ্যা অর্জন করতে পেরেছিলেন। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করব।

আরেকটি অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, পটাশিয়ামই একমাত্র বিজোড় পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌল (পারমাণবিক সংখ্যা-১৯) যার দুইয়ের বেশি স্থিতিশীল আইসোটোপ প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। এর তিনটি আইসোটোপ আছে যাদের ভর সংখ্যা যথাক্রমে ৩৯, ৪০ এবং ৪১। অবশ্য এই তিনটির মধ্যে পটাশিয়াম-৪০ কেবলমাত্র ১০০০০ পরমাণুর মধ্যে ১টি পাওয়া যায়।

তুলনামূলকভাবে অনেক আগে, ১৯১২ সালে ওটো হান লক্ষ্য করেছিলেন, পটাশিয়াম দুর্বলভাবে তেজষ্ক্রিয় এবং পর্যায়ক্রমে এটি আরো সুস্পষ্টভাবে পটাশিয়াম-৪০ এর জন্য নির্ধারিত হলো। পটাশিয়াম-৪০ দীর্ঘায়ু সম্পন্ন যার অর্ধায়ু ১.৩ বিলিয়ন বছর। এই অর্ধায়ুটি ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর অর্ধায়ুর চেয়ে বেশি। পৃথিবীর আদিম অবস্থায় যে পরিমাণে এটি বিদ্যমান ছিল এখন তার একদশমাংসের কিছুটা কম অবশিষ্ট আছে। পটাশিয়াম এতই সহজপ্রাপ্য, যদিও এর ১০০০০টি পরমাণুর একটি হচ্ছে পটাশিয়াম-৪০, তারপরও খনিজ পদার্থে এর পরিমাণ ইউরেনিয়াম-২৩৮ এবং ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর মিলিত পরিমাণের চেয়ে বেশি।

যদি এমনটিই হয়, তাহলে কেন পটাশিয়ামের তেজষ্ক্রিয়তা ইউরেনিয়ামের আগে আবিষ্কৃত হলো না? এর উত্তর হচ্ছে,  প্রথমত, ইউরেনিয়াম শক্তিশালী আলফা কণিকা নির্গত করে, অপরদিকে পটাশিয়াম-৪০ তুলনামূলকভাবে নগণ্য বিটা কণিকা নির্গত করে। দ্বিতীয়ত, ইউরেনিয়াম তেজষ্ক্রিয়তার একটি দীর্ঘ ধারার মধ্য দিয়ে যায় যাদের মধ্যবর্তী প্রতিটি মৌল ইউরেনিয়ামের চেয়ে অনেক বেশি তেজষ্ক্রিয়। অপরদিকে, পটাশিয়াম-৪০ সরাসরি একটি স্থিতিশীল আইসোটোপ আর্গন-৪০ এর পরিণত হয়।

পটাশিয়াম-৪০ ই একমাত্র স্থিতিশীল তালিকায় স্থান পাওয়া স্থিতিশীলতার কাছাকাছি আইসোটোপ নয়। এর বাইরেও আরো এক ডজনের মত আছে, যাদের প্রত্যেকের অর্ধায়ু পটাশিয়াম-৪০ এর চেয়ে অনেক বেশি, কিংবা এমনকি থোরিয়াম-২৩২ এর চেয়ে বেশি। এরা অতি দীর্ঘায়ু সম্পন্ন তাই এদের তেজষ্ক্রিয়তা খুব সামান্যই সনাক্ত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ: ভ্যানাডিয়াম-৫০ এর অর্ধায়ু হচ্ছে প্রায় ৬০০ ট্রিলিয়ন বছর। এটা ইউরেনিয়াম-২৩৮ এর অর্ধায়ুর চেয়ে প্রায় ১,৩০,০০০ গুণ বেশি দীর্ঘ সময়। নিওডাইমিয়াম-১৫৪ এর অর্ধায়ু প্রায় ৫০০০ ট্রিলিয়ন বছর ইত্যাদি। এই স্থিতিশীলতার কাছাকাছি আইসোটোপগুলো যাদের প্রতিটির পারমাণবিক সংখ্যা থোরিয়ামের (৯০) চেয়ে কম, তাদের কোনোটিই কোনো তেজষ্ক্রিয়তার ধারা তৈরি করে না। একটি ছাড়া বাকি সবগুলোই একটি মাত্র বিটা কণিকা নির্গমন করে স্থিতিশীল হয়ে যায়। সামারিয়াম-১৪৭ একটি ব্যতিক্রম, যেটি একটিমাত্র আলফা কণিকা নিঃসরণের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল নিওডাইমিয়াম-১৪৩ এর পরিণত হয়।

আইসোটোপসমূহের ভরসংখ্যাগুলোর পূর্ণসংখ্যার কাছাকাছি মানের এই বাস্তবতা ভাবতে উৎসাহিত করে, নিউক্লিয়াসসমূহ আরো ক্ষুদ্র কণিকা দ্বারা গঠিত। প্রাউট যেমন প্রস্তাব করেছিলেন। প্রকৃতিকে আরো সহজভাবে ব্যাখ্যার এই সুযোগগুলো খুবই প্রলুব্ধকর এবং ১৯২০ এর দশকের পদার্থবিদগণ পরমাণুর গঠনের এই ধাঁধা সমাধানের জন্য উঠে পড়ে লাগলেন।

[বইয়ের সূচীপত্র তথা প্রকাশিত সবগুলো আর্টিকেলের জন্য এখানে দেখুন। বিজ্ঞান পত্রিকায় সম্পূর্ণ বইটিই পড়া যাবে, তবে মুদ্রিত সংস্করণটি সংগ্রহ করতে চাইলে যোগাযোগ করুন: ছায়াবিথী প্রকাশনী, ফোন: ০১৯১৫৯৩৯৬৬৮]

-ইমতিয়াজ আহমেদ
সম্পাদক, বিজ্ঞান পত্রিকা
[লেখকের ফেসবুক প্রোফাইল]

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.