১০ কোটি বছর আগের বিষ্ময়কর অ্যাম্বারে সংরক্ষিত পাখির পালক!

0
380

প্রথমবার যখন উদ্ঘটিত হয়েছিলো যে জীবাষ্মকরণ পদ্ধতিতে পাখির পালক সংরক্ষিত হতে পারে তখন তা বিজ্ঞানীমহলে হুলস্থুল ফেলে দিয়েছিলো। এর আগে কেবল ভাবা হয়েছিলো শরীরের কঠিন টিস্যুগুলোই জীবাষ্মকরণ প্রক্রিয়ায় টিকে থাকতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে ধীরে ধীরে যেসব আলামত পাওয়া যেতে থাকে তাতে বোঝা যায় ডাইনোসর বা পাখির কোমল টিস্যু যেমন পালক ইত্যাদিও প্রকৃতপক্ষে কোটি কোটি বছর টিকে যেতে পারে। তবে কোমল টিস্যু কেবল এভাবেই সংরক্ষিত হয় না।

সম্প্রতি Nature Communication জার্নালের একটি নতুন গবেষনাপত্রে অ্যাম্বারে সংরক্ষিত দুটি পাখির পালকের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যা ৯.৯ কোটি বছর পুরোনো। এই আবিষ্কার ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ: ইতিপূর্বে প্রাপ্ত পালকের জীবাষ্ম দ্বিমাত্রিক অবস্থানে সংরক্ষিত হয়েছিলো, কেননা প্রাকৃতিকভাবে জীবাষ্ম এভাবেই সংরক্ষিত হয়। এই বিসদৃশ পালকগুলো আগেই পাওয়া গিয়েছিলো তবে এদের কোমল টিস্যু গুলো পাখুরে উপাদান দ্বারা প্রতিস্থাপিত ছিলো; তবে অ্যাম্বারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন।

এই নতুন আবিষ্কারটি মধ্য ক্রেটাসিয়াস যুগের বার্মার অ্যাম্বারের সঞ্চয়ের, যাতে বিষ্ময়করভাবে জীবাষ্মে পরিণত বৃক্ষ-নিঃসৃত রেজিনের অভ্যন্তরে বিপুল পরিমান কীট-পতঙ্গ, উদ্ভিদ ও প্রানীর যথাযথভাবে সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই সঞ্চয়টি দিন দিনে আরো নতুন নতুন সংরক্ষিত জীবাষ্ম উদ্ঘটিত করে দিচ্ছে। এই নতুন পালকের জীবাষ্মটি এই সঞ্চয়ে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

Feather in amber

জীবাষ্মটি পালকের আংশবিশেষ, তবে এ থেকে গবেষকগণ প্রাচীন পাখির গঠনের বিষয়ে বিপুল জ্ঞান অর্জন করেছেন। তাঁরা চুলের গ্রন্থির এবং পালকের বিন্যাসের একবারে প্রাথমিক নমুনা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পেয়েছেন। এক্স রে এবং মাইক্রো সিটি-স্ক্যানের মাধ্যমে তাঁরা পালকের খন্ডাংশে সংরক্ষিত হাড়ের সজ্জা এবং গঠন সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন। পালকের বড়শির মতো কাঁটা থেকে বোঝা যায় এই পালকগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত এবং এ থেকে ধারনা পাওয়া যায় এই পাখিগুলোর উন্নত পর্যায়ের ওড়ার ক্ষমতা ছিলো, যা অন্যান্য ফসিল হতে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্যের সাথে মানানসই।

এই অসাধারণ পালকের ফসিল থেকে বোঝা যায় আধুনিক পাখির যে পালক তার গঠন ১০ কোটি বছর পূর্বে ক্রেটাসিয়াস যুগেই অনেকটা সমাপ্ত হয়। এমনকি এগুলোর রঞ্জক পদার্থগুলো, পাখায় বিন্যাস এবং সুক্ষ গঠনশৈলী সবই একই ধরনের।

⚫ বিজ্ঞানপত্রিকা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.