জীবনরক্ষাকারীর সাথে দেখা করার জন্য প্রতিবছর ২০০০ মাইল সাঁতরে যাতায়াত করে এই পেঙ্গুইন

0
774

২০১১ সালে ব্রাজিলের এক ব্যক্তি একটি ম্যাগিলানিক পেঙ্গুইনকে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর একটি দ্বীপে তেল নিঃসৃত ভুমিতে ক্ষুধার্ত ও মৃতপ্রায় অবস্থায় আবিষ্কার করেন। এটিকে সেবা শুশ্রুষা করে সারিয়ে তোলার পর দুজনের মধ্যে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়।

৭১ বছর বয়েসী জোয়াও পেরেইরা ডি সুজা পেঙ্গুইনটিকে অতঃপর সমুদ্রে ছেড়ে দিয়ে আসেন, তিনি ভেবেছিলেন তাদের দুজনের পথ চিরদিনের জন্য দুদিকে চলে গেছে কিন্তু বিশ্মকরভাবে কয়েকমাস পরে পেঙ্গুইনটি সেই দ্বীপে ফিরে আসে এবং ডিসুজার বাড়ি পর্যন্ত তার পিছু নেয়।

এর পর প্রতিবছরই এ্ই পেঙ্গুইনটি বছরের আটটি মাস ব্যয় করে সাঁতরে তার নতুন সঙ্গীর সাথে দেখ করে যায়। বাকী বসন্তকালীণ তিনমাস সে দক্ষিন চিলির প্যাটাগোনিয়ায় প্রজনন উপলক্ষ্যে কাটায়। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল (http://www.wsj.com/articles/beached-in-brazil-a-young-penguin-finds-his-human-soul-mate-1445560828?mod=videorelated) এর তথ্য অনুযায়ী এই আসা-যাওয়ার পথের দৈর্ঘ্য ৩২০০ কিলোমিটার (২০০০ মাইল)।

অবসরপ্রাপ্ত রাজমিস্ত্রি ডি সুজা, তার নতুন বন্ধুর নাম দিয়েছেন জিনজিং। গ্লোব টিভিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি পেঙ্গুইনটি নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসি, আর আমার ধারনা সেও আমাকে ভালোবাসে”। তাকে আর কারো স্পর্শ করার অধিকার নেই। অন্য কেউ তার কাছে গেছে সে ঠোঁকর মারে। সে আমার কোলো শুয়ে থাকে, আমি তাকে গোসল করাই, খাওয়ার জন্য সার্ডিন ধরে দিই এবং ঘুম থেকে জাগাই।

আইসিইউএন এর লাল তালিকা অনুযায়ী, ম্যাগিলানিক পেঙ্গুইন (Spheniscus magellanicus) প্রজাতিকে প্রায় বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় রাখা হয়েছে। যদিও পেঙ্গুইনসমূহকে ব্রাজিল পর্যন্ত পরিব্রাজন করার ঘটনা অজানা নয়, তবে সাধারণ অবস্থায় এগুলোকে রিওডি জেনিরো পর্যন্ত ভ্রমন করার দৃষ্টান্ত খুবই বিরল। একজন স্থানীয় জেলে, মারিও ক্যাস্ত্রো ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, “সবচেয়ে মজার বিষয় হলো পেঙ্গুইনটি হয়তো এখানে এক সাপ্তাহ থাকে তারপর বিচের দিকে হেঁটে গিয়ে বিদায় নেয়। এটা ১০, ১২ বা ১৫ দিন কাটায় তারপর একই বাড়িতে ফিরে আসে।”

গ্লোব টিভির জন্য ডিসুজার সাক্ষাৎকার নেয়া জীববিজ্ঞানী জোয়াও পাওলো ক্রাজেওস্কি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে বলেন “এমন ঘটনা আমি এর আগে কখনো দেখিনি। আমার ধারনা পেঙ্গুইনটি বিশ্বাস করে ডি সুজা তার পরিবারেরই একজন সদস্য এবং সে একজন পেঙ্গুইনই। যখন সে তাকে দেখে তখন কুকুরের মতো লেজ নাড়ে এবং আনন্দে উদ্ভাসিত হয়”।

বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.