(12) Imteaz Ahmed – Home
নজিরবিহীন দ্রুততায় প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ এর একটি কার্যকর ভ্যক্সিন তৈরি করেছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ। ১০৭৭ জন মানুষের দেহে এর প্রয়োগ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে এই ভ্যাক্সিন মানুষের জন্য নিরাপদ এবং শরীরে SARS-CoV-2 ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ-প্রতিরোধ তৈরি করে।
ChAdOx1 nCoV-19 নাম দেওয়া এই ভ্যাক্সিনটি তৈরি করা হয়েছে শিম্পাঞ্জির ঠান্ডার লাগার ভাইরাসের জিনগত রূপান্তরের মাধ্যমে। এই ভাইরাসটিকে এমনভাবে রূপান্তর করা হয়েছে যেন তা করোনাভাইরাসের প্রোটিনের কিছু বৈশিষ্ট্য লাভ করে… এবং একই সাথে শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ না হয়। ফলে মানব শরীরে ভাইরাসটি প্রবেশ করালে রোগ তৈরি না হয়ে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয় এবং করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্য থাকায় তার ক্ষেত্রেও তা কার্যক্ষম হয়।
মানুষের শরীরে কোনো ভাইরাস প্রবেশ করলে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এন্টিবডি তৈরি হতে থাকে যা ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। রক্তের টি-সেলের তত্ত্বাবধানে ক্ষতিগ্রস্থ কোষটিকে সনাক্ত করে ধ্বংস করা হয়। কিন্তু যদি এন্টিবডি তৈরির চেয়ে ভাইরাসের সক্রিয়তা বেশী থাকে তাহলে মানুষ রোগগ্রস্থ হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করে।
ভ্যক্সিন প্রয়োগের মাধ্যমে ভাইরাস আক্রমনের পূর্বেই শরীরের সাথে এটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে শরীরে আগে থেকেই এন্টিবডি এবং টি-সেলের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। ফলে পরবর্তীতে রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করলেও শরীরের কাছে পরিচিত হওয়ায় দ্রুত নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় ।
অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিনটি শরীরের প্রদানের ১৪ দিনের মধ্যে টি-সেল এবং ২৮ দিনের মধ্যে এন্টিবডি সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। সব ভ্যাক্সিন মানষশরীরে একই মেয়াদে সক্রিয় থাকে না। করোনাভাইরাসের ভ্যক্সিন কতদিন পর্যন্ত শরীরে কার্যকর থাকবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, কেননা এটি সবে আবিস্কৃত হলো, এবং এর কার্যকারীতার মেয়াদ পর্যবেক্ষণ চলছে।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক