মঙ্গলপৃষ্ঠে প্রেরিত অপারচুনিটি রোভারের কর্মকান্ডের সমাপ্তি নিশ্চিত করেছে নাসা। গতবছরের ১০ জুন হতে এই রোভারের কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। বিগত কয়েকমাস ধরে নাসা নিয়মিত যোগাযোগের চেষ্টা করে এসেছে। সর্বশেষ এর সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হয় গত ১২ ফেব্রুয়ারি।
কঠোর পরিশ্রম আর মানসম্পন্ন নকশা, প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের ফসল ছিল অপারচুনিটি। উৎক্ষেপনের সময় এটিকে ৯০ দিন পরিচালনার পরিকল্পনা করা হলেও এটি সফলতার সাথে মঙ্গলপৃষ্ঠে ১৪ বছর ২৯৩ দিন কার্যক্রম চালিয়ে বিপুল পরিমান তথ্য প্রেরণ করে। এই সময় এটি ৪৫.১ কিলোমিটার পথ পরিভ্রমণ করে।
অপারচুনিটির অভিযান ছিলো সাফল্যেরও অধিক। অবতরণের তিন মাসের মধ্যেই এটি জানায় মঙ্গলে একদা প্রবাহমান পানির ধারা বিদ্যমান ছিলো। এর ১৪ বছরের অধিক কর্মজীবনে এটি মঙ্গলের বাহির হতে আগত উল্ডাপিন্ড খুঁজে বের করেছে, এন্ডেভার ক্রেটারের মতো নতুন অঞ্চলের বিস্তারিত উদ্ঘাটন করেছে এবং মঙ্গলের পাথর ও মাটি বিশ্লেষণ করেছে। তবে এটি কেবল দূর-নিয়ন্ত্রিত ভূ-তত্ত্ববিদের কাজই করেনি। মঙ্গলের চারদিকে পরিভ্রমণরত মার্স গ্লোবাল সার্ভেয়র অরবিটারের সাথে মিলে এটি মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রার প্রোফাইলও তৈরি করেছে। এটি মঙ্গলের দুই উপগ্রহ ফোবোস এবং ডিমোসের সূর্যের ট্রানজিটের মতো নভোমন্ডলীয় ঘটনাও পর্যবেক্ষণ করেছে।
মঙ্গলে প্রেরিত আরেক রোভার স্পিরিটের বিপরীত পৃষ্ঠে অবস্থান করেছিল এর জমজ, অপারচুনিটি। স্পিরিট নিজেও আশাতীত সাফল্য দেখিয়ে ৯০ দিনের স্থলে বছরাধিক সময় কার্যকর থেকে নানাবিধ তথ্য উদ্ঘাটন করেছে।
ধারনা করা হয় বিপুল ধুলিঝড়ের কবলে পড়ে অপারচুনিটির উপরে স্থাপিত সৌরপ্যানেল ঢেকে গিয়ে সূর্যের আলো ব্যহত করে এর বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। [iflscience.com অবলম্বনে]