প্রথমবারের মতো গবেষকগণ গবেষণাগারে মানুষের ডিম্বাণুকে প্রাথমিক দশা হতে রূপান্তরের মাধ্যমে পরিপক্ক অবস্থায় নিয়ে গেছেন। এর মাধ্যমে মানব ডিম্বাণু কেমন করে বিকশিত হয়ে পূর্ণতা লাভ করে তা জানার সুযোগ পাবেন। একই সাথে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম দম্পতিদের কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এটি সন্তান ধারন করার সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে।
এই গবেষণার জন্য ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের গবেষকগণ বিশোর্দ্ধ ও ত্রিশোর্দ্ধ জনাদশেক মানুষের গর্ভের টিস্যু সংগ্রহ করেন। বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান প্রদানের মাধ্যমে তাঁরা টিস্যু হতে পরিবর্তন ঘটিয়ে ডিম্বাণু উৎপাদনে উৎসাহ তৈরি করেন। ডিম্বাণুগুলোর চূড়ান্ত পর্যায়ে এরা নিষিক্ত হওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।
মোট ৪৮ টি ডিম চূড়ান্ত ধাপে উন্নীত হয় যাদের মধ্যে নয়টি সম্পূর্ণ পরিপক্কতা লাভ করে। রেডিওথোরাপি ও কেমোথেরাপির পার্শ্বপতিক্রিয়া হিসেবে অনেকে বন্ধ্যাত্ববরণ করেন। এই পদ্ধতিতে গর্ভের টিস্যু বের করে এনে ডিম্বাণু বিকশিত করে পরবর্তীতে পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে তাঁদের সেই বন্ধ্যাত্ব দূর করা সম্ভব।
যেসব অল্পবয়সী মানুষ এখনো বয়ঃসন্ধি পেরোয়নি এবং অদ্যাবধি যাদের শরীরে ডিম্বাণু তৈরি হয়নি, তারা পরবর্তীতে মা হতে চাইলে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়ার পূর্বে টিস্যু সংগ্রহ করে দেহের বাইরে এনে ডিম্বাণু উৎপাদন ও সংরক্ষণের মাধ্যমেই কেবল উর্বরতা ধরে রাখার সুযোগ থাকবে।- বলেছেন গবেষণাটির একজন সহ-গবেষক ইভেলিন টেলফার।
এই পদ্ধতিতে অনেকে ধারনা করছেন, ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়ার পূর্বে যদি টিস্যু সংগ্রহ করা হয় তাহলে পরবর্তীতে তা পুনঃস্থাপন করতে গেলে আবার ক্যান্সার ফিরে আসতে পারে। তবে গবেষকগণ তা নাকচ করে দেন। কেননা, এই ক্ষেত্রে দেহে টিস্যু পুনঃস্থাপন করা হবে না, বরং স্থাপন করা হবে ভ্রুণ।
বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগের পূর্ব এই পদ্ধতি নিয়ে আরো অনেক যাচাই-বাছাই করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ ডিম্বাণুগুলো স্বাস্থ্যকর হবে তা নিশ্চিত করার জন্য কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। [sciencealert অবলম্বনে]