দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উইটস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ বায়োমেডিকেল প্রকৌশলে একটি বৈপ্লবিক ঘটনা ঘটিয়েছেন। মেডিকেল এক্সপ্রেস জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রথমবারের মতো গবেষকগণ মানব মস্তিষ্ককে ইন্টারনেটের সাথে সংযু্ক্ত করেছেন। এই প্রকল্পটির নামকরণ করা হয়েছে ব্রেইনটারনেট (Brainternet) এবং এটি বাস্তবিক অর্থেই মানব মস্তিষ্ককে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে একটি ইন্টারনেটের বস্তুতে (IoT) পরিণত করেছে।
এই প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী, ব্যবহারকারীর মস্তিষ্ককে Emotive EEG device এর সাথে যুক্ত করে এর মস্তিষ্কের তরঙ্গ তথা EEG সংকেত গ্রহণ করা হয়। এই সংকেতকে পরে স্বল্পমূল্যের রাস্পবেরি পাই কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয় যা গ্রাহক ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে সরাসরি তথ্য সরবরাহ করে এবং একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে কোনো ব্যবহারকারী মস্তিষ্কের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
উইটস স্কুল অব ইলেক্ট্রিক্যাল ইনফরমেশনের একজন প্রভাষক এবং এই প্রকল্পের সুপারভাইজার অ্যাডাম প্যান্টানোউইটজ এ প্রসঙ্গে বলেন, “ব্রেইনটারনেট হলো ব্রেইন-কম্পিউটার যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি নতুন দিগন্ত। মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে সেই সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞানের অভাব আছে। ব্রেইনটারনেট একজন মানুষের নিজের মস্তিষ্কের সরলীকৃত জ্ঞান তৈরি করে এবং অন্যান্যদের মস্তিষ্ককেও ওই ব্যক্তির কাছে একইভাবে উপস্থাপন করে। মস্তিষ্কের কর্মকান্ডের নিরবচ্ছিন্ন তদারকির মাধ্যমেই এই কাজ করা হয় এবং এভাবে এটি মস্তিষ্কের তথ্যও স্থানান্তর করে।”
প্যান্টানোউইটজ বলেন প্রকল্পের নানাবিধ সম্ভাবনার মধ্যে এটি কেবল সূচনা। তিনি যোগ করেন, গবেষকদলটি এখন মস্তিষ্কের আরো নানাবিধ কর্মকান্ডের মধ্যে ব্যবহারকারীদের সংযোগ ঘটাতে চাইছে। কিছু কিছু কর্মকান্ড এরই মধ্যে ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়েছে যদিও এর পরিসর সীমীত। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেসের আরো অগ্রগতি তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক