বিজ্ঞানের আলোক ভ্রমণ : আল হাজেন থেকে আইনস্টাইন

2
870

মিশর হলো নীল নদের দান। সেই নীল নদই মিশরকে প্রতি বছর ভাসিয়ে দিত বন্যায়। যুগ যুগ ধরে সেই ধারা চলছে। দশম শতাব্দীর মিশরীয় খলিফা চাইলেন সেই বন্যা থেকে চিরস্থায়ী মুক্তি। এজন্য তিনি শরণাপন্ন হলেন ইরাকি পণ্ডিত আল হাসান ইবনে আল-হাইসামের। ল্যাটিন আর ইউরোপীয় বিজ্ঞানীরা যাকে চেনেন আল হাজেন নামে। হাজেন এলেন কায়রোয়। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে হাতে নিলেন বাঁধ নির্মাণের একটা প্রকল্প। হাজেন অনেক যাচাই-বাছাই করে দেখলেন, বাঁধ নির্মাণ সম্ভব নয়। কিন্তু সে কথা বললেন না খলিফাকে। বরং সময় চাইতে থাকলেন দিনের পর দিন। রাজ পণ্ডিত হওয়ার সুবিধা অনেক। ইচ্ছেমতো গবেষণা করা যায়, অর্থ-কড়ির ভাঁড়ারেও টান পড়ে না।

বাঁধ নির্মাণ সম্ভব নয়, তাই সেই টাকা আর রাজ সুবিধা ভোগ করে আল হাজেন শুরু করলেন বৈজ্ঞানিক গবেষণা। আলোর ওপরে করলেন মৌলিক কিছু কাজ। বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক ও গণিতবিদ ইউক্লিড মনে করতেন, মানুষের চোখ থেকে আলো বের হয়ে। সেই আলো গিয়ে পড়ে বস্তু ওপর। তারপরই সেই বস্তুকে দেখতে পায় মানুষ। ইউক্লিডের এই ধারণা ভুল, এখকার স্কুলের বাচ্চারাও সেটা বোঝে। কিন্তু দশম শতাব্দীতে সেটা বোঝা অত সহজ ছিল না। বিশ্ব বিজ্ঞানে গ্রিকপন্ড­িতদের তখন দেবতার আসন। দ্বিতীয় শতাব্দীতে টলেমী একের পর এক ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অ্যারিস্টোটলের বেশিরভাগ মতকেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আলোর ব্যাপারেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ইউক্লিডের ভুল ধারণার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সেটাকে আগলে রেখেছিলেন যুগ যুগ ধরে। সেই ধারণাতেই কুঠারাঘাত করলেন আল হাজেন। বললেন, মানুষের চোখ থেকে নয়, বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে এসে যখন আমাদের চোখের ওপর পড়ে তখনই আমরা বস্তুটাকে দেখি। অনেকেই তখন রে-রে করে তেড়ে এলেন, জাত গেল জাত গেল বলে চিৎকার চেচামেচি করলেন। কোথাকার কোন আল-হাজেনের ধৃষ্টতা কেমন করে হলো উইক্লিড-টলেমীর তত্ত্ব ছুঁড়ে ফেলার! তখন হাজেন সমর্থন পেলেন আরবের দুই বিখ্যাত পণ্ডিত ইবন সিনা আর আল-বিরুনির।

বাধ নির্মার্ণের টাকা দিয়ে আলোর গবেষণা করেন আল হাজেন

আল-হাজেন বাঁধ নির্মাণ করতে পারেননি। তাই খলিফা খেপে গিয়েছিলেন এক সময়। শোনা যায়,তখন পাগলের ভান ধরেই হাজেন রয়ে গিয়েছিলেন মিশরে। গোপনে আলো নিয়ে গবেষণা করেছেন। আলো নিয়ে লিখেছেন সাত খন্ডের ঢাউস এক বই কিতাব আল-মানাজির। ইংরেজি অনুবাদে যার নাম হয় বুক অব অপটিকস। এই বইয়ে হাজেন বলেন, আলো ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে গেলে এর গতি কমে যায়। আগে মানুষ মনে করত আলোর গতি অসীম।

পরে হাজেনের সেই ধারণা অনুপ্রাণীত করে ত্রয়োদশ শতাব্দীর বিখ্যাত ফরাসি পন্ডিত রজার বেকনকে। তিনি আল হাজেনের সাথে একমত হয়ে বলেন, আলোর গতি অনেক বেশি। শব্দের চেয়েও বেশি, কিন্তু গতি অসীম নয়। তখন আরেকটা মতবাদ ছিল আলোর গতির ব্যাপারে। ­পন্ডিতরা মনে করতেন শূন্য মাধ্যমে আলোর গতি অসীম, কিন্তু বায়ু মাধ্যমের ভেতর দিয়ে চলতে গিয়ে ধীর হয়ে যায় আলো।

সপ্তদশ শতাব্দীতে এসে বিখ্যাত জার্মান বিজ্ঞানী জোহান কেপলারকেও অুনপ্রাণীত করে আল হাজেনের তত্ত্ব। তিনিও অপটিকস নামে আলোক তত্ত্বেও ওপর একটা বিখ্যাত বই লেখেন। যে বইটি নিউটনের আলোক গবেষণার খোরাক যোগায়। অন্যতম ভিত্তি। সেই বইয়ে কেপলার লেখেন, শূন্য মাধ্যমে আলোর চলাচলের জন্য কোনো প্রতিবন্ধাকতা নেই।

১৬২৯ সাল। ডাচ দার্শনিক আইজ্যাক বিকম্যান একটা পরীক্ষার প্রস্তাব করলেন। কামান থেকে বেরোনো একটা আলোকরশ্মি, সেটাকে প্রতিফলিত করতে হবে এক মাইল দূরের কোনো আয়নায়। যদি প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসতে সময় নেয় তাহলে নিশ্চিত হওয়া যাবে আলোর গতির সীমা আছে। কিন্তু সেই পরীক্ষা কেউ করে দেখেননি।

কাছাকাছি সময়ে ইতালিয়ান পদার্থবিদ গ্যালিলেও গ্যালিলি করলেন এমনই এক পরীক্ষা। তবে বিকম্যানের প্রস্তবনার খবর জানতেন না গ্যালিলিও। গ্যালিলিও দেখলেন, আলো দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় নেয় না। সেটা গ্যালিলিওর ভুল ছিল। আলোর গতি খুব বেশি। সেকেন্ডে ১ লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল। তাই এক মাইল দূরে রাখা আয়না থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসতে আলোর সময় লাগবে এক সেকেন্ডের এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার ভাগের মাত্র এক ভাগ। এত ক্ষুুদ্র সময় মাপতে পারে এমন প্রযুক্তি তখন গ্যালিলিওর কাছে ছিল না। তাই তিনি বুঝতে পারলেন না আলো চলতে সময় নেয়।

বাধ নির্মার্ণের টাকা দিয়ে আলোর গবেষণা করেন আল হাজেন

ফরাসি জ্যোতির্বিদ জিওভ্যানি ক্যাসিনি। সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে লক্ষ করলেন এক আশ্চর্য ঘটনা। আমরা জানি, সৌরজগতের গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। প্রত্যেকের একটা নিদির্ষ্ট কক্ষপথ আছে। কক্ষপথগুলি গোলাকার নয়। উপবৃত্তকার। সুতরাং এর গ্রহগুলি সব সময় পরস্পর থেকে সমান দূরত্বের অবস্থান করে না। পৃথিবী আর বৃহস্পতির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। ক্যাসিনি বৃহস্পতির গ্রহের উপগ্রহগুলোর যে গ্রহণ লাগে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছিলেন। বৃহস্পতির উপগ্রহের গ্রহণকাল আগে থেকেই ভবিষ্যৎবাণী করা যায়। এবং সেটা খুব সহজেই। ক্যাসিনি দেখলেন বছরের যে সময়ে বৃহস্পতি পৃথিবীর খুব কাছে থাকে, তখন পূর্বে অনুমান করা সময়ের কয়েক মিনিট আগেই গ্রহণ দেখা যায়। আবার বছরের যে সময়ে বৃহস্পতি সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে, সেই সময়ে গ্রহণ দেখা যায় অনুমিত সময়ের কয়েক মিনিট পরে। এর মানে কী? এর ব্যাখ্যা ছিল না ক্যাসিনির কাছে। তখনই এগিয়ে এলেন ডেনিস জ্যোতির্বিদ ওলে ক্রিস্টেনসন রোমার।

কোনো বস্তু বা উৎস থেকে আলো এসে যখন আমাদের চোখের রেটিনায় আঘাত করে তখনই সেই বস্তুটা আমরা দেখতে পাই। বৃহস্পতির দুটি গ্রহণের সময়ের যে পার্থক্য ঘটে তার কারণ দুই স্থান থেকে আলো আসতে দুই রকম সময় লাগছে। রোমার ভাবলেন এর অর্থ একটাই। আলোক ক্রিয়া কোনো তাৎক্ষণিক ঘটনা নয়। অর্থাৎ আলোর একটা নির্দিষ্ট গতি আছে। তবে আলোর গতিটা খুব বেশি।

বৃহস্পতির সাথে পৃথিবীর দূরত্ব অনেক। বছরের দুটি আলাদা সময়ে দূরত্বের যে পার্থক্য হয় সেটাও কম নয়। তাই বৃহস্পতির উপগ্রহের গ্রহণের ঘটনা প্রমাণ করে দেয় আলোর গতিবেগ নিদির্ষ্ট। রোমার আলোর গতি মাপেন সেকেন্ডে এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার মাইল। এটা আধুনিক পরিমাপের চেয়ে অনেক কম। কিন্তু সেই কালে আলোর গতি মাপার এত সূক্ষ্ম যন্ত্র ছিল না। সুতরাং রোমারের মাপা এই মানটার গুরুত্ব অনেক।

সপ্তদশ শতাব্দীতে ক্রিশ্চিয়ান হাইগেনস বললেন, শব্দের মতো আলোও তরঙ্গাকারে চলে। এর আগে নিউটন বলেছিলেন আলো আসলে গতিশলী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সমষ্টি। তরঙ্গাকারে চলতে গেলে মাধ্যমের দরকার হয়। শব্দের কথাই ধরা যাক। শব্দ বাতাসের বুকে ঢেউ তোলে। তারপর বাতাস কাঁপিয়ে সে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। আলোর তরঙ্গ কীসের ওপর ঢেউ তোলে? বাতাসে ঢেউ তোলার প্রশ্নই ওঠে না। তা হলে আলো চলাচলের মাধ্যমটা কী?
তখন বিজ্ঞানীরা কল্পনা করলেন এক অদৃশ্য মাধ্যমের। নাম তার ইথার। ধরে নেওয়া হলো শূন্য স্থানেও ইথারের অস্তিত্ব আছে। কিন্তু সমস্যা একটা রয়েই গেল। আলো যদি ইথারের মধ্য চলে সেই ইথার কী সব জায়গায়ই আছে। বহুদূরের নক্ষত্র থেকে আসা আলোক রশ্মিও ইথার মাধ্যম পাড়ি দিয়ে আসে? নাকি গোটা মহাবিশ্বই ইথারে নিমজ্জিত?

১৮৬৫ সালে স্কটিশ পদার্থবিদ জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল তার বিখ্যাত তড়িচ্চুম্বকীয় সমীকরণগুলো প্রতিষ্ঠা করলেন। এই সমীকরণ বলে আলো তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ। ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণ থেকেই বেরিয়ে এলো, চলার জন্য আলোক তরঙ্গের কোনও মাধ্যমের দরকার হয় না। গতিশীল চৌম্বকক্ষেত্র বিদ্যুৎ বা তড়িৎ অবস্থা এবং গতিশীল তড়িৎক্ষেত্র চৌম্বক অবস্থার জন্ম দেয়। মূলতঃ এই ধারণা থেকেই ম্যক্সওয়েলের তড়িচ্চুম্বক তত্ত্বের জন্ম। আর এই তত্ত্ব থেকেই ইথারের ধারণার বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। কারণ এখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে আলোর বেগের নির্দিষ্ট মান। আর সেটা সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল বা তিন লক্ষ কিলোমিটার।

ঝামেলা হলো ইথারকে নিয়ে। ইথারের ব্যাপারটা ম্যাক্সওয়েলই মানতে পারেননি। বাতাসে শব্দ তরঙ্গাকারে চলে। যতক্ষণ শব্দ তরঙ্গ নূন্যতম শক্তি ধরে রাখতে পারে ততক্ষণ চলে। আমরা দেখি শব্দ তরঙ্গ একটানা চলতে পারে না। একসময় তা বাতাসের বাধার কারণেই থেমে যেতে বাধ্য হয়। ইথার যদি আলোর এমন মাধ্যম হয় তাহলে সে একসময় আলোকেও থামিয়ে দিতে সক্ষম! কিন্তু আলোকে কখনো থামানো যায় না। ম্যাক্সওয়েল তার ধারণার কথা রয়্যাল সোসাইটির জার্নাল ‘প্রসিডিং অব রয়্যাল সোসাইটি’র সম্পাদককে জানান। কিন্তু সম্পাদক ম্যাক্সওয়েলের ধারণাকে যুক্তিযুক্ত মনে করেননি। ম্যাক্সওয়েলের ধারণায় অনুপ্রাণিত হলেন আমেরিকান পদার্থবিদ আলর্বাট মাইকেলসন।

১৮৮৭ সালে তিনি আরেক আমেরিকান বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড মর্লিকে নিয়ে একটা পরীক্ষা চালালেন। মাইকেলসন-মর্লি পৃথিবীর সাপেক্ষে দুবার আলোর গতির পরীক্ষাটি চালালেন। একবার আলোর গতি নির্ণয় করা হলো পৃথিবীর গতির অভিমুখে। একটা আলোক উৎস থেকে মাইকেলসন ও মর্লি দুবার দুই আয়নায় দুটি আলোক রশ্মি পাঠালেন। দুবারই তাঁরা আলোর গতির মান নির্ভুলভাবে একই পেলেন। এই পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হলো স্টেশনে গতিশীল কোনো ট্রেনের গতি যেমন অন্য কোনো গতিশীল বাস বা ট্রেনের সাপেক্ষে ভিন্ন হয়, আলোর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে না।

ইথার তরঙ্গ যদি থাকত তা হলে দুবার দুরকম ফলাফল পাওয়া যেত। কিন্তু মাইকেলসন-মর্লি একই ফল পেলেন। তা হলে কী ইথারের বাধা ছিল না? মাইকেলসন-মর্লির পরীক্ষা থেকেই আসলে প্রমাণ হলো ইথার বলে কিছু নেই। পরীক্ষা হলো, প্রমাণ হলো। কিন্তু ব্যাখ্যা হলো না। তবে ইথারের অস্তিত্ব ভেঙে পড়ল। এর জন্য অপেক্ষা করতে হলো বহুদিন।

অর্থাৎ ইথারের অস্তিত্ব ভেঙে পড়ল। কিন্তু অনেক বিজ্ঞানী সেটা মানতে পারলেননা। তাঁরা উঠেপড়ে লাগলেন বিভিন্ন প্রকল্প দাঁড় করিয়ে ইথার সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার জন্য। বিশেষ করে কিছু বিজ্ঞানী ইথারকে বাদ দিতে একেবারে নারাজ ছিলেন। তাই তাঁরা ইথারকে ধরে রাখেতে ভিন্ন পথ অবলম্বন করলেন। এর মধ্যে আইরিশ বিজ্ঞানি ফিট জেরাল্ডের প্রকল্পটা ছিল অন্যতম। তিনি বললেন গতির অভিমুখে পাঠানো আলো ফিরে আসতে বেশি সময় লাগত, কিন্তু গতির কারণে ইন্টারফেরোমিটারের দৈর্ঘ সংকুচিত হয়েছে। অর্থাৎ আলোর গতিপথ কমে গেছে। এই গতিপথ ততটুকই কমেছে যতটুকু কমলে উত্তর দক্ষিণ বরাবর পাঠানো আলোকরশ্মি যে সময়ে ফিরে আসে সেই সময়ে ফিরতে পারে। সংকোচনের পরিমাণ কতটকু হবে তা নির্ভর করবে বস্তুর বেগের ওপর। এখানে ইন্টারেফেরোমিটার চলছে পৃথিবীর গতিতে। তিনি হিসাব করে দেখালেন, ১ মিটার দৈর্ঘের একটা বস্তু যদি আলোর বেগরে অর্ধেক গতিতে চলে তাহলে, তার দের্ঘ্য কমে দাঁড়াবে ০.৮৬৬ মিটারে।

তাঁর প্রকল্পের সুত্র ধরে ডাচ বিজ্ঞানী হেনড্রিক অ্যান্টন লরেনৎস আরেকটি প্রকল্প হাতে নেন। ফিটজেরাল্ড আর লরেনৎস মিলে দাঁড় করালেন ফিটজেরাল্ড-লরেনৎস প্রকল্প। এই প্রকল্পে তাঁরা কতগুলো সমীকরণ ব্যবহার করেন। ম্যাক্সওয়েলের তড়িচ্চুম্বকীয় সমীকরণগুলোকে ফিটজেরাল্ড-লরেনৎস প্রকল্পের মাধ্যমে দুটি ভিন্ন প্রসঙ্গ কাঠামোতে ব্যবহার করা যায়। আইনস্টাইন তারআপেক্ষিক তত্ত্বে ব্যবহার করলেন এই সূত্রগুলো। কিন্তু ফিটজেরাল্ড আর লরেনৎস সমীকরণগুলো ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন ইথারকে বাঁচাতে আর আলোর বেগ ধ্র“ব নয় এটা প্রমাণ করতে। আইস্টাইন ওইগুলো ব্যবহার করে আলোর বেগের ধ্রুবতা প্রমাণ করলেন। আইনস্টাইন আপেক্ষিক তত্ত্বে গ্যালিলিওর রূপান্তর সমীকরণগুলোকে লরেনৎস রূপান্তর সমীকরণে প্রতিস্থাপিত করলেন।

মাইকেলসন-মর্লির পরীক্ষা থেকে এসব সমস্যাগুলো বেরিয়ে আসে। কিন্তু তাঁরা সমাধান করতে পারেননি। ১৯০৫ সালে এলো সমাধান। আলবার্ট আইনস্টাইনের হাত ধরে। বেরিয়ে এলো আলোর বেগের ধ্রুবতা। আইনস্টাইন আরো বললেন, আলোর গতির চেয়ে বেশি গতি আর কোনো বস্তুর হতে পারে না। আইনস্টাইনের সেই তত্ত্ব এখনো বুক ফুলিয়ে রাজত্ব করছে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে। সূত্র : নিউ সায়েন্টিস্ট

-আব্দুল গাফফার রনি
বিজ্ঞান লেখক
[লেখকের ফেসবুক প্রোফাইল]

বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশিত ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন ইউটিউবে। লিংক:
১. টেলিভিশনঃ তখন ও এখন
২. স্পেস এক্সের মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা
3. মাইক্রোস্কোপের নিচের দুনিয়া

2 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.