প্রথম কৃত্রিম ভ্রুণ তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা

0
442

বিশ্বের-প্রথম হিসেবে বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে সম্পূর্ণ কার্যকর ভ্রুণ তৈরি করেছেন। গবেষনাগারের পেট্রিডিশে দুই প্রকার স্টেম সেল ব্যবহার করে প্রাণের এই প্রারম্ভিক দশা তৈরি করা হয়েছে।

স্টেমসেলগুলো শরীরের বাইরে থকথকে তরল মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে যেগুলো সাধারণ ভ্রুনের মতোই আভ্যন্তরীন বিভিন্ন অঙ্গের প্রাথমিক দশায় পরিবর্তিত হতে পারে। গবেষকগণ এখন আশা করছেন এই প্রক্রিয়া প্রাণের সুচনার কিছু গুঢ় বিষয় ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করবে। এই বিষয়ে প্রধান গবেষক ম্যাগডালেনা জেরনিকা-গোয়েটজ বলেন, “এই ভ্রুণের আভ্যান্তরীন যথাযথ কাঠামো আছে, যা যথাযথ সময়ে যথাযথ স্থানে বিকাশিত হতে পারে। আমাদের জন্য এটি সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়।”

ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় কৃত্রিম ভ্রুণ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেগুলো ব্যর্থ হয় কারণ সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো কেবল ভ্রুনীয় স্টেম সেল (ESC) ব্যাবহার করে। এই ভ্রুনীয় স্টেম সেলগুলোই ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার পর গোলোকাকারে ব্লাস্টোসাইট গঠন করে, যা থেকে পরবর্তীতে প্রানীর পুর্ণাঙ্গ অবয়ব তৈরি হয়।

এই ক্ষেত্রে সমস্যা হলো, জীবন কেবল সরলভাবে ভ্রুনীয় স্টেমসেল থেকে বিকাশিত হয় না। এর জন্য আরো দুই ধরনের স্টেম সেল প্রয়োজন হয়, যেগুলো হলো- বহিঃভ্রুণীয় ট্রপোব্লাস্ট স্টেম সেল (TSC) এবং আদিম অন্তঃত্বকীয় স্টেম সেল (ESC)। এই দুই ধরনের স্টেম সেল, ভ্রুনীয় স্টেম সেলের পাশাপাশি প্রাণ বিকাশে অত্যাবশ্যকীয়।

ESC এর সাথে সমন্বিতভাবে এই অতিরিক্ত স্টেম সেলগুলো নাড়ি ও গর্ভথলি তৈরি করে যা অঙ্গসমূহের বিকাশের পরিবেশ নিশ্চিত করে।

স্টেম সেলগুলোর এইধরনের ভুমিকার জন্য জেনেরিকা-গোয়েটজ এই কোষের সমন্বয় ব্যবহার করেন যেগুলোকে জিনপ্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবর্তিত করে নেওয়া হয়েছে। অতপরঃ এগুলোকে একটি ত্রিমাত্রিক জেলী সদৃশ কাঠামোও স্থাপন করা হয়েছে যার চারপাশে কোশগুলো সাধারণ প্রাকৃতিক ভ্রুণের মতোই বিকাশিত হতে পারে।

প্রায় সাড়ে চারদিন পর গবেষকগণ লক্ষ করেন বেশকিছু ভ্রুণ স্বাভাবিক ইঁদুরের ভ্রুণের মতোই বিকাশিত হয়েছে এবং এগুলো দেখতে ইঁদুরের ভ্রুনের মতোই হয়েছে। এগুলো ক্রমান্বয়ে ইঁদুরের বিভিন্ন অঙ্গের আকৃতি নেওয়াও শুরু করেছে।

সাতদিনের মাথায় এগুলোকে দুটি স্পষ্ট পৃথক অংশে ভাগ হতে দেখা যায়। একটি নাড়ির সুচনা অবস্থা, এবং অপরটি খোদ ইঁদুরের আকৃতি।

নিচের ছবিতে ইঁদুরের ভ্রুণের ৯৬ ঘন্টা (বাম) এবং ব্লাস্টোসাইট দশার ৪৮ ঘন্টা (ডান) বয়সী ভ্রুণ দেখা যাচ্ছে।

লাল অংশটি ভ্রুণীয় এবং নীল অংশটি বহিঃভ্রুণীয় যা ক্রমান্বয়ে নাড়ি গঠন করবে।-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.