বর্ধনযোগ্য রক্তনালীর উদ্ভাবন: হৃদপিন্ডের অস্ত্রোপচারে বিপ্লব

0
240

বর্তমানে আমাদের হাতে এমন সব নতুন চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে যে কৃত্রিম অঙ্গ এখন আর বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নয়। আমরা এখন ত্রিমাত্রিক প্রিন্টারে অঙ্গ নির্মান করতে পারি, কিংবা গবেষনাগারে তা জন্মাতে পারি। তবে এগুলো যেহেতু কৃত্রিম, তাই সর্বদা রোগীর দেহে এগুলো স্বাভাবিক আচরণ করে না। যেমন: শিশুদের শরীরে কোনো অঙ্গ কৃত্রিমভাবে প্রতিস্থাপন করলে তারা বড় হওয়ার সাথে সাথে বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করতে হয়, কারণ শরীরের বৃদ্ধির সাথে এই অঙ্গগুলো বৃদ্ধি পায় না।

তবে সম্ভবত খুব শিঘ্রই এই দিনগুলোর অবসান হতে চলেছে। মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ সফলভাবে এমন কৃত্রিম রক্তনালী তৈরি করেছেন যেগুলো স্বাভাবিক রক্তনালীর মতোই এদের বাহকের বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পাবে।

কৃত্রিম রক্তনালী তৈরির জন্য একটি বিশেষ নলে ভেড়ার চামড়া থেকে সংগৃহীত কোষ স্থাপন করেন। পরবর্তীতে একই কোষগুলোকে জৈব বিক্রিয়কে বৃদ্ধি পেতে দেওয়া হয়। এই বিক্রিয়কে পাম্পের মাধ্যমে কোষ বৃদ্ধির জন্য যাবতীয় পুষ্টিদ্রব্য পাঠানো হয়, উষ্ণতা নিয়ন্ত্রন করা হয় এবং প্রয়োজনীয় অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হয়। সম্পূর্নবৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে উৎপন্ন নালিকাগুলোকে পরবর্তীতে ডিজারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে প্রাথমিক কিছু কোষ থেকে থাকলে সেগুলো সরানো হয়। ধোয়ার পরে এটি হয় নলাকার প্রোটিন কাঠামো, যা রোগীর দেহে স্থাপন করা হলে কোনো ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখাবে না।

160927134842_1_540x360

গবেষনাকালে গবেষকগণ এই রক্তনালীগুলো পাঁচ সাপ্তাহ বয়সী একটি ভেড়ার শাবকের দেহে প্রতিস্থাপন করেন। তখন বাহকদেহটি এই রক্তনালীগুলোকে দেহের বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি ঘটাতে থাকে। ৫০ সাপ্তাহ বয়স হয়ে যাওয়ার পর আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে তাঁরা দেখতে পান রক্তনালীগুলো প্রাথমিক আকারের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই গবেষণা প্রতিস্থাপিত বস্তুগুলো পোষকদেহে মানিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে একটি বৈপ্লবিক অনুসন্ধান। বর্তমানে একটি মানবদেহে কেমন আচরণ করে তা গবেষণা করে দেখার প্রস্তুতি চলছে।

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

 

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.