অণুজীববিজ্ঞানের প্রায়োগিক চিকিৎসার (ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি) গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৭ সালের আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজি(ASM)পুরষ্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশী অণুজীবিজ্ঞানী ড. সমীর কুমার সাহা। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে তিনিই প্রথম সম্মানজনক এই পুরষ্কারে ভূষিত হলেন। ২০১৭ সালের ১-৫ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্সে ASM এর সভায় এই পুরষ্কার প্রদান করা হবে।
ড. সাহা ঢাকা শিশু হাসপালের (DSH) অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান এবং শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক। তিনি সংক্রমক রোগগুলোকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্ণয়ের মাধ্যমে উচ্চ শিশু মৃত্যুহার সম্পন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে উন্নত বিশ্বের বিদ্যমান দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ড. সাহা ১৯৮৩ সালে DSH এর রোগবিদ্যা বিভাগের “বারান্দায়” দল গঠন করে তাঁর কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন অণুবিজ্ঞানের প্রায়োগিক চিকিৎসা গবেষণাগারের সাথে গুচ্ছ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। ১০০ সদস্যের দলটি নিউমোনিয়া, মস্তিষ্ক ঝিল্লীর প্রদাহ, টাইফয়েড এবং নবজাতকের বিষক্রিয়ার মতো আক্রমণকারী শিশুরোগের ওপর নজরদারি পরিচালনাসহ সংক্রামক রোগ বিশেষকরে স্ট্রেপ্টোককাস নিউমোনিয়া, হ্যামোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্যালমনেল্যা টাইফি/প্যারাটাইফির মতো জীবাণুদের রোগ ছড়ানোর কৌশল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন। টাইপ বি হ্যামোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং স্ট্রেপ্টোককাস নিউমোনিয়ার উপর তাঁদের আবিষ্কার বাংলাদেশে এদের টিকা প্রবর্তনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ড. সাহা বহুজাতি ভিত্তিক প্রকল্প Aetiology of Neonatal Infection in South Asia (ANISA)এর প্রধান গবেষক। ANISA প্রকল্পটি বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে পরিচালিত হচ্ছে। পিয়ার রিভিউড জার্নালে তাঁর ১৫০ টিরও বেশি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী, icddr,b এর অতিরিক্ত বিজ্ঞানী, বাংলাদেশ সরকারের টিকাদান নীতি জাতীয় কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষণামূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
এটা শুধু ড. সমীর সাহা এবং তাঁর দলের জন্যই গৌরবের বিষয় নয় বরং সমগ্র বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। [Child Health Research Foundation অবলম্বনে]
-শফিকুল ইসলাম