সহসাই বিলীন হচ্ছে না ডার্ক এনার্জির অস্তিত্ব

0
342

গত সাপ্তায় সুপারনোভা পর্যবেক্ষণ থেকে মহাবিশ্ব ত্বরিত গতিতে সম্প্রসারিত না হওয়ার এবং ডার্ক এনার্জির অস্তিত্ব না থাকার সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিলো বিজ্ঞান পত্রিকায়। সেই সময় বৈজ্ঞানিক মহলে এটি নিয়ে প্রচুর তর্ক-বিতর্ক হয়েছে এবং এটি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। কেননা, মহাবিশ্বের ত্বরিত সম্প্রসারণ আবিষ্কারের জন্য্ ২০১১ সালে নোবেল দেওয়া হয়েছে, যা পৃথক তিনটি গবেষনার মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে।

তবে ইতিমধ্যে মনে করা হচ্ছে, নতুন সুপারনোভা পর্যবেক্ষনটি আসলে মহাবিশ্বের ত্বরিত সম্প্রসারণ বাতিল করে না বরং এতে নতুন মাত্রা যোগ করে। তাহলে নতুন গবেষণাপত্রটিতে কেন দাবী করা হচ্ছে মহাবিশ্বের ত্বরিত সম্প্রসারণ ন্যুনতম?

প্রকৃতপক্ষে, যদি একটিমাত্র তথ্যগুচ্ছ ব্যবহার করে সম্প্রসারণ ব্যাখ্যা করতে হয় তাহলে তা ন্যুনতমই দেখায়। সুপারনোভা বিশ্লেষণের নতুন যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে সম্প্রসারণ ন্যুনতমই দেখা যায়, এতে দ্বিমত নেই। কিন্তু এতে যদি আর এক টুকরো তথ্য, যেমন: বস্তুর উপস্থিতি যোগ করা হয় তাহলে এটি আর ন্যুনতম থাকে না। এবং, একে ব্যাখ্যা করার জন্য নতুন ধরনের তত্ত্বের প্রয়োজন হয়।

বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূণ বিষয়টি হচ্ছে, সুপারনোভার সবরকম পর্যবেক্ষনের তথ্য ছুঁড়ে ফেলে দিলেও মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের অনেক আলামত বিদ্যমান থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায় WiggleZ নামক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিলো যাতে পাঁচ বছরের বেশী সময় ধরে আড়াই লাখের মতো গ্যালাক্সির অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এই গ্যালাক্সিগুলোর অবস্থান বিক্ষিপ্ত নয়। ফলে আমরা সময়ের সাথে এই গ্যালক্সিগুলোর অবস্থান গণনা করে বুঝতে পারি মহাবিশ্বের আকারে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে।

শুধু মাত্র এই তথ্যগুলো ব্যবহার করে এবং সুভারনোভা পর্যবেক্ষণের তথ্য উপেক্ষা করেও বলে দেওয়া যায় মহাবিশ্ব ত্বরিত গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে, মহাজাগতিক পটভুমি বিকিরণ, যেখানে বিগব্যাং এর পরবর্তী উজ্জ্বলতা সম্বন্ধে আভাস পাওয়া যায় এবং এবং এটি বিগব্যাং এবং পরবর্তী মহাবিশ্ব সম্পর্কিত সবচেয়ে যথাযথ পরিমাপগুলোর একটি। এখান থেকে মহাবিশ্বকে খুবই সমতল (অর্থাৎ সম্প্রসারিত হচ্ছে না) হিসেবে পাওয়া যায়।

এরই মধ্যে গ্যালাক্সিগুলোর পর্যবেক্ষণ থেকে পাওয়া যায়, এগুলোতে যথেষ্ট পরিমান ম্যাটার বা ডার্ক ম্যাটার নেই যার ফলে মহাবিশ্ব সমতল হতে পারে। ফলে, মনে হয় যে, মহাবিশ্বের ৭০ শতাংশ ভর হারিয়ে গেছে।

ফলে যখন সুপারনোভার পর্যবেক্ষণসমূহ হতে দেখা গেলো মহাবিশ্বের ৭০ শতাংশ ডার্ক এনার্জি দিয়ে গঠিত তার মাধ্যমে এই অসামঞ্জস্যতা দূর হয়েছিলো। এই সবধরনের পর্যবেক্ষণ থেকে মনে করা হচ্ছে ডার্ক এনার্জির অস্তিত্ব নেই, এমনটি ঠিক নয়, রবং পদার্থ বিজ্ঞান নতুন ধরনের কোনো তত্ত্ব আসছে যার মাধ্যমে এই গরমিলগুলোর ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে।

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.