একটি লেজারের আবরণ পৃথিবীকে এলিয়েন প্রানী থেকে সুরক্ষা দেবে

0
415

বিজ্ঞান কথা সাহিত্য এবং কিছু বুদ্ধিমান মানুষ (যেমন: স্টিফেন হকিং) উভয়েই এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। কেমন হবে যদি প্রযুক্তির দিক থেকে উৎকৃষ্ট এলিয়েনরা পৃথিবীকে ধ্বংস করে কিংবা মানব জাতিকে কৃতদাস বানিয়ে রাখে? সুতরাং এসব কারণেই এলিয়েন খোঁজ করার বা তাদের জানার যে বর্তমান প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে তা নিছক নিষ্ক্রিয়ভাবে, আমাদের উপস্থিতি না জানান দিয়ে।

কিন্তু আমাদের গ্রহ কি শুধু সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেই আমাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেনা? কেপলার মহাকাশ টেলিষ্কোপ আমাদের সৌর জগতের বাইরে শুধুমাত্র ছায়া অনুসরণ করে হাজারো গ্রহ আবিষ্কার করেছে। যেগুলো নক্ষত্রের সামনে দিয়ে আবর্তনের সময় ছায়ার সৃষ্টি করেছে। যদি বর্হিবিশ্ব সভ্যতা জীবনের সন্ধানে খোঁজ চালাতে থাকে তবে তারাও লক্ষ্য করবে আমাদের গ্রহও অনুরূপ কাজ করছে। তারা আরও লক্ষ্য করতে পারে আমাদের গ্রহটি তার নক্ষত্র থেকে সঠিক দূরত্বের কক্ষপথে রয়েছে যার জন্য পানি তার তরল সঠিক আকারকে ধররে রাখতে পারছে। যা আমরা মানুষদের উন্নত জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয়। যদি তারা মানুষের মতো হয়ে থাকে তবে তারা পৃথিবীতে আসতে চাইবে অনুসন্ধান করার জন্য।

যাইহোক, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এই সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান দিয়েছেন। আমরা আমাদের পথ বা পদচিহ্ন লেজার দিয়ে আবৃত করে রাখতে পারি।

ডেভিড কিপিং (একজন পপুলার সাইন্স ব্রিলিয়ান্ট 10 পুরষ্কার প্রাপ্ত) এবং তাঁর সহ-রচয়িতা হিসেব করে দেখেছেন যে, সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় পৃথিবীর যে ছায়া পরে তার পরিবর্তে আমরা লেজার আলোকরশ্মি তৈরী করতে পারি। যদি কোন সম্ভাব্য এলিয়েন খোঁজতে থাকে তবে তাদের চোখের মতো অঙ্গের মাঝে লেজারটি প্রতিফলিত হবে।

লেজারের আস্তরণটি একদম সহজ পদ্ধতিতে প্রতিবছর ১০ ঘন্টা পরপর ৩০ মেঘাওয়াট ক্ষমতায় রশ্মি ছুড়বে ঠিক ঐ সময়গুলোতে যখন আমরা একটি সম্ভাব্য এলিয়েন সভ্যতার সামনে দিয়ে পরিভ্রমণ করতে থাকবো। লেজারের উজ্জ্বলতা কম ক্ষতিকর হবে এবং আমেরিকার ৪০ টি বাড়িতে যে পরিমাণ বিদ্যুত ব্যবহার হয় তার থেকেউ কম শক্তি ব্যবহার হবে।

এর থেকেও ভালো আবরণ তৈরী করতে চাইলে আমরা লেজার রশ্মিতে সূর্য থেকে পাওয়া যায় তার সকল তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অনুরূপ ব্যবহার করতে পারি।যার জন্য ২৫০ মেঘাওয়াট সুরেলা লেজার এবং উল্লেখযোগ্যভাবে অধিক ক্ষমতার প্রয়োজন পরবে।

কিপিং এক বিবৃতিতে লিখেছেন, “এমনকি আপনি আরও অগ্রসর হতে পারেন এবং পৃথিবীর জৈবচিহ্নকে আবৃত করে এটিকে দেখতে একটি নিরস ও প্রাণহীন গ্রহের মতো তৈরী করতে পারেন (এরজন্য মাত্র কয়েকশ কিলোওয়াট শক্তির প্রয়োজন হবে)।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যদি আপনি ভীতু প্রকৃতির না হন তবে এই একই লেজার ব্যবহার করে আপনি এলিয়েনদের কাছে আপনার উপস্থিতি জানান দিতে পারেন। সেজন্য এর সাথে একটি কৃত্রিম সংকেত প্রেরণ করতে হবে।”

কিপিং বলেন, অন্যান্য সভ্যতা যদি আরও থেকে থাকে তবে তাদেও এরকমই চিন্তা থাকবে এবং তা আমাদেরকে তাদের খোঁজ করার মতো পথ দেখিয়ে দেবে।

-শফিকুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.