মহাসড়ক দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় বিশালাকায় পাখাগুলোকে ঘুরতে দেখে মুগ্ধ হওয়ার দিন ফুঁরিয়ে এলো বলে। কারণ Vortex Bladeless নামের স্পেনের একটি কম্পানী একধরনের বাতাস টারবাইন নিয়ে আসছে যাতে বাতাস ব্যবহার করেই বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে তবে তার জন্য কোনো পাখা ঘোরাতে হবে না।
এই নতুন টারবাইনগুলোকে ভোর্টেক্স (Vortex) নামে ডাকা হয় এগুলোকে বেলনাকারে নলের মতো করে তৈরি করে আকাশের দিকে উন্মুক্ত করে স্থাপন করা হয়। ভোর্টেক্সের লক্ষ ও উদ্দেশ্যের সাথে প্রচলিত বাতাস টারবাইনের কোনো পার্থক্য নেই, কিন্তু পার্থক্য রয়েছে কাজের মূলনীতিতে।
বৃতাকারগতির বদলে এগুলোর কর্মপন্থা হিসেবে বাতাসের ভোর্টেক্স বা ঘূর্নীর বৈশিষ্টকে কাজে লাগনো হয়। বায়ুপ্রবাহের সময় কোনো প্রতিবন্ধকে বাধা পেলে সেখানে একধরনের স্থানিক ঘুর্নী তৈরি হয়, একেই ভোর্টেক্স বলা হয় এবং এধরনের ঘটনাকে বলা হয় ভোর্টিসিটি (vorticity). ভর্টিসিটির কারণে স্থাপনার মধ্যে দোদুল্যমান অবস্থা তৈরি হয়, এই কারণে দীর্ঘদিন এধরনের ঘটনাকে স্থাপত্যকলার শত্রু হিসেবে দেখা হয়েছে। ভর্টিসিটির প্রভাব প্রশমনের জন্য স্থাপনায় অতিরিক্ত ব্যয় করে সুরক্ষা দিতে হয় এবং এর ফলে খরচ বেড়ে যায়। বিশেষ করে সেতু ইত্যাদি পাতলা স্থাপনায় ভোর্টেক্সের প্রভাব প্রশমনের জন্য আলাদাভাবে দৃঢ়তা প্রদান না করা হলে ভেঙ্গে যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে পৃথিবীতে।
তবে নকশাকারগণ যেখানে ভোর্টেক্সের বিপদ দেখেন সেখানে Vortex Bladeless এর উদ্যোক্তা ডেভিড সুরিওল, ডেভিড ইয়ানেজ এবং রাউল মার্টিন দেখছেন সম্ভাবনা। তাঁরা ভোর্টিসিটির ফলে স্থাপনার যে দোদুল্যমান অবস্থা তৈরি হয় তার শক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিকে রূপান্তর করার প্রয়াস চালিয়েছেন এবং সফলতার সাথে এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই প্রযুক্তির বাস্তবায়ন এবং প্রসারের জন্য তাঁরা এখন প্রচারনা চালাচ্ছেন।
বাতাস এদের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হলে উৎপন্ন ভর্টেক্সের কারনে খুঁটিগুলো দুলতে থাকবে যার ফলে টারবাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। এগুলো চাইলে সমুদ্রেও স্থাপন করা সম্ভব (চিত্র ২) এবং যেহেতু তীব্র ঘুর্নায়মান বা গতিশীল কোনো অংশ থাকে না ফলে এগুলো অনেক বেশী টেকসই হয় এবং তাই রক্ষণাবেক্ষণ খরচও কম হয়।