আপনি কি জানেন আপনার অশ্রু আনুবীক্ষণিক পর্যায়ে দেথতে কেমন হয়? ডাচ চিত্রশিল্পী মরিস মিক্কারস এর শত শত রূপ দেখেছেন। মাইক্রোস্কোপের নিচে এটা দেখতে অনেকটা তুষার কণার মতো স্বচ্ছ এবং অনন্যসাধারণ।
মিক্কারস আর্ট স্কুলে যাওয়ার পূর্বে একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান ছিলেন এবং এখন পর্যন্ত তিনি দুটি অশ্রু কণাকে একই অবস্থায় পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি গবেষণা করে দেখছেন তাপমাত্রা, আদ্রতা এমনকি কান্নার কারণে অশ্রু কণার আকার প্রভাবিত হয় কিনা। মরিস বলেন, “একটি কালো পটভূমিতে চোখের জলকে অণুবীক্ষণিক যন্ত্র দ্বারা আলোকিত করা হয় যার মাধ্যমে আপনি এর প্রকৃত ও অসাধারণ সুন্দর সব নমুনা ও আকৃতি দেখতে পান। আমি মনেকরি অশ্রু এখনো অনাবিষ্কৃত কিন্তু কেন সেটা আমাদের জানা প্রয়োজন।”
অশ্রুর সাধারণত তিন ধরনের হয়। মৌলিক(বা ভিত্তি)অশ্রু: যা আমাদের চোখকে মশৃণ রাখে। প্রতিবিম্ব অশ্রু যা জ্বালাতনের সময় সারা দেয় (চোখ বা পেয়াজের কনিকার মতো) এবং আবেগময় অশ্রু (আনন্দ অথবা বেদনার সময় মানসিক অবস্থার সাথে যুক্ত)।
মরিস দেখতে চাচ্ছেন কিভাবে একটি করুণ সিনেমা দেখার ফলে যে অশ্রু বের হচ্ছে তা পায়ের আঙ্গুলে চোট পাওয়ার ফলে যে অশ্রু বের হচ্ছে তার থেকে ভিন্ন হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা জেনেছি আবেগী অশ্রুতে স্ট্রেস হরমোনস প্রোলেকটিন (stress hormones prolactin), এড্রিনোকরটিকট্রোপিক হরমোন (adrenocorticotropic hormone) এবং পেইনকিলার লুসিনি এনকেফিলিন(painkiller leucine enkephalin) অতিরিক্ত এই তিন ধরণের উপাদান রয়েছে।
কাজটি শুরু হয় মাইক্রোপাপেটস এর মাঝে অশ্রু সংগ্রহের মাধ্য দিয়ে। এরপর অশ্রুগুলো টিউবের মাধ্যমে মাইক্রোস্কোপিক ফলকের উপর ১ থেকে ৪ মিলিমিটার আকারের ফোটা তৈরি করেন। পরিবেশের ভিন্নতা অনুসারে এই ফোটাগুলি ৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে স্ফটিকে পরিণত হয়।
এখনপর্যন্ত অশ্রু কিভাবে স্ফটিকে পরিণত হয় তা জানতে অল্প সংখ্যক গবেষণাই হয়েছে। তবে মরিস অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর এবং এ পদ্ধতি বার বার ব্যবহার করে তিনি কিছু অসাধারণ চিত্রকর্ম তৈরী করেছেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবচিকিৎসা বিজ্ঞানী নাওমি চায়েন মনেকরেন অশ্রু কি করে এত ভিন্ন দেখায় তা জানতে আরোকিছু বিশ্লেষণধর্মী কৌশল প্রয়োগ করার প্রয়োজন পরবে।
তিনি বলেন, “স্ফটিক কিছু উপাদানের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। যদি অশ্রুগুলো একই ব্যক্তির, একই দিনের এবং শুকিয়ে যাওয়া আবেগী অশ্রু পেয়াজের কারণে হওয়া অশ্রু থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে তবে বিষয়টি অবশ্যই অসাধারণ হবে।” এই পরীক্ষার কিছু ফলাফল চিত্রের মাধ্যমে নিচে প্রকাশ করা হল:
ফ্যানের বাতাসে তাকিয়ে থাকার ফলে সৃষ্ট অশ্রু:
আবেগের সারা দেয়া অশ্রু:
ঝাল মরিচ খাওয়ার ফলে সৃষ্ট অশ্রু:
পেয়াজের ঝাজে সৃষ্ট অশ্রু:
-শফিকুল ইসলাম